ক্যাটাগরি: সারাদেশ

মতিউরের গ্রামের বাড়ি সর্ম্পকে যা জানা গেল

ছাগলকাণ্ডে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাবেক কর্মকর্তা মো. মতিউর রহমানের বাড়ি বরিশালের মুলাদী উপজেলার বাহাদুরপুর গ্রামে। গ্রামে সবাই তোকে পিন্টু নামে চিনে। একটা সরু খালের পাড়ে মতিউরের বসত বাড়ি। বাড়ির সামনে খালের ওপরে পাকা সেতু। বাড়িতে ঢুকতে একপাশে তিনতলা হাফেজি মাদ্রাসা, আরেক পাশে দোতলা মসজিদ। মাঝখানে তোরণ। তোরণ পার হয়ে ভেতরে দোতলা বাড়ি। তবে বাড়ির কলাপসিবল গেটে ঝুলছে তালা। অর্থাৎ বাড়িতে আপাতত কেউ নেই।

মতিউরের ব্যাপারে জানতে চাইলে এলাকার মানুষ বলেন, মতিউরের বাবা ও পরিবার খুব একটা সচ্ছল ছিল না। যে জমিজমা ছিল তা দিয়ে খেয়ে-পরে মোটামুটি ছিল। তবে বিপরীত মন্তব্য করেছেন তার চাচাতো ভাই ফকরুদ্দিন ও মাহমুদুন্নবী।

মাহমুদুন্নবী বলেন, মানুষ মানুষের ভালো সহ্য করতে পারে না। ঈর্ষান্বিত হয়ে শত্রুতা করে। সে জন্যই আজ মতিউর রহমানের মতো একজন ভালো মানুষকে নিয়ে এত টানাহেঁচড়া চলছে।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, মতিউরের বাড়ির সামনে যে সরু খালটি আছে, সেটার দৈর্ঘ্য প্রায় চার কিলোমিটার। এই খালের দুই পাড় সিমেন্টের ব্লক দিয়ে বাঁধাই করা। দুই পারের বাসিন্দারা যাতে এই খালের পানি দৈনন্দিন গৃহস্থালির কাজে ব্যবহার করতে পারে, সে জন্য প্রতিটি বাড়ির সামনে সান বাঁধানো ঘাট করে দেওয়া হয়েছে। খালটিতে অন্তত আটটি পাকা সেতু, দুই পাড়ে পাকা সড়ক নির্মাণ করায় পুরো গ্রামের মানুষ এর সুফল পাচ্ছে। আর এসব প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের অর্থায়নে।

বাড়ি থেকে একটু দক্ষিণ দিকে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে রহমানিয়া টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড বিএম কলেজ। এর পাশেই তিনতলা একটি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ করা হয়েছে। মসজিদ, মাদ্রাসা, ক্লিনিকের মতো প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠান পরিচালনার জন্য গড়ে তোলা হয়েছে হাওলাদার ফাউন্ডেশন নামের একটি তহবিল। এ ফাউন্ডেশনের মাধ্যমেই এসব প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা ও পরিচালনা হচ্ছে।

যদিও এসব কার্যক্রমে কিছুটা নাখোশ কাজিরচরের বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান মন্টু বিশ্বাস। তিনি বলেন, যে জায়গায় নগমানিয়া টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড বিএম কলেজ করা হয়েছে, খাল ভরাট করে সেটা করা হয়েছে। এতে এলাকায় চাষাবাদ ব্যাহত হচ্ছে। ওই সময় এ নিয়ে এলাকার কৃষকেরা প্রতিবাদ করলেও কোনো কাজ হয়নি। এখন ওই বিদ্যালয়ের পাশে একটি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র করা হয়েছে, যা অপ্রয়োজনীয়। একইভাবে খালের পাড় বাঁধাই, সেতু, রাস্তাঘাটও মতিউর রহমানের প্রভাবে নির্মিত হয়েছে।

তবে মতিউরের পক্ষে গ্রামের কিছু মানুষ সাফাই গাইছেন। তারা বলেন, মতিউর সাহেব অনেক ভালো মানুষ। শুধু শুধু তাঁর নামে বদনাম করা হচ্ছে।

জানা যায়, মায়ের অসুস্থতার খবর শুনে সবশেষ ২০১৯ সালে মাত্র ৬ ঘণ্টার জন্য মতিউর গ্রামের বাড়ি গিয়েছিলেন। এরপর আর কখনো বাড়ি যাননি ছাগলকাণ্ডে দেশজুড়ে পরিচিতি পাওয়া এই রাজস্ব কর্মকর্তা।

এমআই

শেয়ার করুন:-
শেয়ার