ভারত থেকে হীরা রপ্তানি চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে (এপ্রিল-জুন) কমেছে। ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা, নিম্নমুখী চাহিদা ও ল্যাবে তৈরি সস্তা হীরার (এলজিডি) বাজার বৃদ্ধি রপ্তানি কমার পেছনে ভুমিকা রেখেছে। সম্প্রতি ভারতের জেম অ্যান্ড জুয়েলারি এক্সপোর্ট প্রমোশন কাউন্সিল অব ইন্ডিয়া এ তথ্য জানিয়েছে।
সংস্থাটির দেয়া তথ্যানুযায়ী, চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে ভারত থেকে কাটা ও মসৃণ হীরা রপ্তানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৫ শতাংশ কমেছে। এ সময় দেশটি মোট ১ হাজার ৪৭ কোটি ডলার মূল্যের কাটা ও মসৃণ হীরা রপ্তানি করেছে।
এর আগে মে মাসে ভারত থেকে ল্যাবে তৈরি মসৃণ হীরা রপ্তানিও ১৪ শতাংশ কমে গিয়েছিল। এ সময় দেশটি মোট ১২ হাজার কোটি ডলার মূল্যের হীরা রপ্তানি করে।
এ বিষয়ে কেদিয়া কমোডিটির ডিরেক্টর অজয় কেদিয়া বলেন, গত বছরের তুলনায় চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে ভারতের কাটা ও মসৃণ হীরা রপ্তানি প্রায় ১৫ শতাংশ কমেছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে রপ্তানি আগের বছরের তুলনায় ২৭ শতাংশ কমেছিল।
হীরা কাটা ও মসৃণ করার দিক থেকে বিশ্বের সবচেয়ে বড় কেন্দ্র ভারত। বৈশ্বিক মসৃণ হীরা ব্যবহারের ৯০-৯৫ শতাংশই আসে দেশটি থেকে। এরপর চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান। ভারত কাটা ও মসৃণ হীরা রপ্তানির প্রায় এক-তৃতীয়াংশ চীনে রপ্তানি করে। দেশটিতে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের ধীরগতি ও ভোক্তাদের পছন্দের পরিবর্তনের কারণে চাহিদা কমেছে, যা ভারত থেকে হীরা রপ্তানি কমার পেছনে ভূমিকা রাখবে।
চলতি অর্থবছরে ভারতের কাটা ও মসৃণ হীরা বিক্রি পাঁচ বছরের সর্বনিম্নে নামার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। আগের বছরের চেয়ে বিক্রি ২৫-৩০ শতাংশ কমে যেতে পারে। এ থেকে দেশটির আয় হতে পারে ১ হাজার ৬০০ কোটি ডলার।
অন্যদিকে ল্যাব বা গবেষণাগারে তৈরি হীরার দ্বিতীয় বৃহত্তম উৎপাদক ভারত। সম্প্রতি এ খাতও চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। দেশটি বছরে ৩০ লাখেরও বেশি ল্যাব হীরা উৎপাদন করে, যা বৈশ্বিক উৎপাদনের ১৫ শতাংশ। এ খাতে প্রথম অবস্থানে রয়েছে চীন। ২০২২ সালে ভারতে তৈরি কৃত্রিম হীরার বাজারমূল্য ছিল ২৬ কোটি ৪৫ লাখ ডলার। ধারণা করা হচ্ছে, গত বছর তা ৩০ কোটি ডলারে পৌঁছেছে।
কেয়ারএজ অ্যাডভাইজরির ডিরেক্টর তানভি শাহ বলেন, চীন, যুক্তরাষ্ট্র ও সিঙ্গাপুরের মতো উন্নত দেশগুলো ল্যাবে তৈরি হীরা উৎপাদনে প্রচুর বিনিয়োগ করছে, ফলে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রতিযোগিতা বাড়ছে।