ক্যাটাগরি: জাতীয়

রাত পোহালেই পবিত্র ঈদুল আজহা

মুসলমানদের দ্বিতীয় সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা। রাত পোহালেই ঈদের নামাজের মধ্য দিয়ে পবিত্র ঈদুল আজহা পালিত হবে। এরইমধ্যে জাতীয় ঈদগাহর প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। এবারে জাতীয় ঈদগাহে একসঙ্গে ৩৫ হাজার মানুষ জামাতে অংশগ্রহণ করতে পারবেন।

সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে জাতীয় ঈদগাহ মাঠে সোমবার (১৭ জুন) সকাল সাড়ে ৭টায় দিকে ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে। ঈদের প্রথম জামাতে রাষ্ট্রপতি, প্রধান বিচারপতি, মন্ত্রিসভার সদস্য, সংসদ সদস্য, রাজনীতিবিদ, কূটনীতিকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ একসঙ্গে নামাজ পড়বেন। সেজন্য প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা প্রস্তুতি শেষ করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

রবিবার (১৬ জুন) সকালে জাতীয় ঈদগাহর নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরিদর্শন করেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমান এবং র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ানের মহাপরিচালক হারুন অর রশিদ।

ঈদের জামাতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে জানিয়ে ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান বলেন, পুরো ঈদগাহকে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হয়েছে। পাঁচ স্তরের নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হয়েছে। আমাদের সাধারণ ইউনিফর্ম পুলিশ প্যাট্রোলিং, চেকপোস্ট, সাইবার প্যাট্রোলিং, সিসিটিভি ক্যামেরা থাকছে। এছাড়াও পুলিশ, র‌্যাবসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা ও স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স-এসএসএফ এবং ভিভিআইপিদের নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা সেখানে দায়িত্ব পালন করবেন। আমরা আশা করি ঈদের এই জামাত সুষ্ঠুভাবে সুন্দরভাবে অনুষ্ঠিত হবে।

ডগ স্কোয়াড, সিসি ক্যামেরা, মেটাল ডিটেকটর, ওয়াচ টাওয়ার ব্যবহারসহ সব ধরনের প্রস্তুতির কথা জানিয়ে র‌্যাব মহাপরিচালক বলেন, আমাদের গোয়েন্দারা যেমন মাঠে থেকে কাজ করছে, তেমনই সাইবার ওয়ার্ল্ডে সার্বক্ষণিক নজরদারি হচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে কেউ উসকানিমূলক বক্তব্য দিলে তাকে দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে।

জাতীয় ঈদগাহের প্রধান ফটকের সামনে নান্দনিকভাবে সাজানো হয়েছে তোরণ (প্রধান গেট)। সেখানে লেখা রয়েছে ‘চারদিকে আজ খুশির জোয়ার, সবাই গাইছে গীত, এসেছে ধরায় মুসলিম জাহানের কোরবানির ঈদ। ঈদ মোবারক।’ ঈদগাহ প্রাঙ্গণে রয়েছে অজুর ব্যবস্থা। ওজুর জন্য সারি সারি পানির ট্যাপ নতুনভাবে লাগানো হয়েছে। ঈদগাহের মাঠ প্রায় পুরোটাই ত্রিপল দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছে। প্যান্ডেলের নিচে মাঠে ম্যাট বিছানো। এছাড়াও রয়েছে সিলিং ফ্যান, লাইট ও মাইকের ব্যবস্থা।

জাতীয় ঈদগাহে পুলিশ ও র‌্যাবের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ এবং স্বাস্থ্যসেবাকেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া ফায়ার ব্রিগেডের একটি টিমও রাখা হয়েছে জাতীয় ঈদগাহ মাঠে। ঈদগাহের মূল প্রবেশ পথ করা হয়েছে চারটি। জামাত শেষে বের হওয়ার জন্য উত্তর দিকে আরও তিনটি গেট রাখা হয়েছে।

এবারের জাতীয় ঈদগাহে নারীদের জন্য আলাদা প্রবেশ পথ ও নামাজের জন্য আলাদা জায়গা করা হয়েছে। ৩ হাজার ৫০০ জন একসঙ্গে ঈদের নামাজ জামাতে আদায় করতে পারবেন।

জাতীয় ঈদগাহের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে জানিয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মুখপাত্র আবু নাসের বলেন, ‘জাতীয় ঈদগাহে এবার প্রায় ৩৫ হাজার মানুষ একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারবেন। অতি বৃষ্টিতেও যাতে নগরবাসী স্বাচ্ছন্দ্যে ঈদের নামাজ আদায় করতে পারেন, সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’

জানা যায়, জাতীয় ঈদগাহে ঈদুল আজহার প্রথম জামাতে প্রায় ২৫০ জন অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ও ৮০ জন গুরুত্বপূর্ণ নারী অংশ নেবেন। এছাড়া সাধারণ পুরুষ প্রায় ৩১ হাজার এবং নারী ৩ হাজার ৫০০ জন মিলিয়ে প্রায় ৩৫ হাজার জন নামাজে অংশ নেবেন।

ঈদের জামাতে মূল ইমামের দায়িত্ব পালন করবেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব হাফেজ মাওলানা মুফতি রুহুল আমিন। বিকল্প ইমাম হিসেবে থাকবেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম মুফতি হাফেজ মাওলানা মিজানুর রহমান। মূল উপস্থাপক হিসেবে থাকবেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের দীনি দাওয়াত ও সংস্কৃতি বিভাগের পরিচালক মো. আনিছুর রহমান সরকার। পাশাপাশি মূল কারি হিসেবে প্রধান ঈদ জামাতে দায়িত্ব পালন করবেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের মুয়াজ্জিন কারি মো. ইসহাক।

শেয়ার করুন:-
শেয়ার