বাংলাদেশের সীমান্ত নিরাপত্তা কার্যকরভাবে রক্ষা, আন্তরাষ্ট্র সীমান্ত অপরাধ শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে ও জাতীয় রাজস্ব আয়ে ফাঁকি প্রতিরোধ করতে জাতীয় সংসদকে কয়েকটি পরামর্শ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
প্রায় ৩৭ বছর আগে যশোরে ১৫ পিস ভারতীয় শাড়ি উদ্ধারের এক মামলা নিষ্পত্তি করে বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের একক হাইকোর্ট বেঞ্চ ২০২৩ সালের ৩ আগস্ট দেওয়া রায়ে এ পরামর্শ দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) ওই রায়ের ১১ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশ করা হয়েছে।
আদালতে আসামি পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. নুরউস সাদিক চৌধুরী।
১৯৮৭ সালের ২ ডিসেম্বর যশোর শহরের ঝুমঝুমপুরে বিডিআর ক্যাম্পের কয়েকজন সদস্য চাচড়া রায়পাড়া গ্রামের মো. জাকির হোসাইন ওরফে জাকিরের বসতঘর থেকে তার উপস্থিতিতে ১৫টি ভারতীয় প্রিন্ট শাড়ি উদ্ধার করেন। যার কোনো বৈধ কাগজপত্র নেই। পরে আসামিকে কোতোয়ালি থানায় সোপর্দ করে বিশেষ ক্ষমতা আইনে এজাহার দায়ের করা হয়।
এ মামলার বিচার শেষে ১৯৮৮ সালের ১৩ এপ্রিল যশোর দায়রা জজ ও বিশেষ ট্রাইব্যুনাল জজ এম এ করিম আসামি জাকিরকে তিন বছরের কারাদণ্ড ও শাড়িগুলো বাজেয়াপ্ত করার আদেশ দেন। এর বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন জাকির।
ওই আপিলের শুনানি শেষে হাইকোর্ট আসামি মো. জাকির হোসাইন ওরফে জাকিরকে খালাস দেন।
রায়ে আদালত বলেন, বাংলাদেশের সীমান্ত নিরাপত্তা কার্যকরীভাবে রক্ষা, আন্তরাষ্ট্র সীমানা অপরাধ শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে হলে ও জাতীয় রাজস্ব ফাঁকি প্রতিরোধ করতে হলে মহান জাতীয় সংসদকে নিম্ন বর্ণিত পরামর্শসমূহকে গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করতে হবে।
পরামর্শগুলো হলো- সীমান্তরেখা থেকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ১০ কিলোমিটার পর্যন্ত সীমান্ত এলাকা বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সম্পত্তি ঘোষণা করা। ওই ঘোষণার ফলে ক্ষতিগ্রস্ত সব ব্যক্তিগত সম্পত্তির মালিকদের ক্ষতির পরিমাণ নির্ণয় করে সমমূল্যের সরকারি খাস সম্পত্তি থেকে তাদের বরাদ্দ করা।
সীমান্ত লাইন থেকে ৮ কিলোমিটার ভূমি সম্পূর্ণ ফাঁকা ও সমান থাকবে। যেন এ ৮ কিলোমিটারের প্রতিটি ইঞ্চি ৮ কিলোমিটার দূর থেকে পরিষ্কারভাবে দেখা যায়। সীমান্ত রেখা থেকে ৮-১০ কিলোমিটার মধ্যবর্তী স্থান বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের যাবতীয় স্থাপনা, প্রশিক্ষণসহ যাবতীয় কর্মকাণ্ডের জন্য সংরক্ষিত রাখা।
এ রায় ও আদেশের অনুলিপি জাতীয় সংসদের সব সংসদ সদস্য, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, বিজিবি মহাপরিচালক ও অধস্তন আদালতের সব বিচারককে ই-মেইলের মাধ্যমে পাঠানোর জন্য রেজিস্ট্রার জেনারেলকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
কাফি