বিলিয়নিয়ার হওয়া বেশিরভাগ মানুষের আজন্ম স্বপ্ন। কেউ নিজের চেষ্টায়, মেধাকে কাজে লাগিয়ে সে স্বপ্ন পূরন করে। আবার কারো স্বপ্ন রয়ে যায় স্বপ্ন হয়েই। তারপরেও,একসময় খুব সাধারণ ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে উঠে এসেই কিন্তু মানুষ ধনরাশির মালিক হচ্ছে। আমরা যদি বিলিয়নিয়ারদের জীবনকাহিনী পড়ি, দেখা যাবে অত্যন্ত কম বয়সেই তাঁদের মধ্যে কিছু বিশেষ বৈশিষ্ট্য ছিল, যার বদৌলতে তাঁরা জীবনযুদ্ধে জিতে গেছেন। এমন সব বৈশিষ্ট্য পর্যালোচনা করে ফোর্বস আর হার্ভার্ড বিজনেস রিভিউয়ের বিভিন্ন প্রতিবেদনে কিছু লক্ষণের কথা বলা হচ্ছে, যা ভবিষ্যৎ বিলিয়নিয়ারদের মধ্যে কম বয়সেই দেখা যায়। এই লক্ষণগুলোর সবই যদি আপনার মধ্যে থাকে, এ কথা বলাই যায়, আপনি একজন বিলিয়নিয়ার হবেন। এ চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যগুলো আপনার ধনকুবের হবার সম্ভাবনাকে বাড়িয়ে দেবে অবশ্যম্ভাবীভাবে। এবার জেনে নিন এমন ৮টি লক্ষণের কথা।
১. আপনি কম বয়সেই অর্থ উপার্জন শুরু করেছেন
বিলিয়নিয়ারদের মধ্যে একটা সাধারণ লক্ষণ দেখা যায়। তাঁরা খুব কম বয়সেই টাকা উপার্জন শুরু করে। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, ওয়ারেন বাফে মাত্র ছয় বছর বয়সে প্রতিবেশিদের কাছে গামের প্যাকেট ফেরি করতেন। ফেসবুক তথা মেটার কর্ণধার মার্ক জাকারবার্গের ছাত্রাবস্থায় উপার্জন শুরুর গল্পও সবার জানা। আজ তাঁরা একেকজন বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের সম্পত্তির মালিক।
২. টাকা জমানোর চেয়ে টাকা কামানোয় মনোযোগ বেশি আপনার
এটি অজানা নয় যে অনেক ধনীরা তাঁদের অর্থ নিয়ে মিতব্যয়ী হয়ে থাকেন। তাঁরা বিচক্ষণতার সঙ্গে সঞ্চয় ও ব্যয় করার ক্ষেত্রে দক্ষ। তবে তাঁরা এও জানেন যে আরও অর্থ উপার্জন করার সর্বোত্তম উপায় হলো, তাঁরা যা উপার্জন করেন, তার কিছু অংশ বিনিয়োগ করা। আপনিও যদি শুধু টাকা না জমিয়ে বিভিন্ন অভিনব উপায়ে আয়ের ক্ষেত্রে মনোযোগী হন তবে আপনাকে অভিনন্দন, আপনার মধ্যে ভবিষ্যত বিলিয়নিয়ার হওয়ার সম্ভাবনা লুকায় আছে।
৩. আপনি সঠিক সঙ্গী ও মেন্টর নির্বাচন করেছেন
এটি অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই যে আপনি কতটা সফল হবেন এটা অনেকটা নির্ভর করে আপনি কাদের সাথে মিশছেন, তার ওপরে। আপনি যদি আপনার বেশিরভাগ সময় নেতিবাচক চিন্তার অধিকারী বা সফলতার জন্য তাড়া নেই, এমন লোকদের সঙ্গে কাটান, তাহলে কি আপনি আদৌ সফল হতে পারবেন? অন্য কথায়, আপনি যদি সম্পদশালী হতে চান, তাহলে ধনী ও সফল ব্যক্তিদের সঙ্গে মিশতে হবে। সেই সঙ্গে জীবনে লক্ষ্য আছে, উদ্যমী, পরিশ্রমী এমন মানুষদের সঙ্গে চলাফেরা করুন। এটি আপনাকে শুধু অনুপ্রেরণাই দেবে না, বরং একজন ভালো মেন্টর খুঁজে বের করতেও সাহায্য করবে।
৪.অতীত নিয়ে পড়ে থাকেন না আপনি
সোনালী অতীত নিয়ে লম্বা ভাষণ দেওয়া রাজনীতিবিদদের মানায়। কিন্তু বিলিয়নিয়ার হতে চাইলে অতীত নিয়ে পড়ে থাকলে চলবে না। ইতিহাস বলে, যারা ব্যর্থতা থেকে ঘুরে দাঁডিয়েছে, ভয় ও প্রত্যাখ্যানকে জয় করে সামনে এগিয়ে গেছে, তারাই তাদের শক্তিকে কার্যকর কিছুতে পরিণত করতে পেরেছে। আর বিলিয়নিয়ার হতে হলে এই গুণ থাকতেই হবে।
৫. আপনি আশাবাদী মানুষ
আপনি কোনো কাজের ক্ষেত্রে ঘন ঘন অন্যকে দোষারোপ করেন না বা সোজা বাংলায় ঘ্যানঘ্যান করেন না। বরং নতুন চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করে তা জয় করতে তৎপর থাকেন। একবার না পারিলে দেখ শতবার শুধু নীতিকথা নয়। বাস্তব জীবনে এই কথার পথ ধরেই ওপরে উঠতে হয়। বিলিয়নিয়ার হওয়াও তেমনই এক বিষয়।
৬. আপনি অতিসংবেদনশীল নন
সারাক্ষণ অন্যরা কি ভাবল সেটা দেখার চেয়ে, নিজের লক্ষ্যের দিকে দেখা ভালো। আপনার চামড়া এজন্য কিছুটা পুরু হওয়া গুরুত্বপূর্ণ। সবার সব কথা অগ্রাহ্য করে, উড়িয়ে দিয়ে চলার মতো মানসিক দৃঢ়তা আপনাকে সাফল্যের দিকে পরিচালিত করতে পারে। এ গুণটি আপনাকে জীবনের স্ট্রেস ও চ্যালেঞ্জ কাটিয়ে উঠতে সহায়তা করবে।
৭. আপনি নিয়মিত নিজেকে ছাড়িয়ে যাচ্ছেন
আপনার শিক্ষা জীবনের উন্নত ডিগ্রী আপনাকে বিলিয়নিয়ার বানাতে পারবে না। বিল গেটস বিশ্বসেরা বিলিয়নিয়ার হলেও তিনি কলেজ ড্রপআউট ছাত্র ছিলেন। কিন্তু এটি তাঁকে দমাতে পারেনি। নিয়মিত নতুন শিক্ষা ও দক্ষতা অর্জনের মাধ্যমে নিজেকে সমৃদ্ধ করতে হবে। তবে স্কুল পালালেই আইন্সটাইন বা রবীন্দ্রনাথ হওয়া যায় না, সেটিও মনে রাখতে হবে।
৮. দৈনন্দিন খবর সম্পর্কে আপডেটেড আপনি
বিশ্বের বেশিরভাগ সফল মানুষ নিজের দিন শুরু করেন নতুন খবর পড়ার মধ্য দিয়ে। যেমন ওয়ারেন বাফে, বিল গেটস এনারা তাদের দিন শুরু করেন জনপ্রিয় পত্রিকা পড়ার মাধ্যমে। আর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম তো আছেই। নতুন কী হতে চলেছে জানলেই নিজে নতুন কিছু করার আইডিয়া ও জেদ আসবে, যা বিলিয়নিয়ার হতে হলে আপনার লাগবেই।