গত ২০২২-২৩ অর্থবছরের তুলনায় চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের ছয়মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) মোট রাজস্ব আহরণ ১৩.৯ শতাংশ বেড়েছে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। চলতি অর্থবছর মোট রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ৪ লাখ ৯৯ হাজার ৯৯৫ কোটি টাকা।
রবিবার (৫ মে) সংসদ অধিবেশনে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকের বাজেট বাস্তবায়ন অগ্রগতি প্রতিবেদন তুলে ধরেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী।
অর্থমন্ত্রী জানান, চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে সর্বমোট রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ৪ লাখ ৯৯ হাজার ৯৯৫ কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। অর্থবছরের দ্বিতীয় প্রান্তিক (জুলাই-ডিসেম্বর) শেষে মোট ১ লাখ ৮৬ হাজার ৪৫৭ কোটি টাকা রাজস্ব আহরণ হয়েছে। যা বার্ষিক লক্ষ্যমাত্রার ৩৭.৩ শতাংশ। আর গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ১৩.৯ শতাংশ বেশি।
তিনি জানান, চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে কর রাজস্ব (এনবিআর এবং এনবিআর বহির্ভূত) আহরণের প্রবৃদ্ধি আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ১১.৩ শতাংশ এবং কর বহির্ভূত রাজস্ব (এনটিআর) আহরণের প্রবৃদ্ধি ৩৪.৬ শতাংশ। এ সময়ে কর বহির্ভূত রাজস্ব (এনটিআর) আহরণের পরিমাণ ২৪ হাজার ২৯৩ কোটি টাকা। যা চলতি অর্থবছরের বার্ষিক লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ৪৮.৬ শতাংশ। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের হিসাব অনুযায়ী, দ্বিতীয় প্রান্তিকে এনবিআরের রাজস্ব আদায় হয়েছে ১ লাখ ৬৫ হাজার ৬৩০ কোটি টাকা। যা গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ১৩.৯ শতাংশ বেশি এবং চলতি অর্থবছরের বার্ষিক লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ৩৮.৫ শতাংশ।
অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসের সরকারি ব্যয় পরিস্থিতি তুলে ধরে মন্ত্রী জানান, চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে মোট ব্যয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা (জিডিপি’র ১৫.১২ শতাংশ)। এর মধ্যে পরিচালনসহ অন্যান্য বায় ৪ লাখ ৯৮ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা (জিডিপি’র ৯.৯০ শতাংশ) এবং বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির ব্যয় ২ লাখ ৬৩ হাজার কোটি টাকা (জিডিপি’র ৫.২২ শতাংশ)।
চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের দ্বিতীয় প্রান্তিক শেষে মোট ব্যয় হয়েছে ১ লাখ ৯৪ হাজার ৮৯৮ কোটি টাকা (বাজেট বরাদ্দের ২৫.৫৮ শতাংশ)। এর মধ্যে পরিচালনসহ অন্যান্য ব্যয় ১ লাখ ৫৩ হাজার ৫৭ কোটি টাকা (বাজেট বরাদ্দের ৩০.৬৯ শতাংশ)। সার্বিকভাবে চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে গত অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসের তুলনায় মোট ব্যয় বেড়েছে ৫.৬২ শতাংশ। এছাড়া পরিচালনসহ অন্যান্য ব্যয় ১.০৯ শতাংশ বেড়েছে এবং বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি ব্যয় বেড়েছে ২৬.৩৬ শতাংশ।
বাজেট ঘাটতি প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী জানান, চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ২ লাখ ৬১ হাজার ৭৯০ কোটি টাকার বাজেট ঘাটতি প্রাক্কলন করা হয়েছে, যা প্রাক্কলিত জিডিপি’র ৫.২৩ শতাংশ। ঘাটতি অর্থায়নে বৈদেশিক সূত্র থেকে জিডিপি’র ২.০৫ শতাংশ এবং অভ্যন্তরীণ সূত্র থেকে জিডিপি’র ৩.১০ শতাংশ সংস্থানের পরিকল্পনা করা হয়েছে। চলতি অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে বাজেট ঘাটতি (অনুদান ব্যতীত) দাঁড়িয়েছে ৮ হাজার ৩৩৮ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের একই সময়ে বাজেট ঘাটতি ছিল ২০ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকা।
চলতি অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ঋণ গ্রহণ অপেক্ষা ঋণ পরিশোধের পরিমাণ ৩ হাজার ২৮৭ কোটি টাকা বেশি হয়েছে এবং বৈদেশিক উৎস থেকে নিট (অনুদানসহ) ১০ হাজার ৩৪৭ কোটি টাকার ঘাটতি অর্থায়ন করা হয়েছে বলেও জানান মন্ত্রী।