দক্ষ বিদেশি কর্মীরা জার্মানিতে চাকুরি নিলে তাদের কর হ্রাসের পরিকল্পনা করছে দেশটির সরকার। সমালোচকরা অবশ্য এই পরিকল্পনা সমাজে বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি করতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন।
বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে কর সুবিধা, যারা অবসরের আগে লম্বা সময় কাজ করবেন তাদের বাড়তি সুবিধা দেওয়া এবং আমলাতান্ত্রিক জটিলতা কমানোর মতো বিভিন্ন উদ্যোগের মাধ্যমে ব্যবসার জন্য জার্মানিকে আরো আকর্ষণীয় করে তুলতে চাচ্ছে ইউরোপের দেশটির সরকার।
জার্মানিতে বিদেশি দক্ষ কর্মীদের আসতে উৎসাহ দিতেও পরিকল্পনা রয়েছে। দেশটির অর্থমন্ত্রী ক্রিশ্চিয়ান লিন্ডনার বলেন, ‘‘বিদেশি পেশাদারদের জন্য আমরা জার্মানিতে তাদের প্রথম তিন বছরের কর কমানোর ব্যবস্থা করছি। যোগ্য বিশেষজ্ঞ হিসেবে যারা আসবেন তাদের জন্য ৩০ শতাংশ, ২০ শতাংশ এবং ১০ শতাংশ হারে কর হ্রাসের সুযোগ থাকবে।’’
জার্মানিতে অনেকে অবশ্য এই পরিকল্পনাকে ইতিবাচকভাবে নিচ্ছেন না। বিরোধী রাজনীতিবিদ এবং ট্রেড ইউনিয়নবাদীরা এই পরিকল্পনাকে ‘অভ্যন্তরীণ কর্মীদের প্রতি নির্লজ্জ বৈষম্য’, ‘সবার প্রতি প্রকাশ্য শত্রুতার সামিল’, ‘অভ্যন্তরীণ শ্রমশক্তির প্রতি চরম উদাসীনতা’ বলে আখ্যা দিয়েছেন।
সরকারে থাকা দলগুলোর মধ্য থেকেও এই বিষয়ে সমালোচনা শোনা যাচ্ছে। জোট সরকারের অন্যতম শরিক সবুজ দল এই ইস্যুতে জার্মান সংবিধানে উল্লেখিত সমান অধিকার এবং শ্রম আইনের দিকে ইঙ্গিত করেছে।
দলটির আইনপ্রণেতা বেয়াটে ম্যুলার গেমেকে বলেন, ‘‘জার্মানিতে আমাদের সবাইকে সমান দেখার নীতি রয়েছে। এর অর্থ হচ্ছে কারো সঙ্গে মন্দ আচরণ করা উচিত নয়। আমার দৃষ্টিতে এটা এদেশের মানুষের প্রতি কিছুটা বৈষম্যমূলক হবে। যদি আমরা বলি যে যারা অন্যদেশ থেকে আসবেন তাদের বেতনের অন্তত কিছু অংশের কর মওকুফ করা হবে।’’
জার্মান ইকোনমিক ইন্সটিটিউটের সাম্প্রতিক গবেষণা অনুযায়ী, জার্মানিতে বর্তমানে পাঁচ লাখ ৭৩ হাজার দক্ষ কর্মীর ঘাটতি রয়েছে। অর্থনীতিবিদদের হিসেবে এই কর্মী ঘাটতি না থাকলে দেশিটর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি চলতি বছর আরো এক শতাংশ বেশি হতে পারতো। সংখ্যাটি বেশ বড় কারণ ধারণা করা হচ্ছে ২০২৪ সালে জার্মানির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হবে মাত্র শূন্য দশমিক ২ শতাংশ।