আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেট আজ উত্থাপিত হতে যাচ্ছে। বৃহস্পতিবার (৬ জুন) বিকেল ৩টায় ‘সুখী, সমৃদ্ধ, উন্নত ও স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে অঙ্গীকার’ স্লোগানে অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী সংসদে স্বাধীন বাংলাদেশের ৫৩তম বাজেট উত্থাপন করবেন। এবারের বাজেটে ফের বাড়ানো হচ্ছে সিগারেটের দামও।
তামাকজাত পণ্যের ব্যবহার কমাতে এবং রাজস্ব আদায় বাড়াতে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে ফের সিগারেটের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব উঠছে। অর্থ মন্ত্রণালয় ও এনবিআর সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।
বাজেট সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, সর্বনিম্ন ধাপের সিগারেটের ১০ শলাকার মূল্য ৪৫ টাকা থেকে বেড়ে হবে ৫০ টাকা। মধ্যম মানের ১০ শলাকার মূল্য ৬৭ টাকা থেকে বেড়ে হবে ৭০ টাকা, উচ্চ মানের ১০ শলাকার মূল্য ১১৩ টাকা থেকে বেড়ে হবে ১২০ টাকা এবং অতি-উচ্চ স্তরের ১০ শলাকার মূল্য ১৫০ টাকা থেকে বেড়ে হবে ১৬০ টাকা।
ব্যাগেজ নিয়ম অপরিবর্তিত থাকছে, বর্তমান নিয়মানুযায়ী একজন যাত্রী ৪ হাজার টাকা শুল্ক পরিশোধ করে ১১৭ গ্রাম স্বর্ণ আনতে পারেন। এনবিআর এটি বছরে একবারের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখার প্রস্তাব করেছিল, তবে প্রধানমন্ত্রী এতে ভেটো দেন। প্রতিবার স্বর্ণ আনার সময় কর আদায় করা হবে, এমনকি বছরে একবারের সীমা পার করলেও।
রাজস্ব আদায় বাড়াতে বিত্তবানদের ওপর বাড়তি কর আরোপের পরিকল্পনা করছে এনবিআর। ১৬ লাখ টাকার বেশি বার্ষিক আয়ের ক্ষেত্রে ব্যক্তি পর্যায়ের করহার ২৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৩০ শতাংশ করা হচ্ছে। বিভিন্ন খাতে কর অব্যাহতি হ্রাস এবং শেয়ারবাজারের বিনিয়োগ থেকে মূলধনি আয়ের ওপর কর ছাড় প্রত্যাহারের পরিকল্পনাও রয়েছে।
ম্যাঙ্গো বার ও জুস, তেঁতুলের জুস, পেয়ারার জুস, আনারসের জুস ইত্যাদি উৎপাদনে ভ্যাটের হার ৫ শতাংশ থেকে ১৫ শতাংশ করার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। রাজধানী ঢাকাসহ বড় বড় শহরে বাসাবাড়ি, অফিস, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন খাতে নিরাপত্তাসেবা প্রায় অপরিহার্য হয়ে উঠেছে। এখন এ ধরনের নিরাপত্তাসেবা নিলে ১০ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাট দিতে হয়। আগামী বাজেটে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করার পরিকল্পনা করছে এনবিআর।
মোবাইল কোর্টসহ যেসব খাতে সরকার জরিমানা ও দণ্ড আরোপ করে, সেগুলোর পরিমাণও বাড়ানোর চিন্তা করছে সরকার। এ ছাড়া উড়াল সড়ক, এক্সপ্রেসওয়েসহ বিভিন্ন সেতু পারাপারের টোল, সেবা ও প্রশাসনিক মাশুল বাড়ানো হতে পারে।
শূন্য শুল্কের অর্ধশতাধিক পণ্যে আগামী অর্থবছর থেকে ১ শতাংশ হারে আমদানি শুল্ক আরোপ হতে পারে। বর্তমানে আমদানিতে কোনো শুল্ক নেই– এমন পণ্যের সংখ্যা ৩২৯টি। এ তালিকায় আছে খাদ্যপণ্য, সার, গ্যাস, ওষুধশিল্পের কাঁচামাল, কৃষি উপকরণ ইত্যাদি। যেসব পণ্যে ১ শতাংশ আমদানি শুল্ক বসানোর চিন্তা করা হচ্ছে, তার মধ্যে রয়েছে– গম, ভুট্টা, সরিষা বীজ, তুলা বীজ, বিভিন্ন শাকসবজির বীজ, কয়লা, জিপসাম, ভিটামিন, পেনিসিলিন, ইনসুলিন, বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক, প্লাস্টিক কয়েল, পেপার বোর্ড, স্টিল জাতীয় পণ্য, শিল্পের কাঁচামাল, যন্ত্রপাতি-যন্ত্রাংশ ইত্যাদি। শুল্ক আরোপের ফলে এসব পণ্যের জন্য মানুষকে বর্তমানের চেয়ে বাড়তি খরচ করতে হতে পারে।
এমআই