আইএমএফের ঋণ কর্মসূচির আওতায় করছাড় কমাতে উঠে পড়ে লেগেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বা এনবিআর। কর অব্যাহতি পাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোতে আগামী বাজেটেই পর্যায়ক্রমে কর আরোপ করতে চলেছে সংস্থাটি। পাশাপাশি স্বল্পহারে ভ্যাট দেওয়া ভোগ পণ্যগুলোতেও এর পরিমাণ বাড়াবে। জানা যায়, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে ফ্রিজ, এসি ও মোবাইল ফোনের ওপর ভ্যাট বাড়তে পারে। ভ্যাট বাড়তে পারে এলপি গ্যাস সিলিন্ডারেও। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র বলছে, বর্তমানে রেফ্রিজারেটর বা ফ্রিজের উৎপাদন পর্যায়ে ভ্যাটের হার ৫ শতাংশ। এ হার বেড়ে সাড়ে ৭ শতাংশ হতে পারে। মূল্য সংযোজনের পরিমাণের ওপর ভিত্তি করে মোবাইল ফোনের উৎপাদন পর্যায়ে ভ্যাটের হার ২ থেকে সাড়ে ৭ শতাংশ। এখানে কিছুটা বাড়তে পারে। মোবাইল ফোনের বিক্রয় পর্যায়ে ৫ শতাংশ ভ্যাট আছে, যা সাড়ে ৭ শতাংশ করা হতে পারে। এলপি গ্যাস সিলিন্ডারের উৎপাদন পর্যায়ে ভ্যাট সাড়ে ৭ শতাংশ, এটা কিছুটা বাড়তে পারে। উৎপাদন পর্যায়ে পুরোপুরি ভ্যাট অব্যাহতি পাচ্ছে এসি। নতুন বাজেটে এসি উৎপাদন পর্যায়ে ৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ হতে পারে।
এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম এ বিষয়ে ইঙ্গিত দিয়েছেন। গত রোববার রাজধানীর লেকশোর হোটেলে সিপিডির আয়োজনে এক সংলাপে তিনি বলেন, দেশীয় শিল্প বিকাশে স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত ফ্রিজ, এসিসহ বিভিন্ন শিল্পে ভ্যাটে ছাড় রয়েছে। একই সঙ্গে মোবাইল ফোন খাতেও ধারাবাহিকভাবে সহায়তা দেওয়া হয়েছে। এতে এসব পণ্যের বাজার এখন দেশীয় উৎপাদনকারীদের দখলে। ইতোমধ্যে এসব খাত বেশ সক্ষমতা অর্জন করেছে। তাই দেশের স্বার্থে এসব শিল্পে ক্রমান্বয়ে কর আরোপ করা হবে।
তবে ভোক্তা ও শিল্পসংশ্লিষ্টরা বলছেন, সরকার যদি মোবাইল ফোন, এলপিজি সিলিন্ডার, ফ্রিজ বা এসির ওপর ভ্যাট বাড়ায়, তাহলে দাম বাড়িয়ে ব্যবসায়ীরা সেই বোঝা ভোক্তার কাঁধেই চাপাবেন। এতে ভোক্তাদের খরচ বাড়বে। দীর্ঘ সময় ধরে বিরাজমান উচ্চ মূল্যস্ফীতিকে তা আরও তীব্র করবে।
ইলেকট্রনিকস পণ্য উৎপাদন-সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, যে কোনো পর্যায়েই কোনো কর বাড়ানো হলে বাড়তি খরচটা ভোক্তাদের ওপরেই পড়বে। তাদের আর কোনো বিকল্প থাকবে না। ইলেকট্রনিকস পণ্যকে আর বিলাসদ্রব্য হিসেবে গণ্য করা হয় না। তাই কর বাড়ানোরও যুক্তি থাকতে পারে না। বিশেষত, যখন দেশের অর্থনীতির বিবেচনায় বিদ্যমান ভ্যাটের হারই খুব বেশি।
এদিকে ঋণ কর্মসূচির আওতায় করছাড় কমাতে আইএমএফের শর্ত রয়েছে। শর্ত অনুযায়ী, ২০২৭ সালের ১ জুলাইয়ের আগে তিন ধাপে বিদ্যমান সব ধরনের করছাড় বাতিল করতে হবে।
এমআই