প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা খাতে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) আগ্রহী বলে জানিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত ইইউর রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি। সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ (ডিক্যাব) আয়োজিত ‘ডিক্যাব টক’ অনুষ্ঠানে এ আগ্রহের কথা জানান রাষ্ট্রদূত।
চার্লস হোয়াইটলি বলেন, প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা খাতে বাংলাদেশের সঙ্গে আমরা কাজ করতে চাই। এই বিষয়ে সহযোগিতা করতে আগ্রহী ইইউ।
বাংলাদেশ কখনো তার ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হয়নি অভিমত ব্যক্ত করে রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশের মোট দেশীয় উৎপাদনের তুলনায় মোট ঋণ ৩৭ শতাংশের বেশি নয়। বাংলাদেশের যে অবস্থা সেটিতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল সন্তুষ্ট এবং তারা বাংলাদেশকে সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ কখনোই তার ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হয়নি। আর এটি খুবই চমকপ্রদ বিষয়। এ জন্য ইউরোপিয়ান ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহী।
চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ (বিআরআই) এবং ইইউর গ্লোবাল গেটওয়ে নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে রাষ্ট্রদূত বলেন, বিআরআই থেকে ইইউর গ্লোবাল গেটওয়ের অপার ভিন্ন। কারণ ইইউ শুধু টাকা দিচ্ছে না, প্রযুক্তি হস্তান্তর করছে। কারণ, আমাদের লক্ষ্য কানেক্টিভিটি এবং গুণগত মানের প্রযুক্তি হস্তান্তর।
বর্তমান বাংলাদেশ নিয়ে মূল্যায়ন করতে গিয়ে রাষ্ট্রদূত বলেন, ১০ বছরের আগের বাংলাদেশ আর বর্তমান বাংলাদেশের চিত্র ভিন্ন। বাংলাদেশকে উন্নত করার বিষয়ে সরকারের কাজ দৃশ্যমান। বর্তমান বাংলাদেশের অনেক উন্নয়ন চোখে পড়ার মতো, বিশেষ করে আইটি ও মেডিকেলসহ বিভিন্ন খাতে উন্নতি করছে। বাংলাদেশ নিয়ে আমি খুবই আশাবাদী।
এলডিসি পরবর্তী যেসব ক্ষেত্রে উন্নতি করার আন্তর্জাতিক দাবি ছিল তা ভালোভাবেই বাংলাদেশ মানিয়ে নিয়েছে বলেও মন্তব্য করেন চার্লস হোয়াইটলি। রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ জলবায়ু সংকট মোকাবিলা করা। আমরা সবাই এই সংকট মোকাবিলায় সঙ্গী। বাংলাদেশ নিয়ে লেকচার দিতে আসেননি উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত বলেন, দেশের বিভিন্ন বিষয়ে সোচ্চার হতে সুশীল সমাজের বিশাল ভূমিকা রয়েছে।
জঙ্গিবাদ দমনে বাংলাদেশের প্রশংসা করেন ইইউর রাষ্ট্রদূত। তিনি বলেন, ৮ থেকে ৯ বছর আগে হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি আক্রমণ হয়েছিল। তারপর থেকে বাংলাদেশ জঙ্গি ও উগ্রবাদ প্রতিরোধে প্রশংসনীয় ভূমিকা পালন করছে।
গাজা ইস্যুতে ইইউর ভূমিকা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে চার্লস হোয়াইটলি বলেন, ফিলিস্তিন সরকার ও জনগণের সঙ্গে ইইউ সম্পর্ক খুবই ভালো। ফিলিস্তিনে ইইউ অনেক অর্থ সহায়তা দিয়ে থাকে। তবে ইইউ হামাসকে একটি সন্ত্রাসী সংগঠন মনে করে। শিগগিরই গাজায় হত্যাযজ্ঞ বন্ধ হওয়া উচিত। পাশাপাশি যাদের জিম্মি করা হয়েছে তাদেরও মুক্তি দেওয়া দরকার।
রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে ইইউর রাষ্ট্রদূত বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের অবস্থান প্রশংসনীয়। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে সবসময় পাশে থাকবে। এ সমস্যা সমাধানে অগ্রাধিকার দেবে।
কাফি