ভারতের বরাক নদী দিয়ে নেমে আসা উজানি ঢলে ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়েছে সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলা। উজানি ঢলের ব্যাপক স্রোতে নদীর বাঁধ ভেঙে পানি লোকালয়ে প্রবেশ করায় ভোগান্তিতে পড়েছেন বেশ কয়েকটি এলাকার বাসিন্দারা।
বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) সকাল থেকে উপজেলার ছবড়িয়া, রারাই, বাখরশাল, পৌর এলাকার নরসিংহপুরসহ কয়েকটি এলাকায় বাঁধ ভেঙে ও বাঁধ উপচে নদীর পানি লোকালয়ে ঢুকে লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী আজ বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টা পর্যন্ত কুশিয়ারা নদীর পানি বিপৎসীমার ১৫৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পানি উন্নয়ন বোর্ড সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাস বলেন, পাহাড়ি ঢল আর অতিবৃষ্টিতে আমাদের নদ-নদীর পানি বেশ কয়েক জায়গায় বিপৎসীমার ওপরে রয়েছে। এতে করে সিলেটের প্রায় ২৫ কিলোমিটার বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং বেশকিছু জায়গায় বাঁধ ভেঙে বা উপচে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করেছে। পানি না কমা পর্যন্ত এসকল বাঁধ মেরামত সম্ভব নয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কুশিয়ারা নদীর বাঁধ ভেঙে জকিগঞ্জ পৌর এলাকার একটি অংশসহ উপজেলার অন্তত পাচঁটি ইউনিয়নে বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে। বন্যাকবলিত এলাকার স্কুল, কলেজ, মাদরাসা, মসজিদ-মন্দিররসহ বেশকিছু জায়গার সড়ক পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে করে স্থানীয়রা বিশুদ্ধ পানি, স্যানিটেশন, পানিবাহিত রোগবালাই ও গবাদিপশু নিয়ে সংকটকালীন মুহূর্ত পার করছেন।
জকিগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা জুনেদ আহমদ চৌধুরী জানান, প্রবল পানির স্রোতে জকিগঞ্জের কিছু এলাকায় বাঁধ ভেঙে পানি লোকালয়ে প্রবেশ করেছে। মানুষজন প্রাণ বাঁচাতে আশ্রয়কেন্দ্রের দিকে ছুটছেন। অনতিবিলম্বে এই অঞ্চলকে বন্যাদুর্গত অঞ্চল হিসেবে ঘোষণা দিয়ে বিপদগ্রস্তদের পর্যাপ্ত পরিমাণে ত্রাণসামগ্রী বরাদ্দ দেওয়া হোক।
জকিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আফসানা তাসলিম বলেন, এখন পর্যন্ত উপজেলার এক লাখের ওপর মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় আছেন। ৫৮টি আশ্রয়কেন্দ্রে বন্যাকবলিত মানুষজন আশ্রয় নিয়েছেন। পানিবন্দি মানুষের জন্য শুকনো খাবার ও চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এগুলা প্রয়োজনভেদে আমরা বিতরণ করছি।