তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান ইক্সোরা অ্যাপারেলস লিমিটেডের বিরুদ্ধে শ্রমিকদের বেতন পরিশোধ না করার অভিযোগ উঠেছে। জানা গেছে, কোম্পানিটির আশুলিয়া গার্মেন্টেসে কর্মরত শ্রমিকদের গত দুই মাসের বেতন পরিশোধ করা হয়নি। বকেয়া বেতনের দাবিতে গতকাল শ্রমিকেরা বিক্ষোভও করেছেন।
যদিও এ তথ্যকে মিথ্যা বলে দাবি করছেন প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পর্ষদ। তারা বলছেন, লোকসানে পড়ে যাওয়ায় গত মে মাসে সাভারের আশুলিয়ার কারখানাটি বন্ধ করে দেয় ইক্সোরা অ্যাপারেলস লিমিটেড। তাতে কারখানায় কাজ করা শ্রমিকদের গত এপ্রিল মাস পর্যন্ত বেতন পরিশোধ করে দেওয়া হয়। ফলে কোম্পানি থেকে শ্রমিকদের কোন বকেয়া বেতন পাওনা নেই।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইক্সোরা অ্যাপারেলসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও এনায়েতুল ইসলাম অর্থসংবাদকে বলেন, শ্রমিকেরা আমাদের থেকে বকেয়া বেতন পাবে- এটা সম্পূর্ন মিথ্যা ও ভুল। লোকসানের ঝুঁকিতে পড়ে যাওয়ায় গত এপ্রিলেই মে অ্যাপারেলস বন্ধ করে দেয় ম্যানেজমেন্ট। শ্রমিকদের এপ্রিল পর্যন্ত বেতন পরিশোধ করা হয়েছে। যেহেতু তারা মে মাসে কাজ করে নাই বলে শুনেছি, সুতরাং তারা কোম্পানি থেকে কোন টাকা পাওনা নেই।
শ্রমিকদের আন্দোলন নিয়ে তিনি বলেন, শ্রমিকেরা বেতনের দাবিতে গতকাল আন্দোলন করেছে বলে শুনেছি। সাধারণত একটি মাসের বেতন পরের মাসের ১০ তারিখের মধ্যে পরিশোধ করা হয়। শ্রমিকেরা সেখানে ৮ তারিখের মধ্যে মে মাসের বেতন পরিশোধের দাবি করছেন। একইসাথে তারা কিছু শ্রমিক নেতার ইন্ধনে জুনের বেতনও দাবি করছেন। কারখানা বন্ধ থাকার পর কোন কাজ না করে বেতনের দাবি করা এটা অন্যায়। পৃথিবীর কোন জায়গায় এমনটা নেই।
এনায়েতুল ইসলাম জানান, ইক্সোরা অ্যাপারেলসের আশুলিয়ার কারখানাটি এখনো বন্ধ রয়েছে। তবুও শ্রমিকদের সুবিধার্থে মে মাসের ১০ দিনের বেতন প্রদান করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইক্সোরার ব্যবস্থাপনা পর্ষদ। চলতি জুন মাসের ১০ তারিখের মধ্যেই সবার পাওনা পরিশোধ করা হবে।
এর আগে ইক্সোরা অ্যাপারেলসের বিরুদ্ধে বিদেশে অর্থপাচার ও ঋণ পরিশোধে গড়িমসি করার অভিযোগ উঠে। দুদকের তদন্ত অনুসারে, ইক্সোরা অ্যাপারেলস ২০১৮ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে পাঁচ কোটি ৯৭ লাখ টাকার পোশাকের ১২টি চালান যুক্তরাজ্যে পাঠিয়েছে। কিন্তু এ বাবদ রপ্তানি আয় দেশে আনেনি।
এছাড়া এনআরবিসি ব্যাংকের ১৯তম বৃহত্তম ঋণগ্রহীতা হিসেবে নাম লিখিয়েছে ইক্সোরা অ্যাপারেলস। কিন্তু কোম্পানিটি মোট ঋণের মধ্যে ১১৯ কোটি টাকা ২০২৭ ও ২০২৮ সাল পর্যন্ত পুনঃতফশিল করিয়ে নিয়েছে। পাশাপাশি সময়মতো কিস্তি পরিশোধ না করায় কোম্পানিটির অতিরিক্ত বকেয়া দাঁড়িয়েছে প্রায় ছয় কোটি টাকায়। এতে কোম্পানি পর্যায়ক্রমে খেলাপির দিকে ধুঁকছে।