‘নৌ নিরাপত্তা সপ্তাহ-২০২৪’ শুরু হচ্ছে আজ থেকে। নৌপথের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা ও সচেতনতা বাড়াতে প্রতি বছর নৌ নিরাপত্তা সপ্তাহ পালন করা হয়। এবারের প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে ‘দূষণমুক্ত নদী ও নিরাপদ নৌযান, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে রাখবে অবদান’। নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী আজ মঙ্গলবার রাজধানীর বাংলাদেশ শিশু একাডেমি মিলনায়তনে ‘নৌ নিরাপত্তা সপ্তাহ এর উদ্বোধন করবেন।
জানা গেছে, গত ১০ বছরে নৌ পরিবহন খাতের অনেক উন্নয়ন হয়েছে। নৌপথের সংরক্ষণ ও নৌ পরিবহন ব্যবস্থা উন্নয়নে আরো অনেক উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। নৌ-যোগাযোগের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ভৌগলিক অবস্থানকে কাজে লাগিয়ে আন্তর্জাতিক পরিবহন নেটওয়ার্কে যুক্ত হওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে। সব নদী দখলমুক্ত করা এবং নদীর নাব্য ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। কক্সবাজার, সেন্টমার্টিন ও কুতুবদিয়ায় অবস্থিত লাইট হাউজগুলো আধুনিকীকরণ এবং দক্ষিণাঞ্চলের নিঝুম দ্বীপ, ঢালচর, দুবলারচর ও কুয়াকাটায় নতুন লাইটহাউজ ও কোস্টাল রেডিও স্টেশন স্থাপনের কাজ চলছে। কিন্তু তারপরও অভ্যন্তরীণ নৌপথের নিরাপত্তা নিশ্চিত হচ্ছে না। প্রাই ঘটছে নৌদুর্ঘটনা। যাত্রী বহনে বড় লঞ্চগুলোতে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নানান কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হয়েছে। বয়া-বাতি নিশ্চিত করা হয়েছে। জিপিএস সিস্টেম সব লঞ্চে সক্রিয় রয়েছে। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হয়। আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করা হয়েছে। কিন্তু ছোট নৌযানগুলোতে এসবের কমতি রয়েছে।
এখনো ছোট-বড় মালবাহী এবং যাত্রীবাহী ট্রলার ও নৌকা, ইঞ্জিন বোটে নদী পারাপার করা হয়। অধিকাংশ নৌযানে কোনো নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেই, নিরাপত্তা নীতিমালাও মানা হচ্ছে না। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নদীবন্দর কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন সময় অভিযান চালানো ও জরিমানা আদায় করেই দায়িত্ব শেষ করে। অনেক দুর্ঘটনা ঘটলেও নৌযান চালক-শ্রমিক ও যাত্রীদের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে পারেনি। বিদ্যমান আইন পুরোপুরি প্রয়োগ করা, আইনের আধুনিকায়ন ও সঠিক তদারকি নিশ্চিত করতে পারলে নৌ নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীন মাতৃভূমির দায়িত্ব হাতে নিয়েই নদীমাতৃক বাংলাদেশের নৌচলাচল ব্যবস্থার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। নদী খননের মাধ্যমে নাব্য ফিরিয়ে আনার জন্য ৭টি ড্রেজার আমদানির মতো সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত নেন।
দেশের নৌপথে অপার সম্ভাবনাকে সুষ্ঠু পরিকল্পনার মাধ্যমে নির্ভরযোগ্য করে তুলতে হবে। আইন সংশোধন করে ছোট নৌযানগুলোকে আইনের আওতায় আনার পাশাপাশি সঠিক তদারকি অব্যাহত রাখতে পারলে নৌ নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে।