ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আনোয়ারুল আজীম আনার হত্যার ঘটনায় গুরুত্বপূর্ণ তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনার পর দেশে ফিরছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) প্রতিনিধি দল।
ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদের নেতৃত্বে দলে আরও দুই সদস্য রয়েছেন। তারা হলেন- ওয়ারী বিভাগের ডিসি মো. আব্দুল আহাদ ও এডিসি শাহীদুর রহমান।
রবিবার (২৬ মে) সকাল ১০টার একটি ফ্লাইটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে কলকাতায় যায় প্রতিনিধি দলটি। টানা চারদিন ভারতীয় পুলিশের সঙ্গে তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করে বৃহস্পতিবার (৩০ মে) দুপুরে তারা দেশে ফিরবে।
ডিবির তদন্ত কর্মকর্তারা জানান, ঢাকায় গ্রেফতার হওয়া আমানুল্লাহ আমান ওরফে শিমুল ভুঁইয়াকে জিজ্ঞাসাবাদে অনেক চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে। সেসব তথ্য যাচাই-বাছাইয়ের জন্য ও কলকাতার তদন্ত দলকে সহযোগিতা করার জন্য কলকাতায় যায় ডিবির প্রতিনিধি দল।
প্রতিনিধি দলে থাকা ডিসি মো. আ. আহাদ বলেন, আমাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ও অনুরোধে ২৮ মে রাতে কলকাতার সঞ্জীবা গার্ডেনের সেপটিক ট্যাংক ভেঙে তিন থেকে চার কেজি মাংসের টুকরো উদ্ধার করে কলকাতা পুলিশ।
জানতে চাইলে ডিবিপ্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, আমরা বাংলাদেশ থেকে আসার পরেই যে ফ্ল্যাটে হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে সেটা পরিদর্শন করি। এরপর আমরা কলকাতার সিআইডিকে অনুরোধ করি যে বাড়িটির স্যুয়ারেজ লাইন দেখা দরকার। সিআইডি খুব আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করছে। বাংলাদেশে গ্রেফতার হওয়া ঘাতকদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য দিয়ে আমরা সিআইডিকে সহযোগিতা করছি।
হারুন আরও বলেন, সেপটিক ট্যাংক থেকে বেশকিছু মাংসের টুকরো উদ্ধার করা হয়েছে। এই মাংসগুলোকে ফরেনসিকের জন্য রাখা হবে। পাশাপাশি ডিএনএ টেস্টও করা হবে। তারপরে বলা যাবে, এগুলো সংসদ সদস্যের কি না।
গত ১২ মে চিকিৎসার জন্য ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ থেকে চুয়াডাঙ্গার দর্শনার গেদে সীমান্ত দিয়ে ভারতে যান এমপি আনার। ওঠেন পশ্চিমবঙ্গে বরাহনগর থানার মণ্ডলপাড়া লেনের গোপাল বিশ্বাস নামে এক বন্ধুর বাড়িতে। পরদিন ডাক্তার দেখানোর কথা বলে বাড়ি থেকে বের হন। এরপর থেকেই রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ আনোয়ারুল আজীম।
বাড়ি থেকে বেরোনোর পাঁচদিন পরে গত ১৮ মে বরাহনগর থানায় আনোয়ারুল আজীম নিখোঁজের বিষয়ে একটি জিডি করেন বন্ধু গোপাল বিশ্বাস। এরপরও খোঁজ মেলে না তিনবারের এই সংসদ সদস্যের। বুধবার (২২ মে) হঠাৎ খবর ছড়ায়, কলকাতার পার্শ্ববর্তী নিউটাউন এলাকায় বহুতল সঞ্জীবা গার্ডেনস নামে একটি আবাসিক ভবনের বিইউ ৫৬ নম্বর রুমে আনোয়ারুল আজীম খুন হয়েছেন। ঘরের ভেতর পাওয়া গেছে রক্তের ছাপ।