ক্যাটাগরি: জাতীয়

শেখ হাসিনাকে বিশ্বনেতাদের জোটে চায় দুই সংস্থা

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে গ্লোবাল ফান্ড ও স্টপ টিবি পার্টনারশিপের নেতারা গ্লোবাল ফান্ডের চ্যাম্পিয়নদের জোটে অন্তর্ভুক্ত করতে চান। বুধবার (১২ জুন) গণভবনে গ্লোবাল ফান্ডের নির্বাহী পরিচালক পিটার স্যান্ডস ও স্টপ টিবি পার্টনারশিপের নির্বাহী পরিচালক ড. লুসিকা দিতিউ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। এ সময় তারা এ আবেদন জানান।

সাক্ষাতের পর সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব মো. নাঈমুল ইসলাম খান বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দ্য সিলভা সংস্থা দুটোর নেতৃবৃন্দের তালিকায় রয়েছেন। সংস্থা দুটি মূলত বাংলাদেশে টিবি, এইচআইভি ও ম্যালেরিয়া এবং এর অর্থায়ন নিয়ে কাজ করে। তারা বাংলাদেশের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক বিস্তৃত ও গভীর করতে চায়।

প্রেস সচিব বলেন, তারা আসলে চান যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তহবিল সংগ্রহের জন্য বিশ্ব নেতাদের সঙ্গে তার যোগাযোগ ও নেটওয়ার্ক ব্যবহার করবেন। উভয় নির্বাহী পরিচালকই টিবি, এইচআইভি ও ম্যালেরিয়া সম্পর্কে গভীর জ্ঞানের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রীর উচ্চ প্রশংসা করে এটিকে ‘বিস্ময়কর’ বলে উল্লেখ করেছেন।

নাঈমুল ইসলাম খান আরও বলেন, পাহাড়ি এলাকা ছাড়া বাংলাদেশে ম্যালেরিয়া নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এবং বাংলাদেশের এইচআইভি পরিস্থিতিও নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের এসব অর্জন তারা তুলে ধরবেন।

এ প্রসঙ্গে আগামী দিনে তাদের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানিয়ে দুই নির্বাহী পরিচালক প্রধানমন্ত্রীকে বলেন, ‘আপনি যোগ দিলে বাংলাদেশের সাফল্যের গল্প বিশ্ব অঙ্গনে তুলে ধরা হবে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের চাহিদাও জোরালো হবে।’

তারা উল্লেখ করেন, বাংলাদেশ এরই মধ্যে এসব সাফল্য অর্জন করেছে। আরও কিছু সহায়তা পেলে বাংলাদেশ এসব রোগ নির্মূলের চূড়ান্ত লক্ষ্য স্পর্শ করার সাফল্য অর্জন করতে পারবে।

বৈঠকে গ্লোবাল ফান্ডের নির্বাহী পরিচালক পিটার স্যান্ডস এবং স্টপ টিবি পার্টনারশিপের নির্বাহী পরিচালক ডক্টর লুসিকা ডিটিউ দাবি করেন, বাংলাদেশে প্রতি বছর প্রায় ৪০ হাজার মানুষ যক্ষ্মা সংক্রান্ত সমস্যার কারণে মারা যায়।

প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংখ্যা নিয়ে ভিন্নমত পোষণ করেন এবং বৈঠকে উপস্থিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের কাছে এ বিষয়ে জানতে চান। তারা জানান, তাদের তথ্য অনুযায়ী দেশে প্রায় ২৬ থেকে ২৭ হাজার মানুষ যক্ষ্মায় আক্রান্ত হয়ে মারা যায়।

নাঈমুল ইসলাম খান বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যক্ষ্মাজনিত মৃত্যুর সংখ্যা বের করতে একটি জরিপ চালাতে বলেন। গ্লোবাল ফান্ড এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে সহায়তা করবে। তারা দ্রুত টিবি শনাক্ত করতে এআই চালিত হাইটেক এক্স-রে মেশিন দিয়ে দেশে মোবাইল ডায়াগনস্টিক ডেভেলপমেন্ট পরিচালনায়ও বাংলাদেশকে সাহায্য করবে।

প্রেস সচিব উল্লেখ করেন, প্রধানমন্ত্রী ও নির্বাহী পরিচালকরা দেশের এইচআইভি সংক্রান্ত সমস্যা নিয়ন্ত্রণে প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার ওপর জোর দেন। তারা সম্মত হন যে এইচআইভি সম্পর্কিত সমস্যা মোকাবিলায় আমাদের প্রচেষ্টা বন্ধ করা উচিত নয়। যদিও বাংলাদেশ এ বিষয়ে খুব ভালো করছে। এতে অবশ্যই আত্মতৃপ্তিতে ভোগা উচিত হবে না, যা খারাপ সংবাদ বয়ে আনতে পারে।

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের অর্জন যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় এবং দেশকে আরও ভালো অবস্থানে আনতে পারে সেজন্য সচেতনতামূলক কার্যক্রম আরও জোরালোভাবে চালিয়ে যেতে হবে। যক্ষ্মার বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যেতে হবে।

নাঈমুল ইসলাম খান আরও বলেন, তারা সাফল্যকে আরও এগিয়ে নিতে আগ্রহী এবং বাংলাদেশের জন্য তহবিল নিশ্চিত করতে প্রস্তুত। কমিউনিটি ক্লিনিক ইস্যু সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী সংক্ষিপ্তভাবে তার কার্যক্রম এবং গ্রামীণ জনগোষ্ঠীকে কীভাবে সহায়তা করছে তা বর্ণনা করেন।

সাক্ষাৎকালে আরও উপস্থিত ছিলেন- স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন, স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. রোকেয়া সুলতানা, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন প্রমুখ।

শেয়ার করুন:-
শেয়ার