তারল্য সংকটের মধ্যে দিয়ে চলা ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান (এনবিএফআই) খাতে এক বছরের ব্যবধানে আমানতের পাশাপাশি ঋণের স্থিতি বেড়েছে। গত ডিসেম্বর শেষে এ খাতে চার লাখ ৩১ হাজারের বেশি হিসাবে আমানতের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪৪ হাজার ৮৩০ কোটি টাকা।
এ অংক আগের বছরের চেয়ে এক হাজার ৭৭ কোটি টাকা বা ২ দশমিক ৪৬ শতাংশ বেশি। ২০২২ সালের ডিসেম্বর শেষে আমানত ছিল ৪৩ হাজার ৭৫২ কোটি টাকা।
মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) বাংলাদেশ ব্যাংক প্রকাশিত এনবিএফআই স্ট্যাটিকটিকসে এই তথ্য দেওয়া হয়েছে।
তথ্য মতে, গত ডিসেম্বর শেষে এ খাতে ঋণ স্থিতি ছিল ৭৩ হাজার ৭৫৯ কোটি টাকা। আগের বছরের চেয়ে যা তিন হাজার ৪৩৭ কোটি টাকা বা ৪ দশমিক ৮৮ শতাংশ বেশি। ২০২২ সালে এনবিএফআই খাতে ঋণ স্থিতি ছিল ৭০ হাজার ৩২১ কোটি টাকা। গত ডিসেম্বর পর্যন্ত দেওয়া ঋণের সুবিধাভোগী হিসাবের সংখ্যা ছিল দুই লাখ ১৯ হাজার ৭০৫।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন বলছে, ২০২৩ সালে স্থায়ী আমানতের পরিমাণ ২০২২ সালের চেয়ে টাকার অংকে বাড়লেও মোট আমানতের আনুপাতিক হারে কমেছে।
গত ডিসেম্বর শেষে স্থায়ী আমানতের পরিমাণ ছিল ৪৩ হাজার ৫১৩ কোটি টাকা, যা মোট আমানতের ৯৭ দশমিক ০৬ শতাংশ। ২০২২ সাল শেষে তা ৯৭ দশামিক ৩৯ শতাংশ ছিল।
মোট আমানতের মধ্যে ৪১ হাজার ৪৪৩ কোটি টাকা বা ৯২ দশমিক ৪৫ শতাংশই ঢাকা বিভাগের। আর সর্বনিম্ন ৫৫ কোটি ৪৮ লাখ টাকার আমানত রয়েছে বরিশাল বিভাগে, যা মোট আমানতের শূন্য দশমিক ১২ শতাংশ।
আমানতের মত ঋণের সিংহভাগও ঢাকা বিভাগে। গত ডিসেম্বর শেষে মোট ঋণের মধ্যে ৬১ হাজার ৫৪৮ কোটি টাকা বা ৮৩ দশমিক ৩১ শতাংশ ঢাকা বিভাগেই দেওয়া হয়েছে।
সবচেয়ে কম ঋণ স্থিতিও বরিশাল বিভাগে, ৩৭১ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ।
বর্তমানে সারা দেশে সরকারি-বেসরকারি মিলয়ে ৩৫টি ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মোট ৩০৮টি শাখা রয়েছে, যার ২৮৬টি শহর এলাকায়।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত ডিসেম্বর শেষে এ খাতে গড় সুদহার ছিল ৮ দশমিক ৫৩ শতাংশ। এর মধ্যে ঋণের ক্ষেত্রে গড় সুদহার ছিল ১০ দশমিক ৮৮ শতাংশ। ভোক্তা ঋণে সর্বোচ্চ ১১ দশমিক ৪৯ শতাংশ সুদ হার দেখা যায়।
সর্বশেষ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ‘স্মার্ট (সিক্স মান্থস মুভিং এভারেজ রেট অব ট্রেজারি বিল) সুদহার এর সঙ্গে সর্বোচ্চ ২ দশমিক ৫ শতাংশ মার্জিন যোগ করে আমানত এবং সাড়ে ৫ শতাংশ যোগ করে ঋণ দিতে পারবে এনবিএফআই।
তাতে চলতি মার্চে নতুন আমানতের সর্বোচ্চ সুদহার হবে ১২ দশমিক ১১ শতাংশ আর ঋণ সুদহার হবে সর্বোচ্চ ১৫ দশমিক ১১ শতাংশ।