পবিত্র হজের আনুষ্ঠানিকতা শেষ দেশে ফিরছেন হাজিরা। ২০ জুন থেকে শুরু হয়েছে ফিরতি হজ ফ্লাইট। মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত ৩৮টি ফ্লাইটে দেশে ফিরেছেন ১৪ হাজার ৮১৬ জন। এদিকে হজ পালন করতে গিয়ে সৌদি আরবের ৪৮ জন বাংলাদেশির মৃত্যু হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৫ জুন) হজ সম্পর্কিত সবশেষ বুলেটিনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বাংলাদেশ হজ অফিস ঢাকা এবং সৌদি আরব সূত্রে এ তথ্য জানিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের হজ হেল্প ডেস্ক।
হেল্প ডেস্কের তথ্যমতে, মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত ৩৮টি ফ্লাইটে দেশে ফিরেছেন ১৪ হাজার ৮১৬ জন হাজি। এরমধ্যে বাংলাদেশ বিমানের ১০টি, সৌদিয়া এয়ারলাইন্স ১৩টি ফ্লাইনাস এয়ারলাইন্সের ১৫ টি ফ্লাইট। হাজিদের নিয়ে শেষ ফ্লাইটটি দেশে আসবে ২২ জুলাই।
চলতি বছর প্রখর তাপপ্রবাহ ও অসহনীয় গরমের জেরে হজ করতে গিয়ে সৌদি আরবের মৃত্যু এক হাজার ৩০০ ছাড়িয়েছে। সৌদিতে তীব্র দাবদাহের কারণে ওই হজযাত্রীরা মারা গেছেন বলে জানিয়েছে সৌদি কর্তৃপক্ষ। এদিকে হজ পালন করতে গিয়ে এখন পর্যন্ত ৪৭ বংলাদেশির মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরুর আগে ১৭ জন, বাকি ৩০ জন হজের আনুষ্ঠানিকতার শুরুর পর।
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের হজ সম্পর্কিত বুলেটিং ৪৭ জন হাজি মারা যাওয়ার খবর বলা হয়েছে। মারা যাওয়া হজযাত্রীদের মধ্যে ৩৬ জন পুরুষ ও ১১ জন নারী। মক্কায় ৩৬ জন, মদিনায় ৪ এবং মিনায় ৬ জন এবং জেদ্দায় একজন মারা গেছেন।
হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরু পর যারা মারা গেছেন তারা হলেন, ঢাকার মাকসুদা খানম (৬৮), খুলনার মনোয়ারা বেগম (৫৯), মেহেরপুরের নুরুজ্জামান বিশ্বাস (৬৭), সাতক্ষীরায় আব্দুল গাফফার (৬৩), ফরিদপুর আতাউল হক (৬৯), নোয়াখালী রফিকুল হক (৫৬), খুলনার এম এম এ বকর (৬২), দিনাজপুরে নুর বানু (৬২), ঢাকার সৈয়দ ওয়াহিদুল রহমান (৭১), ফেনীর হালিমা খাতুন (৬২), ঢাকার ডেমরার সৈয়দ তামজিদ আলী (৬৭), খুলনার কামরুল ইসলাম (৭০)।
বরিশালের হিজলার আবু বকর সিদ্দিক (৫৯), ঝালকাঠির নূর মোহাম্মদ তালুকদার (৬৮), যশোরের অভয়নগরে শহিদুল ইসলাম (৪৯), ঝিনাইদহে কোটচাঁদপুর সুফিয়া বেগম (৮৭), চট্টগ্রামে রাউজানের আ স ম নুরুউদ্দিন চৌধুরী (৭২), ঢাকার মোহাম্মদপুরের জহিরুল ইসলাম (৭৩), মাদারীপুর শিবচরে ইদ্রিস খান (৫৬), ঢাকার বাড্ডার উম্মে কুলসুম (৪৭), ঢাকার বংশালের মনির হোসেন (৫৯), কিশোরগঞ্জের ফাতেমা ইয়াসমিন (৫৩), পিরোজপুরের নার্গিস (৬০), ঢাকা নিউ মার্কেটের আমিনুল ইসলাম ((৬৫), নোয়াখালীর মোয়াজ্জেম হোসেন (৬৮), রংপুরের সিদ্দিকুর রহমান (৪৮), ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে মানিক তোফাজ্জল হক (৭০), ঢাকা মোহাম্মদপুরের রওশন আরা বেগম (৭২), বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার রেজাউল করিম মন্ডল (৬১), টাঙ্গাইল সদরের আলমগীর হোসেন খান (৭৩)।
হজ ডেস্কের তথ্যমতে, হজের আনুষ্ঠানিকাতা শুরুর আগে সর্বশেষ গত ১২ জুন বুধবার সৌদিতে দুইজন মারা যান। মারা যাওয়া দুইজন হলেন- মো. শাহ আলম (৭৭) ও সুফিয়া খাতুন (৬২)। তাদের বাড়ি যথাক্রমে কুমিল্লা ও কিশোরগঞ্জ। চলতি হজ মৌসুমে সৌদি আরবে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে গত ১৫ মে মো. আসাদুজ্জামান নামে এক হজযাত্রী মারা যান।
মারা যাওয়া অন্য হজযাত্রীরা হলেন- নেত্রকোণা জেলার কেন্দুয়া উপজেলার মো আসাদুজ্জামান (৫৭), মো. ভোলা জেলা মো. মোস্তফা (৯০), কুড়িগ্রাম জেলার লুৎফর রহমান (৬৫), ঢাকা জেলার নবাবগঞ্জের মুরতাজুর রহমান (৬৩), চট্টগ্রাম জেলার রাউজান উপজেলার মোহাম্মদ ইদ্রিস (৬৪), ঢাকা জেলার মোহাম্মদ শাহজাহান (৪৮), কুমিল্লা জেলার আলী ইমাম ভুঁইয়া (৬৫), কক্সবাজার জেলা মহেশখালী উপজেলার মো. জামাল উদ্দিন (৬৯), কক্সবাজার জেলা রামু উপজেলার মোহাম্মদ নুরুল আলম (৬১), কক্সবাজার জেলা চকরিয়া উপজেলার মাকসুদ আহমদ (৬১), ফরিদপুর জেলার মমতাজ বেগম (৬৩), ঢাকার রামপুরার বাসিন্দা আরিফুল ইসলাম (৫৭), গাইবান্ধা জেলা গোবিন্দপুর উপজেলার মো. সোলাইমান (৭৩), রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার শাহজাদ আলী (৫৫) এবং রংপুরে তারাগঞ্জের গোলাম কুদ্দুস (৫৪)।
সৌদি আরবের আইন অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি হজ করতে গিয়ে যদি মারা যান, তাহলে তার মরদেহ সৌদি আরবে দাফন করা হয়। নিজ দেশে আনতে দেওয়া হয় না। এমনকি পরিবার-পরিজনের কোনো আপত্তি গ্রাহ্য করা হয় না। মক্কায় হজ যাত্রী মারা গেলে মসজিদুল হারামে জানাজা হয়।