ক্যাটাগরি: জাতীয়

ঐতিহাসিক পলাশী দিবস আজ

ঐতিহাসিক পলাশী দিবস আজ রোববার। ১৭৫৭ সালের এই দিনে পলাশীর আম্রকাননে ব্রিটিশদের সঙ্গে ঐতিহাসিক প্রহসনের যুদ্ধে বাংলার স্বাধীনতার সূর্য প্রায় ২০০ বছরের জন্য অস্তমিত হয়। মীর জাফর-ঘসেটি বেগমরা সেই ষড়যন্ত্রের কুশীলব। এক ঘণ্টার প্রহসনের যুদ্ধে পরাজয় ঘটে বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যার নবাব সিরাজউদ্দৌলার।

বেদনাবহ সেই স্মৃতিকে স্মরণ করে প্রতিবছর দিনটি পালিত হয়ে আসছে ‘পলাশী ট্র্যাজেডি দিবস’ হিসেবে। ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, ১৬ শতকের শেষদিকে প্রাচ্যে ওলন্দাজ, পর্তুগিজ ও ইংরেজদের ব্যাপক বাণিজ্যের প্রসার ঘটে। বাংলার সুবেদার-দেওয়ানরাও ইংরেজদের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তোলে। তারপর বিশ্বাসঘাতকতায় পরাজয় হয় বাংলার।
ইতিহাসবিদ মোবাশ্বের আলী তাঁর ‘বাংলাদেশের সন্ধানে’ গ্রন্থে লিখেছেন, মীর জাফরের মোনাফেকিতে নবাব সিরাজউদ্দৌলা প্রায় লাখ সেনা নিয়ে ক্লাইভের স্বল্পসংখ্যক সেনার কাছে পরাজিত হন। কুষ্ঠরোগে মৃত্যু হয় অতি ঘৃণ্য মীর জাফরের।

বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যার নবাব আলিবর্দী খাঁ মৃত্যুর আগে দৌহিত্র সিরাজউদ্দৌলাকে নবাবের সিংহাসনের উত্তরাধিকারী করে যান। নবাব আলিবর্দী খাঁর মৃত্যুর পর ১৭৫৬ সালের এপ্রিল মাসে সিরাজউদ্দৌলা সিংহাসনে বসেন। নবাবের খালা ঘসেটি বেগম হাত মেলান ইংরেজদের সঙ্গে। তারই হাত ধরে ষড়যন্ত্রে মেতে ওঠেন সেনাপতি মীর জাফর আলী খান, ধনকুবের জগৎ শেঠ, রাজা রায় দুর্লভ, উমিচাঁদ, ইয়ার লতিফ প্রমুখ।

সন্ধির চুক্তি ভঙ্গ করে চন্দননগরের ফরাসিদের দুর্গ দখল করে নেয় ইংরেজরা। এরপর ১৭৫৭ সালের ১৭ জুন ক্লাইভ কাটোয়ায় অবস্থান নেয়। নবাব ২২ জুন ইংরেজদের আগেই পলাশী পৌঁছে শিবির স্থাপন করেন। ২৩ জুন সকাল ৮টায় যুদ্ধ শুরু হয়। কিন্তু প্রধান সেনাপতি মীর জাফরের বিশ্বাসঘাতকতায় নবাবের পরাজয় ঘটে।

পলাশী বিপর্যয়ের পর শোষিত-বঞ্চিত শ্রেণি এক দিনের জন্যও স্বাধীনতা সংগ্রাম বন্ধ রাখেনি। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান ও ভারত নামে দুটি স্বাধীন রাষ্ট্র জন্মলাভ করে। এরপর ১৯৭১ সালে স্বাধীন হয় বাংলাদেশ।

এমআই

শেয়ার করুন:-
শেয়ার