ফিউচার মার্কেটে গতকাল আবারো বেড়েছে মালয়েশিয়ান পাম অয়েলের দাম। মূলত বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় পণ্যটির বাজার ঊর্ধ্বমুখী হয়ে পড়েছে বলে জানান বিশেষজ্ঞরা।
অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম বাড়লে পাম অয়েলের উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যায়। পাশাপাশি বায়োডিজেল খাতেও পণ্যটির চাহিদা ঊর্ধ্বমুখী হয়ে ওঠে, যা মূল্যবৃদ্ধির ক্ষেত্রে বর্তমানে বড় প্রভাব রাখছে।
বুরসা মালয়েশিয়া ডেরিভেটিভস এক্সচেঞ্জে গতকাল জুনে সরবরাহ চুক্তিতে মালয়েশিয়ান বাজার আদর্শ পাম অয়েলের দাম ১৪ রিঙ্গিত বা দশমিক ৩৩ শতাংশ বেড়েছে। প্রতি টনের মূল্য স্থির হয়েছে ৪ হাজার ২৬১ রিঙ্গিতে (৯০৩ ডলার ৩৩ সেন্ট)।
এদিকে ডালিয়ান কমোডিটি এক্সচেঞ্জে ভবিষ্যৎ সরবরাহ চুক্তিতে পাম অয়েলের দাম দশমিক ৩৪ শতাংশ বেড়েছে। সেখানে সয়াবিন তেলের দাম বেড়েছে দশমিক ৩৮ শতাংশ। তবে শিকাগো বোর্ড অব ট্রেডে সয়াবিন তেলের বাজারদর দশমিক ১৪ শতাংশ কমে গেছে।
মালয়েশিয়ান পাম অয়েল বোর্ড (এমপিওবি) সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে জানায়, দেশটিতে ফেব্রুয়ারিতে পাম অয়েলের মজুদ ৫ শতাংশ কমেছে। মজুদের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৯ লাখ ২০ হাজার টনে।
মজুদের পাশাপাশি কমেছে উৎপাদনও। গত মাসে দেশটির অপরিশোধিত পাম অয়েল উৎপাদনের পরিমাণ দাঁড়ায় ১২ লাখ ৬০ হাজার টনে, যা জানুয়ারিতে ছিল ১৪ লাখ টন। অর্থাৎ উৎপাদন ১২ দশমিক ১৮ শতাংশ কমেছে। পাম কার্নেল উৎপাদন ১১ দশমিক ৭০ শতাংশ কমে ৩ লাখ ১ হাজার ৭৭১ টনে নেমেছে।
বোর্ড আরো জানায়, গত মাসে মালয়েশিয়ার পাম অয়েল রফতানি ২৪ দশমিক ৭৫ শতাংশ কমেছে। রফতানির পরিমাণ ছিল ১০ লাখ ২০ হাজার টন, জানুয়ারিতে যা ছিল ১৩ লাখ ৫০ হাজার টন। তবে ওলেকেমিক্যাল রফতানি দশমিক ৭৭ শতাংশ বেড়ে ২ লাখ ৫৫ হাজার ১৬৩ টনে উন্নীত হয়েছে।
বিশ্বজুড়ে ব্যাহত হচ্ছে পাম অয়েল উৎপাদন। সঙ্গে যুক্ত হয়েছে উচ্চ বায়োডিজেল ম্যান্ডেট। ফলে চলতি বছর সবচেয়ে বেশি ব্যবহার হওয়া এ ভোজ্যতেলের সরবরাহ সংকুচিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়া বিশ্বের শীর্ষ পাম অয়েল উৎপাদক। সিংহভাগ সরবরাহই আসে এ দুই দেশ থেকে। চলতি বছর এ দুই দেশে পণ্যটির উৎপাদন কমে যাওয়ার আশঙ্কাই বেশি। উৎপাদন বাড়লেও সেটি হবে খুবই সামান্য। কারণ হিসেবে বাজারসংশ্লিষ্টরা জানান, দুই দেশে পাম ফলের বেশির ভাগ বাগানই অনেক পুরনো। নতুন বাগানও গড়ে উঠছে না। পুরনো বাগানগুলোর উৎপাদন সক্ষমতা অনেকটাই ফুরিয়ে এসেছে।