উজান থেকে নেমে আসা ঢল ও গত কয়েক দিনের ভারী বর্ষণে রাজবাড়ী জেলার সকল নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় জেলার ছয়টি পয়েন্টেই নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এর মধ্যে পদ্মা নদীর গোয়ালন্দ পয়েন্টে ২৪ ঘণ্টায় ১৪ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এ ছাড়া জেলার প্রত্যেকটি নদ-নদীতে প্রতিদিন গড়ে ১০ থেকে ১৫ সেন্টিমিটারের বেশি পানি বাড়ছে। এভাবে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে অচিরেই জেলার নিম্নাঞ্চলগুলোতে বন্যার আশঙ্কা রয়েছে। ইতোমধ্যেই পানি বৃদ্ধির কারণে জেলার গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া এলাকায় নদীভাঙন দেখা দিয়েছে।
শুক্রবার (১২ জুলাই) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে দৌলতদিয়ার পানি পরিমাপক (গেজ পাঠক) সালমা খাতুন জানান, উজান থেকে নেমে আসা ঢল ও গত কয়েক দিনের বৃষ্টিতে রাজবাড়ী জেলার সকল নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। গোয়ালন্দ পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
রাজবাড়ী পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় (১১ জুলাই সকাল ৬টা থেকে ১২ জুলাই সকাল ৬টা পর্যন্ত) ১৪ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়ে পদ্মা নদীর গোয়ালন্দ পয়েন্টে পানির লেভেল রয়েছে ৭ দশমিক ৯৩ সেন্টিমিটার, এই পয়েন্টে পানির বিপৎসীমা ৭ দশমিক ৯০ সেন্টিমিটার। গোয়ালন্দে পদ্মার পানি বিপৎসীমার ৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এ ছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় কুমার নদীর পানি ২৪ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে পানির লেভেল রয়েছে ৮ দশমিক ২৩ সেন্টিমিটারে, এই পয়েন্টে পানির বিপৎসীমা ৯ দশমিক ৬০ সেন্টিমিটার। একইসঙ্গে গত ২৪ ঘণ্টায় গড়াই নদীর পানি বেড়েছে ৩১ সেন্টিমিটার, এই নদীর কামারখালী ব্রিজ পয়েন্টে পানির বর্তমান লেভেল রয়েছে ৫ দশমিক ৮৫ সেন্টিমিটার। এই পয়েন্টে পানির বিপৎসীমা ৭ দশমিক ৭৫ সেন্টিমিটার।
অপরদিকে, গত ২৪ ঘণ্টায় হড়াই নদীর মহেন্দ্রপুর পয়েন্টে পানি বেড়েছে ২৪ সেন্টিমিটার। এই পয়েন্টে পানির লেভেল রয়েছে ৮.৩৮ সেন্টিমিটার। এই পয়েন্টে পানির বিপৎসীমা ৯.৭৫ সেন্টিমিটার।
পানি বৃদ্ধি পেয়েছে চন্দনা নদীতেও। গত ২৪ ঘণ্টায় গতমপুর এলাকায় চন্দনা নদীর সেনগ্রাম পয়েন্টে পানি বেড়েছে ২৭ সেন্টিমিটার। এই পয়েন্টে বর্তমানে পানির লেভেল ৮ দশমিক ৫২ সেন্টিমিটার। এই পয়েন্টের পানির বিপৎসীমা ১০ দশমিক ৫২ সেন্টিমিটার এবং গত ২৪ ঘণ্টায় চত্রা নদীর নাড়ুয়া পয়েন্টে পানি বেড়েছে ৩১ সেন্টিমিটার। এই পয়েন্টে পানির লেভেল রয়েছে ৫ দশমিক ৯৫ সেন্টিমিটার। এই পয়েন্টে পানির বিপৎসীমা ৭ দশমিক ৮৫ সেন্টিমিটার।
রাজবাড়ী জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা সৈয়দ আরিফুল হক জানান, বন্যার পূর্বপ্রস্তুতি হিসেবে জেলা প্রশাসকের সভাপতিত্বে সভা করেছেন এবং তাদের ব্যাপক প্রস্তুতিও রয়েছে। এখন পর্যন্ত জেলার কোথাও বন্যা ও নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার খবর পাননি। তারপরও প্রস্তুতি হিসেবে ১২টি ফ্লাড শেল্টার প্রস্তুতের পাশাপাশি ৬০০ মেট্রিক টন চাল ও নগদ ১২ লাখ টাকা মজুত রাখা হয়েছে।