ক্যাটাগরি: অর্থনীতি

বকেয়া বেতনের দাবিতে ফের আন্দোলনে ইক্সোরার শ্রমিকেরা

বকেয়া বেতনের দাবিতে কারখানার সামনে অবস্থান নিয়ে ফের বিক্ষোভ করছেন ইক্সোরা আ্যাপারেলস নামে একটি কারখানার শ্রমিকরা। বৃহস্পতিবার (৬ জুন) সকালে সাভারের আশুলিয়া এলাকায় কারখানার সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করতে দেখা যায় তাদের।

শ্রমিকেরা জানান, ইক্সোরা অ্যাপারেলস গত দুই মাস ধরে আমাদের বেতন দিচ্ছে না। উল্টো নোটিশবিহীন কারখানা বন্ধের নাম করে আমাদের উপার্জনের রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে। এছাড়া আমাদের বেতন নিয়ে নিয়মিত টালবাহানা করেই চলছে তারা। ঈদের আগে সবাই বেতন-বোনাসের আশায় থাকে। এদিকে আমরা আগের দুই মাসের বেতনই পাচ্ছি না।

বিক্ষোভে আসা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শ্রমিক বলেন, দুই মাস হয়ে গেছে বেতন পাই না। বারবার ঘুরাচ্ছে। বাসার খরচ, ভাড়া মেটাতে পারছি না। সংসার চালাতে পারছি না। এখন দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। বেতন না দিলে বাসায়ও যেতে পারব না।

এদিকে শ্রমিকদের বেতনের ইস্যুকে মিথ্যা বলে দাবি করছেন প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পর্ষদ। তারা বলছেন, লোকসানে পড়ে যাওয়ায় গত মে মাসে সাভারের আশুলিয়ার কারখানাটি বন্ধ করে দেয় ইক্সোরা অ্যাপারেলস লিমিটেড। তাতে কারখানায় কাজ করা শ্রমিকদের গত এপ্রিল মাস পর্যন্ত বেতন পরিশোধ করে দেওয়া হয়। ফলে কোম্পানি থেকে শ্রমিকদের কোন বকেয়া বেতন পাওনা নেই।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইক্সোরা অ্যাপারেলসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও এনায়েতুল ইসলাম সম্প্রতি অর্থসংবাদকে বলেন, শ্রমিকেরা আমাদের কাছে মে এবং জুন মাসের বেতন দাবি করছেন। অথচ লোকসানে পড়ে যাওয়ায় গত মে মাস থেকে আমাদের সাভারের আশুলিয়ার কারখানাটি বন্ধ রয়েছে। তারা কারখানায় কোন কাজ না করেই অন্যায়ভাবে বেতন দাবি করছেন।

তিনি জানান, ইক্সোরা অ্যাপারেলসের ব্যবস্থাপনা পর্ষদ শ্রমিকদের সুবিধার্থে মে মাসের ১০ দিনের বেতন প্রদান করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। চলতি জুন মাসের ১০ তারিখের মধ্যেই সবার পাওনা পরিশোধ করা হবে।

এর আগে ইক্সোরা অ্যাপারেলসের বিরুদ্ধে বিদেশে অর্থপাচার ও ঋণ পরিশোধে গড়িমসি করার অভিযোগ উঠে। দুদকের তদন্ত অনুসারে, ইক্সোরা অ্যাপারেলস ২০১৮ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে পাঁচ কোটি ৯৭ লাখ টাকার পোশাকের ১২টি চালান যুক্তরাজ্যে পাঠিয়েছে। কিন্তু এ বাবদ রপ্তানি আয় দেশে আনেনি।

এছাড়া এনআরবিসি ব্যাংকের ১৯তম বৃহত্তম ঋণগ্রহীতা হিসেবে নাম লিখিয়েছে ইক্সোরা অ্যাপারেলস। কিন্তু কোম্পানিটি মোট ঋণের মধ্যে ১১৯ কোটি টাকা ২০২৭ ও ২০২৮ সাল পর্যন্ত পুনঃতফশিল করিয়ে নিয়েছে। পাশাপাশি সময়মতো কিস্তি পরিশোধ না করায় কোম্পানিটির অতিরিক্ত বকেয়া দাঁড়িয়েছে প্রায় ছয় কোটি টাকায়। এতে কোম্পানি পর্যায়ক্রমে খেলাপির দিকে ধুঁকছে।

এমআই

শেয়ার করুন:-
শেয়ার