রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও দ্বিপক্ষীয় আলোচনার ভিত্তিতে ভারত থেকে ৫০ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানি করছে বাংলাদেশ। এই আমদানির একটি প্রস্তাবে নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি।
বুধবার (২৭ মার্চ) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সমন্বয় ও সংস্কার সচিব মো. মাহমুদুল হোসাইন খান সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ৫০ হাজার টন পেঁয়াজ ভারতের ন্যাশনাল করপোরেটিভ এক্সপোর্ট লিমিটেডের কাছ থেকে আমদানি করা হবে। রাষ্ট্রীয় বিপণন সংস্থা টিসিবির মাধ্যমে এ পেঁয়াজ আনা হবে। তবে আমদানি মূল্য এখনও নির্ধারণ হয়নি।
নিজেদের বাজারে সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রেখেছে ভারত। তবে সম্প্রতি বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম আবুধাবিতে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনে ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গয়ালের সঙ্গে তাঁর দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে পেঁয়াজ আমদানির অনুরোধ জানান। এ পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশকে ৫০ হাজার টন পেঁয়াজ দিতে সম্মত হয় ভারত।
অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে কক্সবাজার জেলার মহেশখালীতে ৬০০ এমএমসিএফডি ক্ষমতার তৃতীয় এফএসআরইউ প্রকল্পে ঠিকাদার কোম্পানির নাম পরিবর্তনের প্রস্তাব অনুমোদিত হয়। আগে চুক্তি হয়েছিল সামিট অয়েল অ্যান্ড শিপিং কোম্পানির সঙ্গে। এখন এর নাম পরিবর্তন করে হবে সামিট এলএনজি টার্মিনাল কোম্পানি-২। আরেকটি প্রস্তাবে সিঙ্গাপুরের কোম্পানি গানভর সিঙ্গাপুর প্রাইভেট লিমিটেডের কাছ থেকে স্বল্পমেয়াদি প্রক্রিয়ায় এলএনজি সরবরাহের প্রস্তাবে নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ২০২৪ ও ২০২৫ সালের জন্য এই চুক্তি করা হবে।
তিন ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন
অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত বৈঠকের পর অর্থমন্ত্রীর সভাপতিত্বে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে সামিট পাওয়ারের তিনটি বিদ্যুৎকেন্দ্রের মেয়াদ বাড়ানোসহ তিন ক্রয় প্রস্তাবের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। মাহমুদুল হোসাইন খান সাংবাদিকদের বলেন, আশুলিয়া, মাধবদী ও চান্দিনায় সামিট পাওয়ারের তিনটি গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ পাঁচ বছর বাড়ানো হয়েছে। বিদ্যুৎকেন্দ্র তিনটির সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ ২০২৩ সালের ২২ নভেম্বর শেষ হয়ে যায়। প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম ৬ টাকা ৪ পয়সা হিসাবে আগামী পাঁচ বছরের জন্য মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। নতুন চুক্তিতে ইউনিটপ্রতি ৭ পয়সা সাশ্রয় হিসাবে পাঁচ বছরে আগের তুলনায় ৬ কোটি ৮১ লাখ টাকা সাশ্রয় হবে। সচিব বলেন, চুক্তিতে আগে ক্যাপাসিটি চার্জ ছিল, এবার তা রাখা হয়নি। অন্য কোনো ফিক্সড চার্জও নেই। যে পরিমাণ বিদ্যুৎ নেওয়া হবে সেই পরিমাণ টাকাই পরিশোধ করা হবে।
বৈঠকে ইস্টার্ন রিফাইনারির বাস্তবায়নাধীন সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং প্রকল্পের জন্য টেস্টিং ও কমিশনিংয়ের কাজ সুষ্ঠুভাবে করতে ‘যথাযথ শক্তির’ টাগবোট সংগ্রহ, পাইলটিং এবং আনুষঙ্গিক সেবার জন্য ইপিসি ঠিকাদার চায়না পেট্রোলিয়াম পাইপলাইন ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানির সঙ্গে সাপ্লিমেন্টারি চুক্তি করার প্রস্তাবে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে খরচ ধরা হয়েছে ৬২ কোটি ৮৪ লাখ ২৫ হাজার টাকা।
এ ছাড়া ‘খুলনা থেকে মোংলা পোর্ট পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণ (৩য় সংশোধিত)’ প্রকল্পের প্যাকেজ নম্বর-ডব্লিউডি-১ এর পূর্ত কাজের তৃতীয় ভেরিয়েশন প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে ক্রয় কমিটি। এ ক্ষেত্রে ব্যয় ৩৮৯ কোটি টাকা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৬৬৭ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। প্যাকেজটির নির্মাণকাজ বাস্তবায়ন করছে ভারতের মেসার্স ইরকন ইন্টারন্যাশনাল।