ক্যাটাগরি: আন্তর্জাতিক

ভারতে তুলা উৎপাদন-রফতানি বাড়ার সম্ভাবনা

ভারতে চলতি মৌসুমে তুলা উৎপাদন বাড়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। দেশটির স্থানীয় বাজারে ঊর্ধ্বমুখী চাহিদা কৃষকদের আবাদ বাড়াতে উৎসাহিত করছে। এ মৌসুমে পণ্যটির রফতানিও বাড়বে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। কটন অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়ার (সিএআই) এক প্রতিবেদনে সম্প্রতি এসব তথ্য উঠে আসে।

ভারতে গত বছরের অক্টোবরে তুলার ২০২৩-২৪ উৎপাদন মৌসুম শুরু হয়েছে। মৌসুমের শুরুতে ২ কোটি ৯৪ লাখ ১০ হাজার বেল (প্রতি বেলে ১৭০ কেজি) তুলা উৎপাদনের পূর্বাভাস দিয়েছিল কটন অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়া। সম্প্রতি এ পূর্বাভাস বাড়িয়ে ৩ কোটি ৯ লাখ ৭০ হাজার বেল নির্ধারণ করা হয়েছে।

বিশ্ববাজারে তুলার চাহিদা বাড়লেও সরবরাহ সংকোচনের মুখে। ফলে বছরজুড়ে পোশাক উৎপাদন খাতের কাঁচামালটির দাম ঊর্ধ্বমুখী থাকবে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ী ও বিশ্লেষকরা। ঊর্ধ্বমুখী দামের কারণেও ভারতে উৎপাদন বাড়ছে বলে মনে করছেন খাতসংশ্লিষ্টরা।

সিএআই জানায়, গত মৌসুমের অবশিষ্ট মজুদ, চলতি মৌসুমের আমদানি ও উৎপাদনসহ এবার তুলার মোট সরবরাহ দাঁড়াবে ৩ কোটি ৫৯ লাখ বেলে, যা গত বছরের তুলনায় বেশি। ওই সময় সরবরাহের ‍পরিমাণ ছিল ৩ কোটি ৫৫ লাখ ৪০ হাজার বেল।

চলতি মৌসুমের শুরুতে তুলার মজুদ ছিল ২৮ লাখ ৯০ হাজার বেল, যা গত মৌসুমে ছিল ২৪ লাখ বেল। এ মৌসুমে পণ্যটির আমদানি বেড়ে ২০ লাখ ৪০ হাজার বেলে উন্নীত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, যা গত মৌসুমে ছিল ১২ লাখ ৫০ হাজার বেল।

সিএআইয়ের প্রতিবেদনের তথ্যমতে, চলতি মৌসুমে ভারতে ৩ কোটি ১৭ লাখ বেল তুলার চাহিদা তৈরি হতে পারে। সে হিসাবে গত বছরের তুলনায় চাহিদা বাড়বে। ওই সময় চাহিদার পরিমাণ ছিল ৩ কোটি ১১ লাখ বেল। মৌসুম শেষে তুলার উদ্বৃত্ত দাঁড়াতে পারে ৪২ লাখ বেলে, যা গত মৌসুমে ছিল ৪৪ লাখ বেল। অর্থাৎ এবার উদ্বৃত্তের পরিমাণ কিছুটা কমবে।

ভারত বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ তুলা রফতানিকারক। ২০২২-২৩ মৌসুমে (অক্টোবর-সেপ্টেম্বর) সেখানে পণ্যটির রফতানি রেকর্ড সর্বনিম্নে নেমে গিয়েছিল। রফতানির পরিমাণ ছিল ১৫ লাখ ৫০ হাজার বেল (প্রতি বেলে ১৭০ কেজি)। তুলার বৈশ্বিক দামে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা অব্যাহত থাকলে চলতি মৌসুমে রফতানি উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এদিকে চলতি মৌসুমে ভারত ২২ লাখ বেল তুলা রফতানি করতে পারে বলে জানিয়েছে সিএআই।

প্রসঙ্গত, ইন্টারকন্টিনেন্টাল এক্সচেঞ্জে (আইসিই) বর্তমানে দেড় বছরের সর্বোচ্চ দামে বিক্রি হচ্ছে তুলা। ভবিষ্যতে দাম আরো বাড়ার সম্ভাবনায় বিনিয়োগকারীরা তুলার সরবরাহ চুক্তির পরিমাণ বাড়িয়ে দিয়েছেন। উদ্দেশ্য বাজার থেকে বাড়তি লাভ তুলে নেয়া। বিষয়টি সাম্প্রতিক মূল্যবৃদ্ধিতে প্রধান প্রভাবকের কাজ করেছে। পাশাপাশি পণ্যটির বলিষ্ঠ চাহিদাও মূল্যবৃদ্ধিতে সহায়তা করছে।

মার্কিন কৃষি বিভাগ (ইউএসডিএ) জানায়, চলতি বছর তুলার বৈশ্বিক উৎপাদন আগের বছরের তুলনায় তিন লাখ বেল কমে যেতে পারে। উৎপাদনের পরিমাণ দাঁড়াতে পারে ১১ কোটি ২৮ লাখ বেলে। মূলত অস্ট্রেলিয়া ও বেনিনে বিপর্যস্ত উৎপাদন বড় প্রভাব ফেলবে বৈশ্বিক উৎপাদনে। সংস্থাটির প্রাক্কলন অনুযায়ী, এ বছর তুলার বৈশ্বিক ব্যবহার দাঁড়াতে পারে ১১ কোটি ২৫ লাখ বেলে। এছাড়া বৈশ্বিক বাণিজ্য ৪ কোটি ২৯ লাখ ও সমাপনী মজুদ দাঁড়াবে ৮ কোটি ৩৭ বেলে।

শেয়ার করুন:-
শেয়ার