দুদকের দায়ের করা মামলায় সম্পত্তি ক্রোকের আদেশ হওয়া চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের (সিএমপি) অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) মো. কামরুল হাসানকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করার সুপারিশ করা হয়েছে। সিএমপির পক্ষ থেকে পুলিশ সদর দপ্তরে এই সুপারিশ পাঠানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) আবদুল মান্নান মিয়া।
চট্টগ্রাম মেট্রো কোর্টের হাজতখানায় কর্মরত সময়ে আসামিদের মধ্যাহ্নভোজের বিল হিসাবে ১৩ লাখ ৩১ হাজার টাকা অপব্যবহার করার জন্য সিএমপির অভ্যন্তরীণ তদন্তে দোষী প্রমাণিত হওয়ার পরে তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করার এ সুপারিশ করা হয়।
এছাড়াও এডিসি কামরুল হাসানের পাশাপাশি তৎকালীন মেট্রোর হাজতখানার ইনচার্জ পরিদর্শক আতিকুর রহমানের বিরুদ্ধেও শাস্তিমূলক ব্যবস্থার সুপারিশ করা হয়েছে। এডিসি কামরুল হাসান এখন সিএমপির পিওএম বিভাগে সংযুক্ত।
এর আগে তিনি মেট্রো কোর্টে সিএমপির এডিসি (প্রসিকিউশন) ও এডিসি (ক্রাইম) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
এ বিষয়ে সিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মান্নান মিয়া বলেন, অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটি তদন্তের সময় এডিসি কামরুল ও অন্যদের দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। আমরা এডিসি কামরুলকে বরখাস্তের সুপারিশসহ ফলাফলগুলোকে পুলিশ সদর দপ্তরে পাঠিয়েছি।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, এডিসি মো. কামরুল হাসান মেট্রো কোর্টে সিএমপির এডিসি (প্রসিকিউশন) থাকাকালীন মেট্রো কোর্টের হাজতে আসামিদের খাবারের বিল হিসেবে ২০২১ সাল থেকে ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত সরকারি কোষাগার থেকে প্রায় ১৩ লাখ ৩১ হাজার টাকা উত্তোলন করা হয়।
এর আগে গত ৮ জুলাই দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ ড. বেগম জেবুন্নেছার আদালত এডিসি মোহাম্মদ কামরুল হাসান ও তার স্ত্রী সায়মা বেগমের নামে বিভিন্ন সম্পত্তির দলিল, ফ্ল্যাট ও কোম্পানির আংশিক শেয়ারসহ স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি ক্রোকের নির্দেশ দেন।
ক্রোক হওয়া সম্পত্তি হস্তান্তর করা যাবে না। জব্দকৃত ব্যাংক হিসাবে টাকা জমা দেওয়া গেলেও উত্তোলন করা যাবে না। সেই মর্মে সংশ্লিষ্ট সাব-রেজিস্ট্রার, এসি ল্যান্ড, বিএসইসি ও সংশ্লিষ্ট ব্যাংক সমূহের ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে দুদকের প্রাথমিক তদন্তে মোহাম্মদ কামরুল হাসান ৯ কোটি ৭৩ লাখ ২২ হাজার ৪৪ টাকা এবং তার স্ত্রী সায়মা বেগম ১ কোটি ৬২ লাখ ৮৫ হাজার ১৮৮ টাকা জ্ঞাত আয়ের উৎস বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের প্রমাণ পাওয়া গেছে। সিএমপির বিলিং বিভাগের অন্য দুই কর্মী সদস্যের বিরুদ্ধেও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
সিএমপির একটি অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, অর্থ আত্মসাতের সঙ্গে জড়িত এডিসি কামরুল। এছাড়াও চট্টগ্রাম ও ঢাকায় তার বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদের তদন্ত করছে দুদক।
এমআই