সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশের তরুণদের মাঝেও স্বল্প-দৈর্ঘ্যের ভিডিও তৈরি ও শেয়ার করার জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টিকটক অত্যন্ত জনপ্রিয়। প্রতিদিনকার জীবনের বিশেষ মুহূর্ত, অভিজ্ঞতা, সৃজনশীলতাকে ধারণ করে ছোট-ছোট ভিডিওর মাধ্যমে আনন্দ, জ্ঞান, সৃষ্টিশীলতাকে ছড়িয়ে দেয়ার এই প্ল্যাটফর্মটিকে অনেকেই বলছেন সামাজিক যোগাযোগের ‘নেক্সট বিগ থিং’। তাই দেশেও এর জনপ্রিয়তা এবং তরুণসমাজের বড়সংখ্যক ব্যবহারকারীদের কথা মাথায় রেখে বিকাশের উদ্যোগে এবার টিকটকে প্রচারিত হলো রোমান্টিকধর্মী বিনোদন ও সচেতনাতামূলক স্বল্পদৈর্ঘ্যের সিরিজ নাটক ‘প্রেমের বিকাশ’। দুই থেকে আড়াই মিনিট দৈর্ঘ্যের একেকটি পর্ব নিয়ে মোট ৩১টি পর্বে প্রেম-ভালবাসা, বিরহ-দ্বন্দ-বন্ধুত্বের আবহে নির্মিত পুরো সিরিজটি দারুণভাবে সাড়া ফেলেছে তরুণ টিকটক ব্যবহারকারীদের মধ্যে।
টিকটক ইনফ্লুয়েন্সার মিরাজ খান ও আরোহী মিম এ নাটকে কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছেন। এছাড়া নাটকে অন্যান্য অনেক চরিত্রে বিভিন্ন টিকটক সেলিব্রটিরা অভিনয় করেছেন। টিকটকের পরিচিত মুখ নিয়েই এ নাটক নির্মিত হয়েছে বলে দর্শকের কাছে জনপ্রিয়তা বেড়েছে আরও অনেক গুণে। নাটকের প্লট ও অভিনয় নিয়ে ইতিবাচক সাড়া মিলেছে প্রত্যেকটি পর্বের কমেন্ট সেকশনে। পাশাপাশি, দারুণ ট্রেন্ডি এই উদ্যোগটির মাধ্যমে বিকাশের সেবাগুলোকে মানুষের কাছে আকর্ষণীয়ভাবে উপস্খাপন করার কৌশলকে সাধুবাদ জানিয়েছেন অনেকেই।
নতুন এই সিরিজের অভিজ্ঞতা শেয়ার করার সময় আরোহী মিম বলেন, “কাজটার কল পাওয়ার পর থেকেই আমি বেশ দ্বিধায় ভুগছিলাম, আবার এক ধরনের এক্সাইটমেন্টও কাজ করছিলো। আমি যে ধরনের কাজ করেছি তার থেকে অনেকটাই ডিফারেন্ট। তবে ফরিদপুরে শুটিংয়ের সময় সেখানকার মানুষজনের কাছে নিজের এক্সেপটেন্স দেখে আমার সম্পূর্ন ভয় কেটে যায়। যেহেতু আমি মানুষের আনন্দের জন্য কাজ করি, মানুষ আমাকে গ্রহণ করছে দেখলে ভালোই লাগে। এমন একটা সুন্দর কাজের অংশ করার জন্য আমি রুবায়েত ভাই সহ বিগফিশ টিম ও বিকাশের কাছে কৃতজ্ঞ!”
এই সিরিজেই অভিনয় করা আর এক শিল্পী মিরাজ খান তার অভিজ্ঞতা শেয়ার করে বলেন, “একটা ভালো টিমের সাথে ভালো কাজ করার অভিজ্ঞতা সব সময়ই ভালো হয়। বিগফিশ এন্টার্টেইনমেন্ট কিংবা বিকাশের সাথে এটা আমার প্রথম কাজ ছিলো। প্রথম প্রথম মনে হয়েছিলো মানিয়ে নেয়াটা চাপের হবে, কিন্তু পুরো টিমটাই এতো বেশি প্রফেশনাল ও আন্তরিক যে পুরো সময়টা জুড়েই আমার কাছে চিরচেনা একটা টিম মনে হয়েছে। পুরো সময়টা আমি বেশ উপভোগ করেছি, নতুন অনেক কিছু শিখেছি, যা নিঃসন্দেহে আমাকে পরবর্তী সময়গুলোতে সাহায্য করবে।”
ইউটিউব, ফেসবুকের এই সময়ে টিকটকে নাটক কেন? এই প্রশ্ন অনেকেরই মনে হয়তো এসেছে। গত কয়েক দশকে মানুষের মনোযোগ সীমা আশঙ্কাজনক হারে কমে গেছে। মাইক্রোসফটের এক গবেষণা থেকে জানা গেছে যে, মানুষ গড়ে মাত্র আট সেকেন্ড এক জায়গায় মনোযোগ ধরে রাখতে পারে। ফলে জিজিটাল কন্টেন্ট তৈরিতেও এর প্রভাব পড়েছে। তাই দর্শক দীর্ঘ কন্টেন্টের বদলে কয়েক মিনিটের কন্টেন্টে বেশি আগ্রহী হয়েছেন। টিকটক তাই তরুণ সমাজের কাছে জনপ্রিয় হয়েছে। কারণ, এই প্লাটফর্ম শুরুতেই জানিয়ে দিচ্ছে যে তার ভিডিওর দৈর্ঘ্য ছোট।
টিকটকের জন্য সিরিজ নির্মাণের কোনো পুর্ব অভিজ্ঞতা না থাকাই সেই জার্নিটাও ছিলো বেশ ইন্টারেস্টিং। সেই জার্নির অভিজ্ঞতা শেয়ার করে রুবায়েত মাহমুদ বলেন, “টিকটক নিঃস্বন্দেহে বর্তমান সময়ে একটি জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্ম। তবে নতুন প্ল্যাটফর্মের জন্য কোনো ভিডিও তৈরি করা সব সময়ই চ্যালেঞ্জের হয়। ভার্টিক্যাল রেশিওতে শ্যুট করা, সঠিক ইফেক্ট ইউজ করা, সঠিক এডিটিং সফটওয়্যার ঠিক করা আরও কতো কিছু। সবচেয়ে বেশি চ্যালেঞ্জের ছিল নিজেদের কম্ফোর্ট জোন থেকে বের হয়ে ছোট ডিউরেশনের ভিডিও তৈরি করা। এগুলো নিয়ে বেশ দ্বিধা, দ্বন্দের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে আমাদের। সবশেষে এই কাজটা যেহেতু একদম নতুন ছিলো, সে জায়গা থেকে আমরা বেশ উপভোগ করেছি। আর রিলিজ হওয়ার পর মানুষ এটাকে স্বাদরে গ্রহণ করছে দেখে আরও ভালো লাগছে।”
টিকটককে এ নাটকের প্লাটফর্ম হিসেবে বেঁছে নেয়ায় এর ব্যবহারকারীরা যেমন পছন্দের সেলিব্রেটিদের অভিনয় দেখতে পেরেছেন, তেমনি জানতে পেরেছেন বিকাশ -এর দারুণ সব আর্থিক সেবাগুলোকে। ফলে, বিনোদনের পাশপাশি সহজ, নিরাপদ ডিজিটাল সেবাগুলো ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ করার মাধ্যমে এই সিরিজ নাটকটি ভবিষ্যতের একটি ক্যাশলেস সমাজ বাস্তবায়নেও ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন নির্মাতারা। ৩ কোটিরও বেশি মানুষের কাছে ছড়িয়ে পড়া সিরিজটি সাড়ে ৫ কোটিরও বেশি বার দেখা হয়েছে যেখানে ২৬ লাখেরও বেশি দর্শক লাইক-কমেন্ট করে নিজেদের অনুভূতি প্রকাশ করেছেন। আগ্রহী দর্শকরা টিকটক ও ইউটিউব থেকে সিরিজটি দেখতে পারবেন।
এমআই