করোনা মহামারিতে বিশ্বজুড়ে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) কার্যক্রমে ভাটা পড়ে। পরবর্তীতে করোনার রেশ কাটিয়ে ২০২২ সালে বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার ঘটে। পাশাপাশি বাংলাদেশের বিদেশি বিনিয়োগ খাতে আশার আলো দেখা যায়। তবে ২০২৩ সালে এসে আবারও এফডিআইয়ে নিম্নগতি দেখা যায়। ২০২৩ সালে বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগ কমেছে ১৩ দশমিক ৬৭ শতাংশ।
জাতিসংঘের বাণিজ্য ও উন্নয়ন বিষয়ক সংস্থা আংকটাডের ২০২৪ সালের বিশ্ব বিনিয়োগ প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। গত বৃহস্পতিবার প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে আংকটাড।
প্রতিবেদনে দেখা যায়, ২০২৩ সালে অনেক দেশের অর্থনৈতিক গতি হ্রাস পাওয়া এবং ভূরাজনৈতিক উত্তেজনার কারণে বিশ্বজুড়ে এফডিআই কমেছে প্রায় ২ শতাংশ। এফডিআই কমে হয়েছে ১ দশমিক ৩ ট্রিলিয়ন ডলার। এ সময়ে বাংলাদেশে কমেছে ১৩ দশমিক ৬৭ শতাংশ। ফলে টানা তিন বছর বৃদ্ধির পর দেশে এফডিআই আসা কমল। গত বছর বাংলাদেশে ৩০০ কোটি ৪০ লাখ ডলারের বিদেশি বিনিয়োগ এসেছে, যা দেশি মুদ্রায় হয় ৩৫ হাজার ৪৪৭ কোটি ২০ লাখ টাকা (প্রতি ডলার ১১৮ টাকা ধরে)।
২০২২ সালে এফডিআই এসেছিল ৩৪৮ কোটি ডলারের, ২০২১ সালে আসে ২৮৯ কোটি ৬০ লাখ ডলার, ২০২০ সালে আসে ২৫৬ কোটি ৪০ লাখ ডলার, ২০১৯ সালে আসে ২৮৭ কোটি ৪০ লাখ ডলার এবং ২০১৮ সালে আসে ৩৬১ কোটি ৩০ লাখ ডলার।
নতুন বিনিয়োগের পাশাপাশি এফডিআই স্টক বা মোট বিনিয়োগের স্থিতিও কমে গেছে। গত বছর বিনিয়োগের স্থিতি কমে দুই হাজার ৫৪ কোটি ডলারে নেমেছে, যা ২০২২ সালে ছিল দুই হাজার ৭৫ কোটি ডলারে।
স্বল্পোন্নত দেশগুলোর (এলডিসি) মধ্যে এফডিআই প্রাপ্তিতে শীর্ষ পাঁচ দেশের মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ। যদিও সামগ্রিকভাবে গত বছর এলডিসিভুক্ত দেশগুলোয় এফডিআই প্রবাহ ১৭ শতাংশ বেড়েছে, সেখানে বাংলাদেশের উল্টো কমেছে।
৪৫টি এলডিসির পাওয়া মোট এফডিআইয়ের ৫০ শতাংশই পেয়েছে পাঁচটি দেশ। এর মধ্যে তৃতীয় স্থানে আছে বাংলাদেশ, গত বছরও তা-ই ছিল। শীর্ষ দুই দেশ হচ্ছে ইথিওপিয়া ও কম্বোডিয়া। আর চতুর্থ ও পঞ্চম স্থানে আছে সেনেগাল ও মোজাম্বিক।
বাংলাদেশে বিদেশিদের বিনিয়োগ যেমন কমেছে, তেমনি বাংলাদেশি উদ্যোক্তাদের দেশের বাইরে বিনিয়োগও গত বছর কমেছে। গত বছর বৈধভাবে বাংলাদেশ থেকে তিন কোটি ডলারের বিনিয়োগ বিদেশে গেছে। তার আগের বছর বিদেশে বিনিয়োগ হয়েছিল পাঁচ কোটি ৩০ লাখ ডলার।
এমআই