ঈদ এসেছে দুনিয়াতে শিরনি বেহেশতী/দুষমনে আজ গলায় গলায় পাতালো ভাই দোস্তি-জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের কবিতার মতো সবাইকে আনন্দে একাকার করতে আবার এসেছে ঈদ। দীর্ঘ এক মাস রোজা পালনের পর ইসলাম ধর্মাবলম্বীরা সবচেয়ে বড় উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতর পালন করছেন আজ। ঈদ মোবারক।
মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল) সন্ধ্যায় ১৪৪৫ হিজরি সনের শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখার সংবাদ না পাওয়ার পরই চূড়ান্ত হয় ঈদের দিন। এ কারণে বুধবার সূর্য ডুবতেই ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় শুরু হয় সাক্ষাতে, মোবাইলে, এসএমএসে, ফেসবুকে, মেইলে।
আজ (বৃহস্পতিবার) সকালে সারাদেশের মুসলমানরা ঈদগাহ ও মসজিদে ঈদুল ফিতরের দুই রাকাত ওয়াজিব নামাজ আদায় করবেন। ঈদের কারণে বহুদিন পর প্রিয়জনকে কাছে পেয়ে গ্রামে থাকা পরিজনরা উচ্ছ্বাসে ভাসছেন।
নতুন পোশাক পরে ঈদের পুরো দিনই চলবে একে অপরের সঙ্গে কোলাকুলি। বেড়াতে যাবেন একে অপরের বাড়ি, করাবেন মিষ্টিমুখ। ছোটরা নতুন পোশাক পরে বড়দের কাছ থেকে সালামি আদায়ে তৎপর থাকবে সারাদিন।
ঈদের দিন সেমাই, মিষ্টান্ন, কোর্মা, পোলাও, খিচুড়িসহ নানান পদের খাবার রান্না করতে উপকরণ নিয়ে ঘরে ঘরে প্রস্তুত হয়ে আছেন গৃহিণীরা। ঘরহীন পথের মানুষটি পর্যন্ত এ দিন চেষ্টা করবেন সাধ্যমতো বিশেষ খাবার রান্নার।
প্রতি বছরের মতো এবারও দেশের সর্ববৃহৎ ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায়। রাজধানীতে জাতীয় ঈদগাহে ঈদের প্রধান জামাতে রাষ্ট্রপতি, মন্ত্রিসভার সদস্য, কূটনীতিকসহ সব স্তরের মানুষ অংশ নেবে। এছাড়া বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে ঈদের পাঁচটি জামাত অনুষ্ঠিত হবে।
ঈদের দিন আবহাওয়া দেশবাসীকে দুর্যোগে না ফেললেও একেবারে ঝামেলাহীনও হবে না বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। কয়েকটি জেলার ওপর দিয়ে বইছে তাপপ্রবাহ। সেসব জেলায় গরমে কিছুটা ম্লান হতে পারে ঈদ আনন্দ।
এদিকে পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে টানা পাঁচদিন সরকারি ছুটি চলছে। বুধবার থেকে শুরু হয়েছে ছুটি, আগামী রোববার পর্যন্ত ছুটি কাটাবেন সরকারি কর্মচারীরা। ঈদুল ফিতর উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আলাদা বাণীতে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন ও মুসলিম উম্মাহর কল্যাণ ও সমৃদ্ধি কামনা করেছেন।
শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা না যাওয়ায় সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশে বুধবার পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপিত হয়েছে। এদিকে সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে বুধবার দেশের কয়েকটি জেলার বিভিন্ন গ্রামে উদযাপন করা হয়েছে ঈদুল ফিতর।
প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে নাড়ির টানে রেল, সড়ক, ও নৌপথে রাজধানী ছেড়েছেন অসংখ্য মানুষ। তাই রাজধানী এখন অনেকটাই ফাঁকা।
ঈদ উপলক্ষে গুরুত্বপূর্ণ সরকারি আধা সরকারি ভবনসমূহে আলোকসজ্জা করা হয়েছে। ঈদের দিন দেশের বিভিন্ন হাসপাতাল, কারাগার, সরকারি শিশু সদন, সামাজিক প্রতিবন্ধী কেন্দ্র, আশ্রয়কেন্দ্র, ভবঘুরে কল্যাণ কেন্দ্র ও দুস্থ কল্যাণ কেন্দ্রে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করা হবে।