ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা আইন-২০২৪ প্রণয়নে চারটি বিষয়কে প্রাধান্য দেওয়া হবে। সেগুলো হচ্ছে, নিয়ন্ত্রণ, উদ্ভাবন, সম্প্রসারণ ও সমন্বয় সাধন। খসড়া প্রণয়নের বিষয়ে সুচিন্তিত মতামতের জন্য অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা সভায় এমনটিই উঠে এসেছে। তাই এআই আইনের চূড়ান্ত খসড়া প্রস্তুত করতে এ বিষয়গুলোকেই মাথায় রাখা হবে।
বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) সম্মেলন কক্ষে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা আইন প্রণয়নের জন্য অনুষ্ঠিত অংশীজন সংলাপে তিনি এ কথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, সমন্বিত উদ্যোগ থাকলে আমরা সফলভাবে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারব। এ মুহূর্তে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা আইনের প্রয়োজন আছে কি-না সেটি নিয়ে আমাদের মধ্যে একটা দোটানা ছিল। কিন্তু আইনমন্ত্রীর নির্দেশনা পাওয়ার পর যখন আমরা গভীরভাবে বিশ্লেষণ করেছি, তখন উপলব্ধি করলাম আর দেরি করা ঠিক হবে না। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অগ্রগতিতে চতুর্থ শিল্প বিল্পবের এই যুগে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মতো প্রযুক্তি আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অংশ হয়ে পড়েছে। এআইয়ের মতো প্রযুক্তির পজিটিভ ও নেগেটিভ দুই ধরনের প্রভাবই রয়েছে আমাদের জীবনে। ব্যক্তিগত সহায়ক, স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণ, প্রসেস ও প্রোডাক্টিভিটি বৃদ্ধি, কর্মদক্ষতা বৃদ্ধির মতো আমাদের জীবনে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অসংখ্য পজিটিভ ব্যবহার রয়েছে।
তিনি বলেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার এমন পজিটিভ ব্যবহারের ক্ষেত্রে আমরা কিন্তু পিছিয়ে নেই। আমরা হেলথ জিপিটি, এডুকেশন জিপিটি ও ইনভেস্টমেন্ট জিপিটি তৈরি করব। কারণ এআই, রোবটিক্স, সাইবার সিকিউরিটি ও মাইক্রোচিপ ডিজাইনের মতো ফ্রন্টিয়ার টেকনোলোজিতে আমরা সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে না পারলে আমাদের পিছিয়ে পরতে হবে।
পলক বলেন, পাশাপাশি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহারের অনেক ঝুঁকি বা ক্ষতিকর প্রভাবও তৈরি হচ্ছে আমাদের জীবনে। ডিপ ফেক ভিডিও ও ভয়েস ক্লোনিংয়ের মতো অসংখ্য মারাত্মক অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহারের এমন কিছু ইথিকাল ও মোরাল অসুবিধা রয়েছে, যা আমাদের ব্যক্তিজীবনের পাশাপাশি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক নিরাপত্তার জন্যও হুমকির বিষয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় মন্ত্রী আনিসুল হক। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব মো. সামসুল আরেফিন, আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম সারওয়ার সচিব এবং বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. মহিউদ্দিন আহমেদ।
এছাড়া, খসড়া প্রণয়নের বিষয়ে সুচিন্তিত মতামত দেওয়ার জন্য সব মন্ত্রণালয়, বিভাগ, সংস্থা ও সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডার এবং মিডিয়া পার্সনরাও অংশীজন সভায় অংশ নিয়েছেন।