মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চাইলে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা খুবই জরুরি, এর কোনো বিকল্প নেই। গণতান্ত্রিক উন্নয়নমুখী বাংলাদেশ, জনগণের বাংলাদেশ গড়তে গেলে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও স্বাধীন সাংবাদিকতা চর্চার কোনো বিকল্প নেই বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত।
বৃহস্পতিবার (২৩ মে) সচিবালয়ের গণমাধ্যম কেন্দ্রে বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরাম (বিএসআরএফ)-এর প্রকাশনা ‘বিএসআরএফ বার্তা’-এর মোড়ক উন্মোচন ও বিএসআরএফ সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় অনুষ্ঠানে একথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, গণমাধ্যম যত স্বাধীনভাবে চলবে, গণমাধ্যম যত পেশাদারিত্বের সঙ্গে কাজ করবে, এ দেশে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ততো বিস্তৃত হবে। এ চেতনার পক্ষে সরকার কাজ করতে চায়। তবে একইসঙ্গে গণমাধ্যমের স্বাধীনতাকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে যখন অপসংবাদিকতা হয় তখন শুধু দেশ, জাতি বা গণতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হয় না, পেশাদার সাংবাদিকতাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পেশাদার সাংবাদিকরা সবচেয়ে বড় ভুক্তভোগী হন। কাজেই সবার স্বার্থে সাংবাদিকতা চর্চার সুস্থ পরিবেশ তৈরি করা প্রয়োজন। এটা সরকার করতে চায়।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষের সমাজ ও দেশ তৈরি করতে গেলে গণমাধ্যমের পূর্ণাঙ্গ স্বাধীনতা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। দেশে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত হয়েছে এবং এটা এগিয়ে যাচ্ছে। দেশে অনেক গণমাধ্যম আছে বরং স্বাধীনতার জায়গাটি এমন জায়গায় চলে গেছে যে মুক্ত থেকে উন্মুক্ত হয়ে গেছে। এখন অনেক ক্ষেত্রে পেশাদার সাংবাদিকরাই বলেন গণমাধ্যমে শৃঙ্খলা আনা দরকার। সে জায়গায় সরকার কাজ করছে এবং সাংবাদিকদের পরামর্শ নিয়ে প্রতিটি জায়গায় শৃঙ্খলা আনার চেষ্টা করা হচ্ছে।
মোহাম্মদ আলী আরাফাত বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে তথ্য অধিকার আইন সংসদে পাস হয়। এটা নিশ্চিত করে যে, সরকার এবং প্রশাসন জনগণের স্বার্থে যে তথ্য প্রয়োজন সেটা দিতে বাধ্য হয়। এই আইনের মাধ্যমে সরকার নিজেকেই জবাবদিহিতায় এনেছে। এক্ষেত্রে গণমাধ্যম ও সাংবাদিকদের আরও ক্ষমতায়ন হয়েছে। তবে এ আইন যে সাংবাদিকদের ক্ষমতায়ন করেছে সেটি অনেক ক্ষেত্রে অনুধাবনের অভাব থাকে। আবার সরকারি জায়গা থেকে যাদের তথ্য দেওয়ার বাধ্যবাধকতা আছে তাদের দিক থেকেও কিছু সীমাবদ্ধতা থাকে, তথ্য না দেওয়ার দৃষ্টিভঙ্গি থাকে। সেদিক থেকে দুই পক্ষের কিছু দৃষ্টিভঙ্গির উন্নয়নের প্রয়োজন আছে। এই আইন যে অধিকার দিয়েছে, সেটা জানা, বোঝা ও সঠিকভাবে প্রয়োগের জন্য সাংবাদিকদের প্রশিক্ষণ কর্মশালার ব্যবস্থা নেয়া হবে। একইসঙ্গে সরকারি কর্মকর্তাদের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনের জন্যও কাজ করা হচ্ছে।
তথ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, বিশ্বব্যাপী এক ধরনের অপতথ্যের প্রচার হচ্ছে। বাংলাদেশের মান-মর্যাদা এবং ইমেজ বিনষ্ট করার জন্য পরিকল্পিতভাবে কিছু কাজ হচ্ছে। এছাড়া দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র বাংলাদেশের বিপক্ষে নতুন নয়। এর আগেও হয়েছে, এখনও হচ্ছে।
এ বিষয়ে তিনি আরও বলেন, গণমাধ্যম হয়ে গণমাধ্যমকে শ্রেণিবিভাগ করে ব্র্যান্ড করলে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা খর্ব হয়। পছন্দ হলে গণমাধ্যম ঠিক আছে, পছন্দ না হলে গণমাধ্যম প্রো গভর্নমেন্ট বা এন্টি গভর্নমেন্ট, এ মানসিকতা থাকা কোনভাবেই সঠিক নয়। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে এবং তার একটি দায়বদ্ধতাও থাকতে হবে। কোনো গণমাধ্যম যদি অপতথ্য ছড়ায়, তার দায়বদ্ধতাও নিশ্চিত করতে হবে। সরকারের চোখ হয়ে কাজ করে গণমাধ্যম। গণমাধ্যম সরকারের ব্যর্থতা-বিচ্যুতি তুলে ধরে সরকারের উপকার করে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর সরকার এটিকে স্বাগত জানায়।
কাফি