বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগকারীদের জন্য কর অব্যাহতি সুবিধা বহাল থাকছে। প্রস্তাবিত বাজেটে কর অব্যাহতি সুবিধা বাতিলের প্রস্তাব করা হলেও মঙ্গলবার সে সিদ্ধান্ত বাতিল করা হয়।
আগামী বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) বাজেট পাস হতে যাচ্ছে। এর আগে মঙ্গলবার (২৫ জুন) ভেটিংয়ে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয় বলে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সূত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে। ইজেডগুলোয় স্থানীয় ও বিদেশী বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে এমনটি করা হয়েছে বলে জানান এনবিআর কর্মকর্তারা।
এ সুবিধা নিতে হলে টিআইএন গ্রহণ, যথাযথভাবে হিসাব সংরক্ষণ ও আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে হবে।
এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, প্রস্তাবিত বাজেটে কালো টাকা সাদা করার যে সুযোগ প্রস্তাব করা হয়েছে সে সিদ্ধান্তও বহাল থাকছে। এ প্রস্তাব বাতিলের প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রী নাকচ করে দিয়েছেন।
২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে কর অব্যাহতি সুবিধা প্রত্যাহার করে নেয়ার ঘোষণা দিলে ইজেডের বিনিয়োগকারীরা ব্যাপকভাবে হতাশা ও ক্ষোভ ব্যক্ত করেন; সে পরিপ্রেক্ষিতে এ সিদ্ধান্তটি পুনর্বিবেচনা করা হয়। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এনবিআর চেয়ারম্যানের সাক্ষাতের পর এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হয় বলে এনবিআর নিশ্চিত করেছে।
বর্তমানে কার্যক্রম শুরুর প্রথম বছর থেকে শুরু করে এক দশক ধরে ২০ থেকে ১০০ শতাংশ পর্যন্ত কর অব্যাহতির সুবিধা পাচ্ছেন অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোর (ইজেড) বিনিয়োগকারীরা। এর মধ্যে প্রথম তিন বছর তারা সম্পূর্ণ কর মওকুফ পান, এর পর চতুর্থ বছরে ৮০ শতাংশ, পঞ্চম বছরে ৭০ শতাংশ ও ষষ্ঠ বছরে ৬০ শতাংশ হারে এ সুবিধা পান। কর মওকুফের এই হার প্রতি বছর ১০ শতাংশ হারে কমে দশম বছরে ২০ শতাংশে নেমে আসে। প্রস্তাবিত বাজেটে সরকারি উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত ইজেডগুলোর জন্য এসব সুবিধা অব্যাহত রাখা হলেও, বেসরকারি ইজেডের জন্য বাতিল করার কথা বলা হয়েছিল।
প্রস্তাবিত বাজেটে কাস্টমস আইন, ২০২৪-এর স্ট্যাচুয়ারি রেগুলেটরি অর্ডার (এসআরও) নম্বর ১৮৪ অনুযায়ী, মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানির ওপরও কর ধার্য করা হয়েছে। অর্থাৎ অর্থনৈতিক অঞ্চলে স্থাপিত শিল্প ইউনিটের মূলধনি যন্ত্রপাতি, যন্ত্রাংশ ও নির্মাণ উপকরণ আমদানিতে দিতে হবে ১ শতাংশ শুল্ক; যা এতদিন অর্থনৈতিক অঞ্চলের বাইরের শিল্পপ্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য ছিল। সরকারের এ সিদ্ধান্তেও বিনিয়োগকারীরা নতুন বিনিয়োগে আগ্রহী হবেন না এবং পুরনো বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত হবে বলে মনে করছেন বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চলের মালিকরা।
এই প্রসঙ্গে এনবিআর সূত্র বলছে, এ সিদ্ধান্তও বাতিল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। তবে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। এসআরও এর বিষয়ে বাজেটের পরও সিদ্ধান্ত নেয়ার সুযোগ আছে।