ক্যাটাগরি: খেলাধুলা

চার কোটি টাকা ক্রীড়া ভাতা পেলেন ১ হাজার ৬৩২ জন

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অত্যন্ত ক্রীড়াপ্রেমী ছিলেন। ১৯৭৫ সালের ৬ আগস্ট ক্রীড়াবিদ ও ক্রীড়া সংশ্লিষ্টদের জন্য ক্রীড়াসেবী কল্যাণ ফাউন্ডেশন গঠন করেন তিনি। যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় বঙ্গবন্ধু ক্রীড়া কল্যাণসেবী ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে দুস্থ-অসহায় ও অসুস্থ ক্রীড়াবিদ-সংগঠকদের সহায়তা করছে দীর্ঘদিন থেকেই।

অসহায় ও দুস্থ খেলোয়াড়-সংগঠকদের মাসিক দুই হাজার টাকা করে বছরে ২৪ হাজার টাকা প্রদান করা হয়। জেলা-বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থা ও ফেডারেশনের মাধ্যমে আবেদনের পর ক্রীড়াসেবী কল্যাণ ফাউন্ডেশন যাচাই বাছাই করে তালিকা চূড়ান্ত করে। মনোনীত ব্যক্তিদের চেক সংগ্রহ করতে ঢাকায় আসতে অনেক খরচ হয়। আবার অনেক সময় ঢাকা থেকে ক্রীড়া কল্যাণসেবী জেলা-পর্যায়ে চেক প্রেরণ করাও সময়সাপেক্ষ। এই সংকট দূর করতে ক্রীড়া মন্ত্রণালয় আজ থেকে এটি ডিজিটালাইলেজশন করেছে। এখন থেকে সংশ্লিষ্ট খেলোয়াড়-সংগঠকের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অর্থ সরাসরি জমা হবে। যাকে ব্যাংকিংয়ের ভাষায় বলা হয় ইএফটি (ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার)।

যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ে আজ (বৃহস্পতিবার) ক্রীড়া কল্যাণসেবীর এই ডিজিটালাইজেশনের উদ্বোধন করেন যুব ও ক্রীড়ামন্ত্রী নাজমুল হাসান পাপন। সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এই কার্যক্রম সম্পাদন করে। ভার্চুয়ালি ঢাকার সোনালী ব্যাংকের রমনা শাখার ম্যানেজার ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হয়ে জানান,‌ সোনালী ব্যাংকে যাদের অ্যাকাউন্ট রয়েছে ঘণ্টা খানেকের মধ্যে তারা সবাই টাকা উত্তোলন করতে পারবেন এবং যাদের সোনালী ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট নেই, তাদের আজ বিকেলের মধ্যে টাকা জমা হবে।

আজ চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে জেলা পর্যায়ে মোট ২,৬৭৫টি আবেদন হতে চূড়ান্তভাবে মনোনীত ১৬৩২ জনকে ৩ কোটি ৯১ লাখ ৬৮ হাজার টাকা ক্রীড়াভাতা প্রদান করা হয়। বঙ্গবন্ধু ক্রীড়াসেবী কল্যাণ ফাউন্ডেশনের বর্তমান সিডমানি ৭৭ কোটি ৮৫ লক্ষ টাকা। যা থেকে বাৎসরিক মুনাফার পরিমাণ আনুমানিক ৪ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। এই অর্থ দিয়ে মাসিক ভাতার পাশাপাশি বঙ্গবন্ধু ক্রীড়া শিক্ষা বৃত্তি ও অসুস্থ ক্রীড়াবিদ-সংগঠকদের চিকিৎসা সহায়তা করা হয়।

যুব ও ক্রীড়ামন্ত্রী নাজমুল হাসান পাপন ক্রীড়াবিদদের আর্থিক সংকট ও ভাতা প্রদান সম্পর্কে বলেন,‌ ‘বঙ্গবন্ধু নিজে ফুটবলার ছিলেন। ক্রীড়াবিদদের জন্য তার এই উদ্যোগ ছিল সুদূরপ্রসারী ভাবনা। খেলোয়াড়রা একটা বয়সের পর আর খেলতে পারেন না। খেলার জন্য অনেক সময় পড়াশোনাও হয় না সেভাবে। খেলার জন্য চাকরি, ব্যবসা-বাণিজ্যও সেভাবে করতে পারেন না। ফলে খেলা ছাড়ার পর একটা আর্থিক সংকটের মধ্যে তো পড়েনই। এই সামান্য অর্থ অনেকের জন্য খুব উপকারী ও গুরুত্বপূর্ণ। এটা যথেষ্ট নয় আমি মনে করি। একটা পরিকল্পনা রয়েছে ক্রীড়াবিদদের চাকরির ব্যবস্থা করার জন্য। এজন্য বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে এগিয়ে আসতে হবে। আমরাও যোগাযোগ করব।’

২০০৯-১০ থেকে ২০২২-২৩ অর্থবছর পর্যন্ত সর্বমোট ৯,৫৭৭ জন ক্রীড়াসেবীকে মাসিক/এককালীন ক্রীড়াভাতা ১৯ কোটি ২ লাখ ৭ হাজার টাকা প্রদান করা হয়েছে। ২০১৮-১৯ থেকে ২০২৩-২৪ অর্থবছর পর্যন্ত ৩৩৭ জন অসুস্থ ক্রীড়াসেবীকে চিকিৎসা/আর্থিক সহায়তা হিসেবে দেওয়া হয়েছে ৪ কোটি ৯ লাখ ৪৫ হাজার টাকা। ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে প্রথমবারের মতো ১০০০ জন ক্রীড়া শিক্ষার্থীদের ১ কোটি ৮৩ লাখ ৯৬ হাজার টাকা বঙ্গবন্ধু ক্রীড়া শিক্ষা বৃত্তি প্রদান করা হয়েছে।

শেয়ার করুন:-
শেয়ার