রাজধানীর ৮৪টি রেস্তোরাঁ ও শপিংমল অতি অগ্নিঝুঁকিতে রয়েছে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স। এর মধ্যে সর্বাধিক ২৭টি রয়েছে খিলগাঁও এলাকায়। সম্প্রতি বেইলিরোডে রেস্তোরাঁয় ভয়াবহ আগুনে ৪৬ জনের মৃত্যুর পর পাঁচ শতাধিক ভবন ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শনে এসব রেস্তোরাঁ ও শপিংমল চিহ্নিত করেছে ফায়ার সার্ভিস।
জানা গেছে, ৮৪টি ভবন ও প্রতিষ্ঠানকে অগ্নিনিরাপত্তায় অতিঝুঁকিপূর্ণ, ৪০৮টি ভবন ও প্রতিষ্ঠানকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। অতিঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত ২টি ও ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত ৮টি ভবন-প্রতিষ্ঠানে সতর্কতা বার্তা টানিয়ে দেওয়া হয়েছে। এসব ভবনে যেকোনো সময়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
এসব ভবনের মধ্যে খিলগাঁয়ে ২৭টি, মতিঝিল, মালিবাগ, মৌচাক, শান্তিনগর, বেইলিরোড, ওয়ারী, সদরঘাট, লালবাগ এলাকায় ২২টি, ধানমন্ডি মোহাম্মাদপুর, ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, তেজগাঁও ও মিরপুর এলাকায় ১৫টি ভবন ও প্রতিষ্ঠানকে অতিঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা রয়েছে। অন্যদিকে গুলশান, বনানী ও উত্তরাতে ২০টি ভবন ও প্রতিষ্ঠান অতিঝুঁকিপূর্ণ চিহ্নিত হয়েছে।
গত ৫ মার্চ থেকে ১২ মার্চ পর্যন্ত ৫১৬টি শপিংমল, রেস্টুরেন্ট, ভবন ও প্রতিষ্ঠানে অগ্নিনিরাপত্তা পরিদর্শন করে অতিঝুঁকিপূর্ণ, ঝুঁকিপূর্ণ ও কম ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে তিন ক্যাটাগরিতে ভাগ করে তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে।
এর মধ্যে জোন-১ এর মতিঝিল, মালিবাগ, মৌচাক, শান্তিনগর ও বেইলিরোড এলাকায় ৬৩টি ভবন পরির্দশন করে অতিঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে ১০টি, ঝুঁকিপূর্ণ ৩টি ও কম ঝুঁকিপূর্ণ চিহ্নিত করা হয়। এছাড়া ওয়ারী, লালবাগ ও সদরঘাট এলাকায় ৭৭টি প্রতিষ্ঠান ও ভবন পরির্দশন করে অতিঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে ১২টি, ঝুঁকিপূর্ণ ৬২টি এবং কম ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে ৩টি ভবন চিহ্নিত করা হয়।
জোন-২ এর আওতায় ধানমন্ডি, মোহাম্মদপুর, ফার্মগেইট, কারওয়ানবাজার ও তেজগাঁও এলাকায় মোট ৯৯টি ভবন পরিদর্শন করে অতিঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে ২টি, ঝুঁকিপূর্ণ ৯৬টি ও কম ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে একটি ভবন চিহ্নিত করা হয়। এছাড়া শুধু মিরপুর জোনে ৭৪ প্রতিষ্ঠান ও ভবন পরিদর্শন করে অতিঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে ১৩টি, ঝুঁকিপূর্ণ ৫৫টি এবং কম ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে ৬টি চিহ্নিত করা হয়।
জোন-৩ এর আওতায় গুলশান ও বনানী এলাকায় ৫৩টি ভবন ও প্রতিষ্ঠান পরিদশন করে অতিঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে ৯টি, ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে ৪১টি এবং ৩টি কম ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। এছাড়া উওরা এলাকায় ৭৬টি ভবন ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করে অতিঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে ১১টি, ঝুঁকিপূর্ণ ৫৫টি ও কম ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে ১০টিকে চিহ্নিত করা হয়।
জোন-৫ এর আওতায় খিলগাঁওয়ে ৭৪টি ভবন ও প্রতিষ্ঠান পরির্দশন করে ২৭টিকে অতি ঝুঁকিপূর্ণ ও ৪৭টিকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। এখানে কম ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে কোনো ভবন বা প্রতিষ্ঠান চিহ্নিত করা হয়নি।
এছাড়া জোন-১ এর এলাকা সমূহে পরিদর্শন শেষে ৫টি ভবন ও প্রতিষ্ঠান, জোন-২ এ দুইটি, জোন-৩ এ দুইটি এবং জোন-৫ এ একটি ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে ব্যানার টানানো হয়েছে।
এ বিষয়ে ফায়ার সার্ভিসের মিডিয়া উইং কর্মকতা শাহজাহান শিকদার বলেন, রাজধানীজুড়ে অভিযান ও পরিদর্শন সবই চলমান রয়েছে। সরাসরি কোনো প্রতিষ্ঠান বা ভবন মালিককে শাস্তি দিতে পারি না। আমরা তালিকা প্রস্তুত ও স্পেশাল মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে অর্থদণ্ড ও আদালতের মাধ্যমে মামলা করতে পারি।
অর্থসংবাদ/এমআই