পুড়িয়ে দেয়া যুবক ছিলেন নামাজি, গুজবকারীদের খুঁজছে সিআইডি

পুড়িয়ে দেয়া যুবক ছিলেন নামাজি, গুজবকারীদের খুঁজছে সিআইডি
লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলায় ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে একজন ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যার পর তার মৃতদেহ আগুন দিয়ে পোড়ানোর ঘটনায় সন্দেহভাজন কয়েকজনকে চিহ্নিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

এই ঘটনায় প্রাথমিকভাবে সন্দেহভাজন হিসেবে চিহ্নিত কয়েকজনের নাম দিয়ে হত্যাকাণ্ড ঘটানো, অগ্নিসংযোগ এবং সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগ এনে তিনটি মামলা করার প্রক্রিয়া চলছে।

পুলিশ কর্মকর্তারা বলেছেন, মৃতদেহ পোড়ানোর কারণে দেহাবশেষ যেটুকু পুলিশ উদ্ধার করেছে, তার ময়নাতদন্ত করা হয়েছে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। এই দেহাবশেষ শনিবার (৩১ অক্টোবর) নিহতের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

এদিকে, এ ঘটনায় তিন জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। জেলা প্রশাসন ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছে। রোববারের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেবে কমিটি। ঘটনার শুরুতে কে বা কারা কোরআন শরীফ অবমাননার গুজব ছড়িয়েছে তা খতিয়ে দেখতে মাঠে নেমেছে সিআইডি।

জানা যায়, বৃহস্পতিবার পাটগ্রামের বুড়িমারী ইউনিয়নে শত শত মানুষ জড়ো হয়ে পিটিয়ে হত্যা করে একজন ব্যক্তিকে। তারা নিহত ব্যক্তির মৃতদেহও আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়। ঘটনার পরদিন শুক্রবার স্থানীয় পুলিশ বলেছে, ঘটনায় অনেক মানুষের অংশগ্রহণ থাকলেও কিছু লোক উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি করেছিল- এমন তথ্য তারা পেয়েছে।

পাটগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুমন কুমার মহন্ত বলেন, লোকজনের সাথে কথা বলে এবং ঘটনার ভিডিও দেখে পুলিশ সন্দেহভাজন কয়েকজনকে চিহ্নিত করতে পেরেছে। তবে প্রাথমিক পর্যায়ে তারা সন্দেহভাজনদের পরিচয় এবং সংখ্যা প্রকাশ করতে চান না।

বুড়িমারীতে নিহত ব্যক্তির নাম আবু ইউনুস মোহাম্মদ শহীদুন নবী। তার বাড়ি রংপুরে। তিনি রংপুরের ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যাণ্ড কলেজের শিক্ষক ছিলেন। বছর খানেক সময় ধরে চাকরি না থাকায় দুই সন্তানের পিতা এই ব্যক্তি কিছুটা মানসিক সমস্যায় ছিলেন বলে তার পরিবার বলেছে। তবে নিহত শহীদুন নবী নামাজি ছিলেন বলে জানিয়েছে তার পরিবার।

নিহতের পরিবারের সদস্যদের শুক্রবার রংপুর থেকে পাটগ্রামে নিয়ে গিয়ে স্থানীয় প্রশাসন এবং পুলিশ কর্মকর্তারা কথা বলেছেন। কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনার পর নিহতের চাচাতো ভাই সাইফুল আলম বিপ্লব বলেছেন, এই আলোচনার ভিত্তিতেই তারা পরিবারের পক্ষ থেকেই হত্যা মামলা দায়ের করেন।

ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে বিভিন্ন গোয়ন্দাসংস্থা সেখানে কাজ শুরু করেছে বলে জানা গেছে।

যে মসজিদে গত বৃহস্পতিবার আছরের নামাজের পর নিহত ব্যক্তিকে ঘিরে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছিল, সেই বুড়িমারী ইউনিয়ন কেন্দ্রীয় মসজিদের ইমাম ও খাদেমের বক্তব্য নিয়েছেন লালমনিরহাট জেলা ও পুলিশ প্রশাসনের কর্মকর্তারা।

তারা বলেছেন, তাদের ভাষায় নৃশংস একটি হত্যাকাণ্ডের পরিস্থিতি তৈরির পেছনে মূল বিষয় ছিল পা দিয়ে কোরআন শরীফ অবমাননা করার অভিযোগের গুজব। এখন এর সাথে নানারকম বক্তব্য স্থানীয় লোকজন দিচ্ছে বলে তারা উল্লেখ করেছেন।

আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

সব ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকা‌বিলায় র‌্যাব প্রস্তুত
নববর্ষের আনন্দ যেন বিষাদের কারণ না হয়
জানুয়ারি থেকে ১০ ডলার করে রেশন পবে রোহিঙ্গারা
নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা মনিটরিং সেল গঠন ইসির
ইনানী–সেন্টমার্টিন রুটে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল শুরু
খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন দেশের ২১ শতাংশ মানুষ
ভোটের দিন ঘিরে নাশকতার তথ্য নেই
নির্বাচন ঘিরে সেন্টমার্টিনের পর্যটন বন্ধ ৩ দিন
মেট্রোরেলে মাছ-মাংস-সবজি পরিবহনে নিষেধাজ্ঞা
জলবায়ু পরিবর্তনে দেশে বেড়েছে বজ্রপাত-মৃত্যু