সরকারি চাকরি, স্বায়ত্তশাসিত বা আধা-স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন করপোরেশনে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের ৩০ শতাংশ কোটা বাতিল করে মেধা ভিত্তিক নিয়োগের দাবিতে সারা দেশের শিক্ষার্থীদের ন্যায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থীরা বৃহৎ আওয়াজ তুলেন। এসময় তারা এমন অবান্তর বৈষম্য প্রথার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ ও সমাবেশ করেন।
বৃহস্পতিবার (০৪ জুলাই) সকাল সাড়ে ১১টায় দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক সংলগ্ন কুষ্টিয়া-খুলনা মহাসড়ক অবরুদ্ধ করে কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন করেন প্রায় সহস্রধিক শিক্ষার্থী। প্রায় ৪০ মিনিটের মতো মহাসড়কের দুপাশে যান চলাচল বন্ধ থাকায় খানিকটা যানজটের দেখা যায়।
এর-আগে আন্দোলন শুরুতে পূর্বনির্ধারিত স্থান ক্যাম্পাসের শহীদ মিনারে বেলা ১১টা নাগাদ শিক্ষার্থীরা জড়ো হতে থাকে। সেখানে প্রায় আধা ঘন্টা আন্দোলনে কোটা বৈষম্যের বিরুদ্ধে নানা ধরনের স্লোগানের মাধ্যমে তীব্র প্রতিবাদ জানায়। এসময় মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযোদ্ধা ও বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে যেন কোনরূপ কটুক্তি মূলক বক্তব্য না আসে এই আন্দোলন থেকে সে বিষয়ে হুশিয়ার দেন ‘মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তান ও প্রজন্ম’ এর সভাপতি মেজবাহুল ইসলাম ও সহ-সভাপতি মাসুদ রানা।
আন্দোলনে শিক্ষার্থীরা ‘আঠারোর হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার। জেগেছে রে জেগেছে, ছাত্রসমাজ জেগেছে। লেগেছে রে লেগেছে, রক্তে আগুন লেগেছে। আপস না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম। মুক্তিযুদ্ধের বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই- ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন’।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মাসুম বলেন, বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার ক্ষেত্রে মুক্তিযুদ্ধাদের অবদান আমরা কখনো অস্বীকার করছি না। তবে কোটার ব্যবহারের ফলে একটা গোষ্ঠী শিক্ষা চাকরি এবং সকল ক্ষেত্রে এগিয়ে যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, এর ফলে আমরা যে সাধারণ শিক্ষার্থী আছি তারা পিছিয়ে যাচ্ছি। এটা এক প্রকার বৈষম্য। যা আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছি না। আমাদের কোটার একটি সুষ্ঠু বণ্টন থাকা উচিত। আমাদের দাবি হলো ২০১৮ সালের পরিপত্র যেনো পুনর্বহাল রাখা হয়।
কোটা বৈষম্যের বিরুদ্ধে আন্দোলনে ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এবং ছাত্র ইউনিয়ন ইবি শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক সুইট বলেন, আমরা লড়াই করছি বৈষম্যের বিরুদ্ধে। এই সংগ্রাম একদিনের নয়। এই সংগ্রাম ১৯৫২ সাল থেকেই আমরা এই বৈষম্যের বিরুদ্ধে চলমান রয়েছে। আমার মনে হয় না মুক্তিযোদ্ধারা এই কোটা বৈষম্য টিকিয়ে রাখার জন্য সংগ্রাম করেছেন। তাঁরা দেশে সাম্য প্রতিষ্ঠার জন্যই মুক্তিযুদ্ধ করেছেন। আমরা কোটা বাতিলের পক্ষে না আমরা কোটা সংস্কারের পক্ষে। মেধার বন্টন যেনো সুষ্ঠ হয় সেজন্য আমাদের এই লড়াই সংগ্রাম।
এমআই