পবিত্র ঈদুল আজহার আগে মসলা জাতীয় পণ্যের চাহিদা বেড়ে যায়। অতিরিক্ত চাহিদার সুযোগে পণ্যগুলোর দাম বাড়িয়ে দেয় অসাধু বিক্রেতারা। এবারও ঈদের আগে বাড়লো রসুনের দাম। বিক্রেতাদের দাবি, বাজারে সরবরাহে ঘাটতি থাকায় দামে প্রভাব পড়েছে। আর ক্রেতাদের অভিযোগ, কোরবানির ঈদে রসুনের চাহিদা বেশি থাকায় আগে থেকেই ব্যবসায়ীরা দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন।
বুধবার (১২ জুন) রাতে রাজধানীর বাড্ডা ও রামপুরা এলাকার বাজার ঘুরে রসুনের দামের এই চিত্র দেখা গেছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, দেশি রসুন বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা থেকে ২৪০ টাকা কেজিতে। এক সপ্তাহ আগেও যা ছিল ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে রসুনের দাম বেড়েছে কেজিতে ৪০ থেকে ৫০ টাকা। অথচ গত বছরের এই সময়েও দেশি রসুন বিক্রি হয়েছিল ১০০ থেকে ১২০ টাকা কেজিতে।
এদিকে, দেশি রসুনের পাশাপাশি আমদানি করা রসুনের দামও বেড়েছে। বর্তমান বাজারে কেজিপ্রতি বিদেশি রসুন বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ২৮০ টাকা পর্যন্ত, যা গত সপ্তাহেও ছিল ২০০ থেকে ২২০ টাকা।
বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মাসখানেক আগেই রসুনের উৎপাদন মৌসুম শেষ হয়েছে। সেই হিসেবে দেশি রসুনের দাম বছরের এই সময়ে তুলনামূলক কম থাকার কথা। কিন্তু ঈদুল ফিতরের পরই বাড়তে থাকে রসুনের দাম। এরপর গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে রসুনের দাম বেড়েছে কেজিতে ৫০ টাকা পর্যন্ত।
বাড্ডা পাঁচতলা বাজারের ব্যবসায়ী মো. সামছুল হক বলেন, রসুনের দামটা একটু বাড়তির দিকে। আজকের বাজারে আমি দেশি রসুন বিক্রি করছি ২২০ টাকা। আর আমদানি করা রসুন বিক্রি করছি ২৫০ টাকা কেজি। ঈদের আগমুহূর্তে আরেকটু দাম বাড়তে পারেও বলে খবর পাচ্ছি। তবে, ঠিক কী কারণে হঠাৎ রসুনের দাম বেড়েছে, সেটির সঠিক কারণ আমার জানা নেই।
রসুন কিনতে আসা এক রিকশাচালক বলেন, সামনে ঈদ তাই সব জিনিসের দাম বেড়ে গেছে। পেঁয়াজ, রসুন, আলুসহ এমন কোনো পণ্য নেই যার দাম বাড়েনি। এক কেজি চাল কিনতে চলে যায় ৭৫ টাকা। সাড়ে ৩০০-৪০০ টাকার নিচে কোনো মাছ নেই। আগে মাঝেমধ্যে ব্রয়লার মুরগি খেতাম, তাও এখন ২০০-এর ঘরে। সারাদিন রিকশা চালিয়ে যে টাকা আয় করি, তা যদি তিন বেলার খাবারেই চলে যায়, তাহলে অন্য সব আর কী দিয়ে চালাব?
জানা গেছে, এ বছর দেশের মোট উৎপাদনকৃত রসুনের ৬৬ শতাংশই উৎপাদিত হয়েছে চলনবিল অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে। মৌসুমের শুরুতেই রসুনের ভালো দাম পেয়ে খুশি এ অঞ্চলের চাষিরা। তবে উৎপাদনকারী চাষিরা যে দামে বিক্রি করছেন, খুচরা বাজারে তার চেয়ে অনেক বেশি দামে রসুন কিনছেন সাধারণ ক্রেতারা।
এমআই