প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় দেশের প্রত্যেক উপজেলায় নির্মাণ করছে একটি করে মিনি স্টেডিয়াম। ‘উপজেলা পর্যায়ে শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণ’ শীর্ষক প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে ৪ ধাপে। প্রথম ধাপে নির্মাণ করা হয়েছে ১২৫টি স্টেডিয়াম।
বিশাল এই প্রকল্পে যেসব উপজেলা প্রথম ধাপে স্টেডিয়াম পেয়েছে সেই উপজেলার মানুষের মুখে থাকার কথা ছিল আগে পাওয়ার তৃপ্তির হাসি। বাস্তবে হয়েছে তার উল্টো। ৪৬০ স্টেডিয়ামের মধ্যে আগে স্টেডিয়াম পাওয়া ১২৫ উপজেলা ক্রীড়া সংগঠকদের ছিল আফসোস। কারণ, প্রথম ধাপে নির্মাণ করা স্টেডিয়ামগুলো কম বাজেটের। বিল্ডিং একেবারেই সাধারণ মানের। অনেক জায়গায় কাজও হয়নি ঠিকঠাকমতো।
প্রথম ধাপের প্রকল্প শেষ করে এখন চলমান প্রকল্পের দ্বিতীয় ধাপ। দ্বিতীয় ধাপে নির্মাণ করা হবে ১৮৬টি মিনি স্টেডিয়াম। প্রথম ধাপে তৈরি করা প্রতিটি স্টেডিয়ামের বাজেট ছিল ৫২ লাখ টাকার মতো। সেখানে দ্বিতীয় ধাপের প্রতিটি স্টেডিয়ামের বাজেট ৬ কোটি টাকারও বেশি। বাজেটের এই বিশাল পার্থক্যই বলে দিচ্ছে কপাল মন্দ প্রথমে স্টেডিয়াম পাওয়া ১২৫ উপজেলার।
কথায় আছে যেমন গুড় তেমন মিষ্টি। ৬ কোটি টাকার বাজেটের স্টেডিয়ামগুলোর বিল্ডিং তিনতলা। প্রথম ১২৫ বিল্ডিং একতলা। আগেরগুলোতে গ্যালারি ছিল না। দ্বিতীয় ধাপের স্টেডিয়ামে ৩০০ ফুট করে থাকছে উন্মুক্ত গ্যালারি। এখানে তিনতলা বিল্ডিং হওয়াতে দুর্যোগের সময় প্রয়োজন হলে মানুষ আশ্রয়ও নিতে পারবে। নিচে খালি থাকলে সেখানেও দুর্যোগে মানুষ আশ্রয় নিতে পারবে। টপফ্লোরে ভিআইপিদের বসার ব্যবস্থা থাকবে।
বাজেট কম। তাই প্রথম ধাপের কাজও হয়েছে তেমন। প্রথম পর্বে নির্মিত ১২৫ স্টেডিয়াম নিয়ে আছে অনিয়মেরও নানা অভিযোগ। কোথাও খেলার মাঠ উপযোগী নয়, কোথাও বিল্ডিংয়ের ছাদ চুইয়ে পানি পড়ে। কোথাও বেঞ্চ ভেঙে গেছে। কোথাও বেঞ্চ তৈরি করা হয়েছে কম। দেওয়ার কথা আরসিসি বেঞ্চ। পরিবর্তে কোথাও কোথাও দেয়া হয়েছে প্লাস্টিকের চেয়ার।
ছেলে ও মেয়েদের জন্য আলাদা ট্রেসিংরুম থাকার কথা থাকলেও কয়েকটি স্টেডিয়ামে আছে একটা। শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম নিয়ে প্রকাশিত ৬ পর্বের ধারাবাহিক প্রতিবেদনে বিভিন্ন উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার কর্মকর্তাদের বক্তব্যে এসব অনিয়মের তথ্যই বেরিয়ে এসেছে।
প্রথম ধাপে স্টেডিয়াম পাওয়া ১২৫ উপজেলার জন্য সুসংবাদও আসছে। একতলা বিল্ডিং আর গ্যালারি ছাড়া মাঠ নিয়ে তাদের আর অতৃপ্ত থাকতে হবে না। তারাও পেয়ে যাবে দ্বিতীয় ধাপে চলমান প্রকল্পের মতো স্টেডিয়াম। দ্বিতীয় ও তৃতীয় ধাপের প্রকল্প শেষ হলে প্রথম ১২৫ উপজেলার স্টেডিয়াম উন্নতিকরণের কাজ শুরু হবে।
জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সহকারী পরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) সুকুমার সাহা বলেছেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রীই চেয়েছেন প্রথম ধাপে নির্মাণ হওয়া স্টেডিয়ামগুলো দ্বিতীয় ধাপের মতো সুন্দর করে তৈরি করে দিতে। প্রকল্পের দুটি ধাপ বাকি আছে। সব শেষ হলে ওই ১২৫ স্টেডিয়াম দ্বিতীয় পর্যায়ের মতো করে দেওয়া হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চাওয়াতেই শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণ প্রকল্প চলছে। তাঁর চাওয়া অনুযায়ীই প্রথম পর্বে নির্মাণ করা ১২৫ স্টেডিয়াম দ্বিতীয় ধাপের মতো করা হবে।’