ঢাকা থেকে উত্তরবঙ্গ ও দক্ষিণবঙ্গের ট্রেন চলাচলে বর্তমানে একটিই পথ, বঙ্গবন্ধু বহুমুখী সেতু। কিন্তু সেতুর সক্ষমতা কমে যাওয়ায় মাত্র ২০ কিলোমিটার গতিতে সেতু পার হতে লেগে যায় ২৫ মিনিটের মতো। আরেকটি সমস্যা হলো, সেতুতে সিঙ্গেল ট্র্যাক থাকায় ট্রেনগুলোকে দুই পারের স্টেশনে সিগন্যালের জন্যে অপেক্ষা করতে হয়। প্রায় পাঁচ কিলোমিটার পথ পার হতে গেলে এক ঘণ্টারও বেশি সময় লেগে যায়।
এ সমস্যা সমাধানে যমুনা নদীতে বিদ্যমান বঙ্গবন্ধু সেতুর ৩০০ মিটার উজানে নির্মিত হচ্ছে ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের বঙ্গবন্ধু রেলওয়ে সেতু। দেশের বৃহত্তম এ রেলওয়ে সেতুতে থাকছে ডাবল ট্র্যাক। চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে এ সেতুর কাজ শেষ হতে যাচ্ছে।
মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) প্রকল্প পরিচালক (পিডি) আল ফাত্তাহ মো. মাসুদুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, এ রেলসেতুর কাজের ভৌত অগ্রগতি হয়েছে ৮২ শতাংশ।
জানা গেছে, নির্মাণাধীন বঙ্গবন্ধু রেলওয়ে সেতু সাধারণ ট্রেন ছাড়াও দ্রুতগতির (হাইস্পিড) ট্রেনও চালানোর উপযুক্ত করে নির্মাণ করা হচ্ছে। ফলে সেতুতে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ২৫০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চালানো যাবে। তবে শুরুতে (উদ্বোধনের এক বছর) সাধারণত ঘণ্টায় ১০০ থেকে ১২০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চলাচল করতে পারবে।
প্রকল্পের কাজ ডিসেম্বরে শেষ হলেও যাত্রী চলাচল শুরু হতে জানুয়ারি পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হতে পারে বলে ধারণা এ প্রকল্প কর্মকর্তার।
উত্তরবঙ্গের প্রধান তিন রুটের শেষ গন্তব্য পঞ্চগড়, বুড়িমারী, কুড়িগ্রাম রুটে ঢাকা থেকে স্বাভাবিক শিডিউলেই ১০ ঘণ্টার বেশি সময় লেগে যায়। আর ঈদ কিংবা শিডিউল বিপর্যয় হলে বিপাকে পড়তে হয় এ রুটের যাত্রীদের।
বঙ্গবন্ধু রেলসেতু নির্মাণের ফলে এ রুটে গড়ে এক ঘণ্টা সময় বাঁচবে। শিডিউল জটিলতা তৈরি হলে ডাবল লাইন হওয়ায় এ লাইনে ক্রসিংয়ে ঘণ্টার পরে ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হবে না যাত্রীদের।
ফলে উত্তরবঙ্গের রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের ১৬ জেলা এবং খুলনা বিভাগের ১০ জেলার যাত্রীদের ভোগান্তি কমবে। যাত্রাপথে আসবে স্বস্তির ছোঁয়া।