বিভিন্ন অজুহাতে আবারও টালমাটাল রাজধানীর কাঁচাবাজার। অধিকাংশ সবজির দাম পৌঁছেছে কেজি ১০০ টাকার ঘরে। ৫০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে কেবল পটল, মিষ্টিকুমড়া আর পেঁপে। অন্যদিকে কোনোমতেই ঝাল কমছে না কাঁচা মরিচের। এক কেজি কাঁচা মরিচ কিনতে খুচরা বাজারে গুনতে হচ্ছে সর্বনিম্ন ২৮০ টাকা। এমন অবস্থায় বেশ বিপাকেই পড়েছেন ক্রেতারা। নিত্য প্রয়োজনীয় শাকসবজির এমন অস্বাভাবিক দামে নাকানিচুবানি খেতে হচ্ছে তাদের।
আজ শনিবার (৬ জুলাই) রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকার বনলতা কাঁচাবাজারের ভেতর ও বাইরের দোকান এবং ধানমন্ডি এলাকার বেশ কয়েকটি ভাসমান সবজির দোকান ঘুরে এমন চিত্রই চোখে পড়ে।
সরেজমিনে দেখা যায়, বাজার ও মানভেদে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচের দাম ২৮০ থেকে ৩২০ টাকা চাওয়া হচ্ছে। অথচ এই কাঁচা মরিচ গত সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছিলো ২০০ টাকা কেজি দরে। আর অন্যান্য সবজির দামও বেড়েছে সর্বনিম্ন ২০ টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ৩০ টাকা পর্যন্ত।
সবজির মধ্যে ৫০ টাকা কেজি দরে মিলছে কেবল মিষ্টি কুমড়া, পটল আর পেঁপে। এছাড়া বেগুন ৮০-১২০ টাকা, করলা ১০০ টাকা, শসা ১০০ টাকা, বরবটি ১১০-১২০ টাকা, কচুর মুখি ১০০ টাকা, কাঁকরোল ১০০ টাকা, টমেটো ২০০ টাকা, করলা ১২০ টাকা, কচুর লতি ৮০-৯০ টাকা, গাজর ৮০-৯০ টাকা, ঢেঁরস ৬০ টাকা, ঝিঙা ৬০-৭০ টাকা, আলু ৬০ টাকা এবং ধুন্দল ৬০ টাকা কেজি দামে বিক্রি হচ্ছে। আর প্রতি পিস লাউ, বাঁধাকপি ও ফুলকপি আকারভেদে ৬০ থেকে ৮০ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে। শাকসবজির দামও চড়া। লালশাক, পালংশাকসহ যেসব আঁটি আগের সপ্তাহগুলোতে ২৫ থেকে ৩০ টাকায় বিক্রি হতো সেগুলো এখন ৩৫ থেকে ৪৫ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।
শান্তি নেই মশলার বাজারেও। পেঁয়াজ, রসুন, আদাও বিক্রি হচ্ছে চড়া দামেই। খুচরা বাজারে পেঁয়াজ ১১০-১২০ টাকা, রসুন ২১০-২২০ টাকা, শুকনা মরিচ ৪০০-৫০০ টাকা, হলুদ ৩৫০-৪০০ টাকা, আদা ৩০০-৫০০ টাকা, জিরা ৮৫০ টাকা এবং দারচিনি ৬০০ টাকা কেজি দামে বিক্রি হচ্ছে।
ঢাকা মহানগরীর নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের খুচরা বাজার দর পর্যালোচনায় খোদ সরকারি সংস্থা ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) বলছে, ১ সপ্তাহ আগেও পেঁয়াজ ৯০-১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছিলো। ১ মাস আগে এর দাম ছিল ৮৫ টাকা। আর ১ বছর আগে এর দাম ছিল ৮০ টাকা। বাৎসরিক হিসেবে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ৩৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ। আর রসুনের দাম বেড়েছে ৩৯ দশমিক ২৯ শতাংশ।
কাঁচাবাজারের এমন বাড়ন্ত দামের ব্যাপারে ব্যবসায়ীরা বলছেন, ঢাকায় সব সবজিই বাইরে থেকে আসে। উত্তরাঞ্চলের কয়েকটি জায়গায় বন্যা এবং গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টির কারণে বাজারে সবজির পরিমাণ কম। যার কারণে বাড়তি দাম দিয়েই পাইকারি অর্থাৎ আড়ত থেকে সবজি কিনতে হচ্ছে। সেই প্রভাবই পড়েছে খুচরা বাজারে।
অন্যদিকে ক্রেতারা বলছেন, কাঁচাবাজারের এমন বাড়তি দামের কারণে চাহিদার তুলনায় কম বাজার করছেন তারা।
শামীম আহমেদ নামের আরেক ক্রেতা বলেন, বাজার মনিটরিং ও নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত কার্যক্রম হয় কি না তা জানি না। সরকারের উদ্যোগে এটি প্রয়োজন। না হলে জীবনযাপন করা আমাদের জন্য কষ্টকর হয়ে যাচ্ছে। এই কয়েকদিনের বৃষ্টি আর বন্যার অজুহাতে সব কিছুর দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। আমরা কোথায় যাই। কাঁচাবাজারে সবাই নিত্যপ্রয়োজনীয় সবজি কিনে। এখন দাম বেড়ে যাওয়ায় সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা কঠিন হয়ে পড়েছে।
কাফি