ক্যাটাগরি: আন্তর্জাতিক

খাদ্যশস্যের বৈশ্বিক বাণিজ্য বাড়লেও কমতে পারে উৎপাদন

২০২৩-২৪ বিপণন মৌসুমে খাদ্যশস্যের বৈশ্বিক উৎপাদন পূর্বাভাস সংশোধন করেছে ইন্টারন্যাশনাল গ্রেইন কাউন্সিল (আইজিসি)। আগের পূর্বাভাসের তুলনায় উৎপাদন প্রায় ৬০ লাখ টন কমতে পারে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি। তবে বাণিজ্য বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সম্প্রতি সংশোধিত পূর্বাভাসটি নিজস্ব ওয়েবসাইটে প্রকাশ করে আইজিসি।

উৎপাদনের পাশাপাশি খাদ্যশস্যের ব্যবহারও আগের পূর্বাভাসের তুলনায় কমবে বলে জানিয়েছে আইজিসি। এতে মৌসুম শেষে শস্যের বৈশ্বিক মজুদ বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

সংশোধিত পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ মৌসুমে বিশ্বজুড়ে ২৩০ কোটি ৪০ লাখ টন খাদ্যশস্য উৎপাদন হতে পারে। আগের পূর্বাভাসে উৎপাদনের পরিমাণ ধরা হয়েছিল ২৩১ কোটি টন। তবে গত মৌসুমের তুলনায় উৎপাদন ২ শতাংশ বাড়বে বলেও জানিয়েছে আইজিসি।

সংস্থাটির পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, দক্ষিণ গোলার্ধের দেশগুলোয় ভুট্টা উৎপাদন পরিস্থিতি খারাপের দিকে যাচ্ছে। অন্যান্য শস্যের তুলনায় ভুট্টার বৈশ্বিক উৎপাদন অনেক বেশি কমবে। বিষয়টিই মোট শস্য উৎপাদন পূর্বাভাস সংশোধন করতে সংস্থাটিকে উৎসাহিত করেছে।

এদিকে খাদ্যশস্যের বৈশ্বিক বাণিজ্য পূর্বাভাস বাড়িয়েছে আইজিসি। বাণিজ্যের পরিমাণ ধরা হয়েছে ৪২ কোটি ৪০ লাখ টন, যা আগের পূর্বাভাসে ছিল ৪১ কোটি ৯০ লাখ টন। অর্থাৎ বাণিজ্য ৫০ লাখ টন বাড়বে। রফতানি বাণিজ্য বৃদ্ধিতে প্রধান ভূমিকা পালন করবে যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, ইউক্রেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও অস্ট্রেলিয়া।

আইজিসি গত মাসে বিশ্বজুড়ে ২৩১ কোটি ৭০ লাখ টন খাদ্যশস্য ব্যবহারের পূর্বাভাস দিয়েছিল। সংশোধিত পূর্বাভাসে তা কমিয়ে ২৩০ কোটি ৬০ লাখ টন ধরা হয়েছে। বিশ্ব অর্থনীতিতে চলমান সংকট ও মূল্যস্ফীতির ঊর্ধ্বগতির কারণে ভোক্তারা দৈনন্দিন ব্যয় সংকোচন করছেন। এ কারণেই মূলত শস্যের ব্যবহার কমার আশঙ্কা করছে আইজিসি।

এদিকে ব্যবহার কমলে মৌসুম শেষে মজুদও বেড়ে যাবে। নতুন পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ মৌসুমে বৈশ্বিক সমাপনী মজুদ দাঁড়াবে ৫৯ কোটি ৯০ লাখ টনে, আগের পূর্বাভাসে যা ছিল ৫৮ কোটি ৯০ লাখ টন।

এ মৌসুমে গমের বৈশ্বিক উৎপাদন দাঁড়াতে পারে ৭৮ কোটি ৯০ লাখ টনে, যা আগের পূর্বাভাসের তুলনায় ১০ লাখ টন বেশি। এটির ব্যবহার ৮০ কোটি ৩০ লাখ টনেই অপরিবর্তিত থাকবে। তবে বাণিজ্য আগের পূর্বাভাসের চেয়ে ১০ লাখ টনে বেড়ে ২০ কোটি ১০ লাখ টনে উন্নীত হতে পারে।

ভুট্টা উৎপাদনের পরিমাণ দাঁড়াতে পারে ১২২ কোটি ৭০ লাখ টনে, যা আগের পূর্বাভাসে ছিল ১২৩ কোটি ৪০ লাখ টন। অর্থাৎ শস্যটির উৎপাদন ৭০ লাখ টন কমতে পারে। এটির ব্যবহার কিছুটা কমলেও বাণিজ্য লক্ষণীয় মাত্রায় বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানায় আইজিসি।

অন্যদিকে ২০২৩-২৪ মৌসুমে চালের বৈশ্বিক উৎপাদন পূর্বাভাস আগের মতোই অপরিবর্তিত রেখেছে আইজিসি। উৎপাদনের পরিমাণ ধরা হয়েছে ৫১ কোটি ১০ লাখ টন। শস্যটির বাণিজ্য ও ব্যবহার পূর্বাভাসে কোনো পরিবর্তন আনা হয়নি।

সয়াবিন উৎপাদন পূর্বাভাস ১০ লাখ টন কমিয়ে ধরা হয়েছে ৩৯ কোটি টন। বাণিজ্যের পরিমাণ ধরা হয়েছে ১৬ কোটি ৬০ লাখ টন। এ মৌসুমে তেলবীজটির ব্যবহার দাঁড়াতে পারে ৩৮ কোটি ৩০ লাখ টনে।

শেয়ার করুন:-
শেয়ার