বাংলাদেশসহ উত্তরণকারী দেশগুলো স্বল্পোন্নত দেশ বা এলডিসি থেকে বের হওয়ার পর কত বছর উন্নত এবং উন্নয়নশীল দেশে শুল্কমুক্ত বাজার সুবিধা পাবে, সে বিষয়ে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার ( ডব্লিউটিও) সম্মেলনে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে এলডিসি থেকে উত্তরণের পর কয়েক বছরের জন্য শুল্কমুক্ত সুবিধা পেতে নেগোসিয়েশন বা আলোচনা চালিয়ে চালিয়ে যেতে হবে।
রোববার ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশ (আইসিএবি) আয়োজিত ‘ডব্লিউটিও এর ১৩তম মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনের ফলাফল’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনার বক্তারা এমন পরামর্শ দেন। আলোচনায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান। আইসিএবির প্রেসিডেন্ট মুহাম্মদ ফোরকান উদ্দীন এফসিএ স্বাগত বক্তব্য রাখেন। সঞ্চালনা করেন আইসিএবির সাবেক সভাপতি হুমায়ুন কবির এফসিএ। সূচনা বক্তব্য দেন আইসিএবির সিইও শুভাশীষ বসু।
অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, সব কিছু ঠিক থাকলে ২০২৬ সালের নভেম্বরে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের ক্যাটাগরিতে আসবে। ফলে এলডিসি হিসেবে শুল্ক ও কোটামুক্ত সুবিধা আরও কিছুটা সময় ধরে অব্যাহত রাখার জন্য জোর আলাপ-আলোচনা চালিয়ে যেতে হবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশকে তিনটি বিষয় মাথায় রাখতে হবে। বাংলাদেশ এখন এলডিসিভুক্ত দেশ। অন্যদিকে এলডিসি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়ায় রয়েছে। শেষত, বাংলাদেশ আড়াই বছর পর উন্নয়ন দেশে উন্নীত হবে। উন্নয়নশীল দেশ হিসেবেও ডব্লিউটিওর অধীনে বাণিজ্য অগ্রাধিকারের কিছু বিষয় রয়েছে। বাংলাদেশকে সেদিকটাও মাথায় রাখতে হবে। উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হলে অনেক বাজারে হয়তো এখনকার মতো সহজ শুল্কমুক্ত সুবিধা থাকবে না। বাংলাদেশকে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার জন্য পণ্য বহুমুখীকরণ করতে হবে। রপ্তানি বাণিজ্য বহুমুখীকরণ করতে হবে। আমাদেরকে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি করতে হবে। তুলনামূলক সুবিধাকে প্রতিযোগিতামুলক সুবিধায় রূপান্তরের জন্য কাজ করতে হবে।
প্রতিযোগিতা কমিশনের সদস্য হাফিজুর রহমান বলেন, বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে জরুরি হলো- ওষুধ সম্পর্কিত মেধাস্বত্বের বিধিবিধান পরিপালনের অব্যাহতি যাতে এলডিসি থেকে উত্তরণের পরও কয়েক বছর থাকে সে বিষয়ে নেগোসিয়েশন অব্যাহত রাখা।
ট্যারিফ কমিশনের সাবেক সদস্য মোস্তফা আবিদ খান বলেন, এলডিসি থেকে উত্তরণের পর তিন বছরের বেশি শুল্কমুক্ত সুবিধা পাওয়া কঠিন হবে। তিন বছরের জন্য হলেও বাংলাদেশকে চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।
আলোচনায় আরও বক্তব্য রাখেন এফবিসিসিআইয়ের উপদেষ্টা মঞ্জুর আহমেদ, জেনেভায় বাংলাদেশের স্থায়ী মিশনের ইকনোমিক মিনিস্টার মোহাম্মদ মাশুকুর রহমান সিকদার, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সাবেক যুগ্ম সচিব নেসার আহমেদ, বিল্ডির সিইও ফেরদৌস আরা বেগম প্রমুখ।
অর্থসংবাদ/এমআই