আন্তর্জাতিক বাজারে স্বর্ণের দাম কমেছে। সোমবার স্পট মার্কেটে রেকর্ড সর্বোচ্চে পৌঁছেছিল এ পণ্যের দাম। সোমবার স্পট মার্কেটে রেকর্ড সর্বোচ্চে পৌঁছার পর থেকেই বিক্রয়প্রবণতা বেড়ে নিম্নমুখী হয়ে উঠেছে পণ্যটির বাজার। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভের (ফেড) নীতিনির্ধারকরা সুদহার কমানোর বিষয়ে সতর্কপন্থা অবলম্বন করায় স্বর্ণের দাম আগের দিনের তুলনায় কিছুটা কমেছে।
স্পট মার্কেটে গতকাল স্বর্ণের দাম আগের দিনের তুলনায় দশমিক ৩ শতাংশ কমেছে। আউন্সপ্রতি এর মূল্য দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৪২১ ডলার ৭০ সেন্টে। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের ফিউচার মার্কেটে স্বর্ণের দাম দশমিক ৭ শতাংশ কমেছে। গতকাল প্রতি আউন্স স্বর্ণ কেনাবেচা হয়েছে ২ হাজার ৪২১ ডলার ৭০ সেন্টে। সোমবার স্পট মার্কেটে আউন্সপ্রতি স্বর্ণের দাম ছিল ২ হাজার ৪৪৯ ডলার ৮৯ সেন্ট।
এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের আর্থিক পরিষেবা সংস্থা স্টোনএক্স বিশ্লেষক রোনা ও’কনেল বলেন, সাম্প্রতিক ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা, ব্যাংকিং সমস্যাসহ আরো নানা সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে বিশ্ব। এছাড়া এ বছরজুড়েই চলছে বিভিন্ন দেশের নির্বাচন। এমন পরিস্থিতিতে বৈশ্বিক বাজারে স্বর্ণের দামে উত্থান-পতন অনিবার্য।
রোনা ও’কনেল আরো জানান, স্বর্ণের বাজারে নতুন বিনিয়োগকারীরা এরই মধ্যে অংশ নিয়েছেন। এ বাজারে আরো বেশি বিনিয়োগকারী যোগ দেয়ার সম্ভাবনা আছে। বিভিন্ন ভূরাজনৈতিক ঘটনা ও মূল্যপতনের কারণে স্বর্ণের বাজার একটি আকর্ষণীয় বিনিয়োগ খাত হয়ে উঠেছে।
আন্তর্জাতিক বাজারে স্বর্ণের দাম বেশ কিছুদিন ধরেই ঊর্ধ্বমুখী ছিল। ফেড সুদহার কমাতে পারে এ প্রত্যাশায় আন্তর্জাতিক বাজারে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা ধরে রেখেছিল আন্তর্জাতিক স্বর্ণের বাজার।
শিগগিরই যুক্তরাষ্ট্রের ভোক্তা মূল্যস্ফীতির ডাটা প্রকাশ করার কথা। মূল্যস্ফীতির তথ্যের ওপর নির্ভর করছে ফেডারেল রিজার্ভের সুদহার কমানোর এ সিদ্ধান্ত। আর ফেডারেল রিজার্ভ চলতি বছর সুদহার কমাতে পারে এমন প্রত্যাশা করছেন স্বর্ণের বাজারে বিনিয়োগকারীরা। এ কারণেই গতকাল স্বর্ণের দাম বেড়েছিল। যদিও দাম বাড়ার পর ফেড নীতিনির্ধারকরা সুদহার কমানোর বিষয়ে সতর্কপন্থা অবলম্বন করছেন।
রয়টার্সের এক জরিপ অনুযায়ী, এপ্রিলে যুক্তরাষ্ট্রের মূল্যস্ফীতি দশমিক ৩ শতাংশ বেড়েছে। আগের মাসে এ পরিমাণ ছিল দশমিক ৪ শতাংশ। যুক্তরাষ্ট্রে এ মূল্যস্ফীতি চলতি বছর অব্যাহত থাকবে বলে ধারণা করছেন যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভের চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েল। তবে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুদহার আরো বাড়াতে পারে, এমন কোনো সম্ভাবনা নেই বলেও জানিয়েছেন তিনি।
এদিকে স্পট মার্কেটে রুপার দামও গতকাল দশমিক ৬ শতাংশ কমেছে। আউন্সপ্রতি পণ্যটির মূল্য দাঁড়িয়েছে ৩১ ডলার ৬৪ সেন্টে। এ বিষয়ে আর্থিক পরিষেবা সংস্থা এএনজি কমোডিটি স্ট্র্যাটেজিক সোনি কামারী বলেন, ‘শিল্প খাতে ক্রমবর্ধমান হারে রুপার চাহিদা বাড়ছে। স্বর্ণের তুলনায় রুপার দাম কম হওয়ায় এ খাত বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করছে।’
স্পট মার্কেটে গতকাল প্লাটিনামের দামও আগের দিনের তুলনায় ১ দশমিক ৪ শতাংশ কমেছে। আউন্সপ্রতি প্লাটিনামের মূল্য দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৩২ ডলার ৩০ সেন্টে। অন্যাদিকে প্যালাডিয়ামের দাম দশমিক ৫ শতাংশ কমে ১ হাজার ২১ ডলার ৭৭ সেন্টে নেমেছে।