ক্যাটাগরি: অর্থনীতি

ব্যাংক থেকে সরকারের ঋণ ১ লাখ ৭৩৮ কোটি টাকা

দেশের ব্যাংকিং ব্যবস্থা থেকে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের শেষদিকে সরকারের ঋণ নেওয়ার পরিমাণ বেড়েছে। তাতে বিদায়ী অর্থবছর শেষে এ খাত থেকে সরকারের ঋণ দাঁড়িয়েছে লাখ কোটি টাকার বেশি। সমাপ্ত ২০২৩ অর্থবছরের প্রথম ১১ মাস অর্থাৎ মে পর্যন্ত ব্যাংক থেকে সরকারের নেওয়া ঋণের পরিমাণ ছিল ৬১ হাজার ৩২০ কোটি টাকা। তবে জুনের শেষদিন পর্যন্ত বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে ১ লাখ ৭৩৮ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে সরকার। অর্থাৎ অর্থবছরের শেষ মাসেই সরকার ঋণ নিয়েছে ৩৯ হাজার ৪১৮ কোটি টাকা।

এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সরকারের দেওয়া ঋণের পরিমাণ কমিয়ে দেওয়ায় ব্যাংকিং ব্যবস্থা থেকে ঋণের পরিমাণ আগের অর্থবছরের তুলনায় কমেছে। সদ্য সমাপ্ত অর্থবছরে সরকার দেশের ব্যাংক থেকে ১ লাখ ৭৩৮ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছেন। তবে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সরকারের ঋণ কমে যাওয়ায় গত অর্থবছর ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে সরকারের ঋণ দাঁড়িয়েছে ৯৪ হাজার ২৮২ কোটি টাকা। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সরকারের ব্যাংক ঋণের ওপর বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে মানুষের সঞ্চয় ক্ষমতা কমেছে। আবার রিজার্ভ থেকে ১২ দশমিক ৬৯ বিলিয়ন ডলার বিক্রির কারণে ১ লাখ ৪০ হাজার কোটি টাকা উঠে এসেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে। ফলে বেশির ভাগ ব্যাংক এখন তারল্য সংকটে রয়েছে। তবে ১০ শতাংশের মতো মূল্যস্ফীতির কারণে এখন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা ছাপিয়ে ঋণ নেওয়া বন্ধ রেখেছে সরকার।

এদিকে গত মে পর্যন্ত এক বছরে ব্যাংক খাতের আমানত বেড়েছে মাত্র ৮ দশমিক ৭৭ শতাংশ। আবার গত অর্থবছরে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক ব্যাংকগুলোর কাছে ১২ দশমিক ৬৯ বিলিয়ন ডলার বিক্রি করেছে। এর বিপরীতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে ১ লাখ ৪০ হাজার কোটি টাকা ঢুকেছে। এসবের প্রভাবে অনেক ব্যাংক তারল্য সংকটে রয়েছে। কয়েকটি ব্যাংক গত সোমবার কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ১৭ হাজার ২৭৫ কোটি টাকা ধার নিয়েছে। একই দিন আন্তঃব্যাংক কলমানিতে ধারের পরিমাণ ছিল ৪ হাজার ৬৭১ কোটি টাকা। সর্বোচ্চ ১২ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ সুদহার উঠেছে ১৪ দিন মেয়াদি ধারে। আর ট্রেজারি বিলে এখন ১১ দশমিক ৮০ এবং ট্রেজারি বন্ডে ১২ দশমিক ৩১ শতাংশ সুদে সরকার ঋণ নিচ্ছে।

প্রসঙ্গত, চলতি অর্থবছর ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে সরকার ১ লাখ ৩৭ হাজার ৫০০ কোটি টাকা ঋণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। গত অর্থবছরের মূল বাজেটে ১ লাখ ৩২ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রা ছিল। তবে সংশোধিত বাজেটে লক্ষ্যমাত্রা বাড়িয়ে করা হয় ১ লাখ ৫৫ হাজার ৯৩৫ কোটি টাকা। সঞ্চয়পত্র থেকে এবার ১৫ হাজার ৪০০ কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। গত অর্থবছর ১৮ হাজার কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রা ছিল। তবে সংশোধিত বাজেটে লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে ৭ হাজার ৩১০ কোটি টাকা করা হয়।

এমআই

শেয়ার করুন:-
শেয়ার