প্রত্যেক সামর্থ্যবান মুসলমানের ওপর পশু কোরবানি ওয়াজিব। একজন সামর্থ্যবান মুসলমানের জন্য ১০ জিলহজ কোরবানির থেকে উত্তম আমল আর কিছু নেই।
এ প্রসঙ্গে রাসুল (সা.) বলেছেন, কোরবানির দিন আদম সন্তান যে আমল করে তার মধ্যে আল্লাহর কাছে সবচেয়ে প্রিয় আমল হলো কোরবানির পশুর রক্ত প্রবাহিত করা। কেননা, কোরবানির পশু কিয়ামতের দিন তার শিং, নাড়িভুঁড়ি ও চুল-পশম নিয়ে উপস্থিত হবে। আর তার রক্ত জমিনে পতিত হওয়ার আগেই আল্লাহর নিকট কবুল হয়ে যায়। অতএব তোমরা আনন্দের সঙ্গে তা পালন কর। (ইবন মাজাহ)
কোরবানি করা পশুর মাংস ভাগ করার একটি সুনির্দিষ্ট নিয়ম বা বিধান রয়েছে। মহানবি (সা.) কোরবানির পশুর মাংস ভাগ করার নিয়ম সুস্পষ্টভাবে বলে দিয়েছেন।
আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসুল (সা.) কোরবানির মাংস একভাগ নিজের পরিবারকে খাওয়াতেন, একভাগ গরিব প্রতিবেশীদের দিতেন এবং একভাগ দিতেন গরিব-মিসকিনদের।
এ প্রসঙ্গে কোরআনে আল্লাহতায়ালা বলেন, আর কাবার জন্য উৎসর্গীকৃত উটকে আমি তোমাদের জন্য আল্লাহর অন্যতম নিদর্শন করেছি। এতে তোমাদের জন্য মঙ্গল রয়েছে। সুতরাং সারিবদ্ধভাবে বাধা অবস্থায় তাদের জবাই করার সময় তোমরা আল্লাহর নাম উচ্চারণ করো। এরপর যখন তারা কাত হয়ে পড়ে যায়, তখন তা থেকে তোমরা আহার করো এবং আহার করাও; যে কিছু চায় না তাকে এবং যে চায় তাকেও। এমনিভাবে আমি এগুলোকে তোমাদের বশীভূত করে দিয়েছি, যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে পার। (সুরা হজ : আয়াত ৩৬)
এই আয়াত থেকে কোরবানির গোশত ৩টি ভাগে ভাগ করার একটি নির্দেশনা বা ইঙ্গিত পাওয়া যায়। তা হলো-
১. কোরবানি দাতা নিজেদের জন্য রাখবে তথা আহার করা।
২. আত্মীয়স্বজনদের এক ভাগ দেওয়া, যারা চায় না।
৩. যারা অভাবি বা গরিব; (যারা চায় এবং না চায়) তাদের এক ভাগ দেওয়া।
কোরবানির পশুর গোশতকে উল্লিখিত তিন ভাগে ভাগ করাকে মুস্তাহাব এবং উত্তম বলেছেন অধিকাংশ ইসলামিক স্কলার। তবে ভাগ করার ক্ষেত্রে কেউ কম-বেশি করলেও কোনো সমস্যা নেই। এমনটি ভাবার কোনো কারণ নেই যে, এর ফলে কোরবানি হবে না বা কোরবানি নষ্ট হয়ে যাবে।
এ ছাড়া কারও প্রয়োজন হলে বা পরিবারের সদস্য বেশি হলে কোরবানির গোশত ভাগ না করে পুরোটা খেতে পারবে। তবে তিনটি ভাগে ভাগ করে দেওয়া হচ্ছে উত্তম।