ব্রাজিলে এল নিনোর প্রভাবে আবহাওয়া পরিস্থিতি আরো খারাপ দিকে মোড় নিয়েছে। এ কারণে দেশটিতে গম ও ভুট্টা উৎপাদন পূর্বাভাস সংশোধন করে কমিয়েছে মার্কিন কৃষি বিভাগের (ইউএসডিএ) ফরেন এগ্রিকালচারাল সার্ভিস (এফএএস)।
গ্লোবাল এগ্রিকালাচারাল ইনফরমেশন নেটওয়ার্ক শীর্ষক এক প্রতিবেদনে এফএএস জানায়, ব্রাজিলে ২০২৩-২৪ বিপণন মৌসুমে ১২ কোটি ২০ লাখ টন ভুট্টা উৎপাদন হতে পারে। আগের মাসে দেয়া পূর্বাভাসে সংস্থাটি ১২ কোটি ৪০ লাখ টন উৎপাদনের কথা জানিয়েছিল। অর্থাৎ নতুন পূর্বাভাসে উৎপাদনের পরিমাণ ২০ লাখ টন কমিয়ে ধরা হয়েছে। এছাড়া গত মৌসুমের তুলনায়ও দেশটিতে ভুট্টা উৎপাদন কমবে বলে জানিয়েছে এফএএস। ওই মৌসুমে উৎপাদনের পরিমাণ ছিল ১৩ কোটি ৩৫ লাখ টন।
শস্যটির রফতানি পূর্বাভাসও কমিয়েছে সংস্থাটি। প্রতিবেদনে বলা হয়, এ মৌসুমে ব্রাজিল ৪ কোটি ৫০ লাখ টন ভুট্টা রফতানি করতে পারে, যা গত মাসে দেয়া পূর্বাভাসের তুলনায় ১৩ শতাংশ কম।
২০২২-২৩ বিপণন মৌসুমে ব্রাজিল প্রথমবারের মতো যুক্তরাষ্ট্রকে পেছনে ফেলে বিশ্বের শীর্ষ ভুট্টা রফতানিকারক দেশে পরিণত হয়েছিল। ওই সময় দেশটি বিশ্ববাজারে ৫ কোটি ৪৩ লাখ টন ভুট্টা সরবরাহ করে।
এফএএসের প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, গত বছরের তুলনায় ব্রাজিলে গম উৎপাদনও উল্লেখযোগ্য হারে কমে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ২০২২-২৩ মৌসুমে সেখানে ১ কোটি ৬ লাখ টন গম উৎপাদন হয়। কিন্তু এ মৌসুমে তা ৮২ লাখ টনে নেমে আসতে পারে।
ব্রাজিলে যে পরিমাণ গম উৎপাদন হয় তার ৮৫ শতাংশই আসে দেশটির দক্ষিণাঞ্চল থেকে। কিন্তু সম্প্রতি সেখানে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ব্যাপকভাবে বেড়েছে। অতিবৃষ্টির কারণে গম উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে বলে জানায় এফএএস। পাশাপাশি শস্যটির গুণগত মানেও নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, গত মৌসুমে ব্রাজিল ২৭ লাখ টন গম রফতানি করেছিল, যা দ্বিতীয় রেকর্ড সর্বোচ্চ। ওই সময় দেশটি ৪৭ লাখ টন আমদানি করে, যা ৩১ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। তবে এবার রফতানি কমে যেতে পারে। বিপরীতে বাড়তে পারে আমদানি।
আগামী মৌসুমে ব্রাজিলে গম ও ভুট্টা উৎপাদন ঘুরে দাঁড়াবে বলেও জানিয়েছে এফএএস। সংস্থাটির প্রাক্কলন অনুযায়ী, ২০২৪-২৫ বিপণন মৌসুমে দেশটিতে ১২ কোটি ৯০ লাখ টন ভুট্টা উৎপাদন হতে পারে। গম উৎপাদনের পরিমাণ দাঁড়াতে পারে ৯৮ লাখ টনে।