লেবার পার্টির বিশাল এ জয়ে পূর্ব লন্ডনে পপলার এন্ড লাইম হাউজ আসন থেকে অবদান রেখেছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ এমপি আপসানা বেগম। নির্বাচনে ১৮৫৩৫ ভোট পেয়ে দ্বিতীয়বারের মতো জয়লাভ করেছেন তিনি। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী গ্রীন পার্টির নাটালি পেয়েছেন ৫৯৭৫ ভোট। আপসানার সাবেক স্বামী অপর ব্রিটিশ-বাংলাদেশি প্রার্থী এহতেশামুল হক পেয়েছেন ৪৫৫৪ ভোট।
আপসানা-এহতেশামের বিয়ে ও বিয়ে–পরবর্তী নানা ঘটনা আদালত পর্যন্ত গড়ায়। ডিভোর্সের নয় বছর পর সাবেক স্ত্রী ও বর্তমান সংসদ সদস্যের বিপরীতে লন্ডনের বাংলাদেশি অধ্যুষিত আসন পপলার অ্যান্ড লাইম হাউস থেকে এহতেশামের প্রার্থিতার বিষয়টি কমিউনিটিতে আলোচনা তৈরি করেছিল। এহতেশামুল হক টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের সাবেক কাউন্সিলর ছিলেন।
জানা গেছে, ২০১৩ সালে টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের সাবেক কাউন্সিলর মনির উদ্দীন আহমেদের মেয়ে আপসানা বেগম ও সাবেক কাউন্সিলর এহতেশামুল হকের বিয়ে হয়। দুজনের গ্রামের বাড়ি সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলায়। তাঁদের বিচ্ছেদ হয় ২০১৫ সালে। এরপর ২০১৯ সালে আপসানা প্রথমবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হোন। সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি পারিবারিক সহিংসতা নির্যাতনবিষয়ক ব্রিটিশ সংসদের সর্বদলীয় সংসদীয় কমিটির চেয়ার হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।
ওয়েস্ট মিনিস্টার পার্লামেন্টে বক্তৃতা দিতে গিয়ে আপসানা রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে আহ্বান জানান, যাতে পারিবারিক নির্যাতন থেকে বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিদের আর হয়রানির শিকার না হতে হয়। তিনি এমন এক ব্যক্তির সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ ছিলেন, যেখানকার পরিবেশ অস্থির ও অপমানজনক ছিল বলে তাঁর সহকর্মী সংসদ সদস্যদের জানান।
টানা ৬ মাসের প্রচার-প্রচারণা শেষে যুক্তরাজ্যে নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হয়ে গেল বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই)। ইতোমধ্যে প্রকাশ্যে এসে গেছে নির্বাচনের ফলও। নির্বাচনে ৩৩৩টি আসন নিয়ে নিরঙ্কুশ জয় পেয়েছে কিয়ার স্টারমারের লেবার পার্টি। দীর্ঘ ১৪ বছর পর ক্ষমতা হারালো কনজারভেটিভরা।
বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) সকাল ৭টা থেকে ব্যালটের মাধ্যমে একযোগে ভোট গ্রহণ শুরু হয় ইংল্যান্ড, স্কটল্যান্ড, ওয়েলস এবং উত্তর আয়ারল্যান্ডের ৪০ হাজার কেন্দ্রে। চলে রাত ১০টা পর্যন্ত। এবারের নির্বাচনে ছোট-বড় মিলিয়ে অন্তত ৯৮টি রাজনৈতিক দল অংশ নেয়। এর মধ্যে ৩৫টি রাজনৈতিক দল মাত্র একজন করে প্রার্থী দেয়।
যুক্তরাজ্যের এবারের নির্বাচনে রেকর্ড ৪ হাজার ৫১৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। একেকটি আসনে গড়ে প্রার্থী ছিলেন ৭ জন করে। ৩১৭টি আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়েন ৪৫৯ জন।
যুক্তরাজ্যে এবারের সাধারণ নির্বাচনে বিভিন্ন দলের মনোনয়নে প্রার্থী হন বেশ কয়েকজন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক। এর বাইরে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন কেউ কেউ। সব মিলিয়ে অন্তত ৩৪ জন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন এবারের নির্বাচনে।
এমআই