প্রযুক্তির অগ্রগতিতে পোশাকশিল্পে নারীরা অংশগ্রহণে পিছিয়ে পড়ছে। যেখানে ৮০ শতাংশ নারী গার্মেন্টসে কাজ করতেন সেখানে বর্তমানে তা ৫০ শতাংশে নেমে এসেছে। গার্মেন্টসে প্রযুক্তির সঙ্গে সঙ্গে নারীদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তাদের অগ্রগতিতে ভূমিকা রাখা প্রয়োজন বলে মনে করছেন বিশিষ্টজনরা।
মঙ্গলবার (১৪ মে) রাজধানীর বারিধারা এলাকার একটি হোটেলে সেন্টার ফর কমিউনিকেশন অ্যাকশন বাংলাদেশ (সি-ক্যাব)-এর উদ্যোগে আরএমজি সেক্টরে নারীদের অংশগ্রহণ শক্তিশালী করণে গণমাধ্যমের ভূমিকা শীর্ষক এক কর্মশালায় বক্তারা এসব কথা বলেন। কর্মশালায় পোশাকশিল্পে নারীর ক্ষমতায়নে গণমাধ্যমের ইতিবাচক ভূমিকা এবং কীভাবে গার্মেন্টস শিল্পের নারী শ্রমিকদের জীবন-ঘনিষ্ঠ কাহিনী গণমাধ্যমে উঠে আসতে পারে সেই বিষয়ে আলোচনা করা হয়।
দেশের বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার ১৫ জন সাংবাদিক এ কর্মশালায় অংশগ্রহণ করেন। তারা তাদের অভিজ্ঞতা থেকে এ বিষয়ে মুক্ত আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন। আলোচনায় অংশ নিয়ে সাংবাদিকরা নারী পোশাককর্মীদের নিরাপত্তা এবং মানসিক ও শারীরিক সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করার ব্যাপারে জোর দেন।
কর্মশালায় জানানো হয়, সি-ক্যাব আরও ১৪টি সহযোগী সংস্থার সঙ্গে এইচ অ্যান্ড এম ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে একযোগে নারী গার্মেন্টস কর্মীদের জীবন উন্নয়নে কাজ করে চলেছে। নারীরাও পুরুষদের মতই সমানভাবে প্রযুক্তি ও পরিচালনা বিষয়ক কাজে অংশ নিতে পারে, এই বিষয়ে কমিউনিকেশন বা যোগাযোগ-কেন্দ্রিক বিভিন্ন গণসচেতনতামূলক কাজের মাধ্যমে নারী গার্মেন্টস শ্রমিক, তাদের পরিবার, এবং কমিউনিটিতে সচেতনতা তৈরিতে সি-ক্যাব নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
সি-ক্যাবের নির্বাহী পরিচালক এবং কর্মশালার মডারেটর সৈয়দ জেইন আল-মাহমুদ বলেন, সাধারণত গার্মেন্টস সেক্টরের যেসব খবর আমরা পত্রিকায় দেখতে পাই- তাদের অধিকাংশই মজুরি আন্দোলন, রপ্তানি আয় এবং দুর্ঘটনা সম্পর্কিত। নারী পোশাকর্মীদের জীবনের গল্প, তাদের সংগ্রাম, বর্তমান ডিজিটাল যুগে চাকরি নিয়ে অনিশ্চয়তা এবং কীভাবে তারা এ পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে খাপ খাওয়াতে পারেন- এ বিষয়গুলো সাধারণত পত্রিকায় আসে না।
সৈয়দ জেইন আল-মাহমুদ সি-ক্যাব পরিচালিত গবেষণালদ্ধ প্রতিবেদনের আলোকে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তুলে ধরেন। তিনি তৈরি পোশাকশিল্প নিয়ে মিডিয়া যেভাবে প্রতিবেদন তৈরি করছে, তাতে কীভাবে ইতিবাচক পরিবর্তন আনা যায় সেই বিষয়ে আলোচনা করেন।
তিনি আরও বলেন, আমাদের হেডলাইন ভিত্তিক খবর তৈরি না করে, মানুষের গল্পগুলো তুলে আনতে হবে। নারীরা প্রযুক্তি ও পরিচালনায় এগিয়ে আসতে সক্ষম, এই বিষয়টিকে আমাদের তুলে ধরতে হবে।