ক্যাটাগরি: রাজধানী

প্রণোদনার পরও নির্ধারিত স্থানে পশু কোরবানিতে আগ্রহ নেই

নির্ধারিত স্থানে পশু কোরবানি করলে দেওয়া হবে এক হাজার টাকা। রয়েছে ভ্যানে করে বাসায় মাংস পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা। পশু কোরবানি দেওয়ার স্থান সাজানো ত্রিপল দিয়ে, পাশাপাশি রয়েছে সবার জন্য লেবুর শরবতের ব্যবস্থা। এত সব সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার পরও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) নির্ধারিত স্থানে পশু কোরবানি দিতে অনীহা নগরবাসীর।

ডিএনসিসির ৩ নম্বর ওয়ার্ডে মিরপুর সেকশন-১১, ব্লক-সি প্যারিস রোড সংলগ্ন মাঠে পশু কোরবানি করার ব্যবস্থা করে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন। সোমবার (১৭ জুন) বেলা পৌনে ১২টা পর্যন্ত এখানে মাত্র ৬টি গরু কোরবানি দেওয়া হয়। এছাড়া তখন আরও তিনটি গরু কোরবানি দেওয়ার জন্য রাখা ছিল।

যদিও মাঠ রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা সাজিদুল ইসলামের দাবি, সারাদিনে ৬০-৭০টি পশু কোরবানি হবে এই মাঠে।

ডিএনসিসির ৩নং ওয়ার্ডের অন্তর্গত ওই মাঠের আশপাশের সড়কে ওই সময় আরও ৬-৭টি গরু কাটাকুটি করতে দেখা যায়।

মাঠের পূর্ব পাশে ইম্পেরিয়াল স্কুলের সামনের রাস্তায় একটি গরু কোরবানির প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা রাফি। মাঠে কোরবানি না করার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘বাসার সামনে কোরবানি দিচ্ছি, মাংস নিয়ে টানা-হেঁচড়া কম হবে। আর মা-বোনেরা আছেন, তারাও বাসার নিচে মংস কাটাকাটি করবেন।’

মাঠ সংলগ্ন রাস্তায় পশু কোরবানি দিতে দেখা যায় আরও কয়েকজনকেও। তাদের মধ্যে কয়েকজন জানান, মাঠে কোরবানি দিলে কসাই দেওয়ার কথা ছিল। তবে তারা কসাই দিতে পারছে না। দুপুর ১টা বাজে এখনো কসাই নেই, গরু কখন কোরবানি দেবো?

মাঠের পাশের গলিতেও কয়েকজনকে পশু কোরবানি করতে দেখা যায়। তারাও কসাই সংকটসহ নানান অজুহাত দেখান। এসময় আশপাশের সড়কে জবাই করা পশুর বর্জ্য পড়ে থাকতে দেখা গেছে।

তবে নির্ধারিত মাঠে যারা পশু এনে কোরবানি দিচ্ছেন তারা স্বস্তিতে কোরবানি দিতে পারছেন বলে জানান। সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে পানি, লেবুর শরবত দেওয়া হয়েছে তাদের। মাঠে শক্ত পলিথিনের ওপরে বসে নিজস্ব কসাই দিয়ে মাংস কাটতে দেখা গেছে কয়েকজনকে। ফ্যানের বাতাস ও ভ্যান সুবিধাও পেয়েছেন তারা।

মাঠে এসে কোরবানি দিয়েছেন স্থপতি সাজিদুল ইসলাম বিপ্লব। তিনি বলেন, ‘নির্ধারিত স্থানে কোরবানির মাইকিং শুনে সিদ্ধান্ত নেই এখানে কোরবানি করবো। এখন পর্যন্ত সব ঠিক আছে। সরকার একটা ভালো উদ্যোগ নিয়েছে। কোরবানি করতে যা যা প্রয়োজন সব কিছুরই ব্যবস্থা আছে। ত্রিপল, পলিথিন, পানি সবই দেওয়া হয়েছে।’

এবার প্রথমবার হওয়ায় মানুষের আগ্রহ কম। আগামীতে এই সংখ্যা আরও বাড়বে বলেও মনে করেন এই স্থপতি।

সাজিদুল ইসলাম আরও বলেন, রাস্তায় কোরবারি করলেও খুব বেশি সমস্যা হবে না। রাস্তা সংলগ্ন ড্রেনে সব ময়লা পানি ও পশুর রক্ত চলে যাবে। এছাড়া সিটি করপোরেশনের গাড়ি এসে সব ময়লা নিয়ে যাবে। যারা মাঠে কোরবানি দিচ্ছেন তারা অনেক সুবিধা পাচ্ছেন।’

এবার ৭ নম্বর ওয়ার্ডে এরকম ৪টি কোরবানির স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড কাউন্সিলর তোফাজ্জল হোসেন। বেলা ১১টা ৫৩ মিনিটে মোবাইল ফোনে তিনি জানান, তিন শতাধিক পশু কোরবানি হবে এসব স্থানে। এরই মধ্যে ৮০ শতাংশ পশু কোরবানি শেষ হয়েছে। সিটি করপোরেশন পুরো বিষয়টি দেখভাল করছে।

শেয়ার করুন:-
শেয়ার