রোজার বাহানায় শুরু থেকেই বাড়ছে সব নিত্যপন্যের দাম। মাছ, মাংস, কাঁচা বাজারের পর এবার হুট করে অস্থির হয়ে উঠেছে চালের বাজার। গত এক সপ্তাহ ধরে বিভিন্ন শ্রেণির চালে কেজিপ্রতি ৩-৫ টাকা বেড়েছে। তাতে নতুন করে দুশ্চিন্তা ভর করেছে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির ক্রেতাদের ওপর।
দাম বাড়ার পেছনের কারিগর হিসেবে ছোট-বড় ব্যবসায়ী ও মিলাররা একে অন্যের ঘাড়ে দোষ চাপাচ্ছেন। খুচরা ও পাইকারি ব্যবসায়ীরা বলছেন, সাধারণত রোজার সময় চালের বাজারে ক্রেতার চাপ কম থাকে। বিক্রিও হয় কম। ফলে দামও থাকে কম। কিন্তু এবার উল্টো দাম বাড়ছে। মিলাররা কোনো কারণ ছাড়াই চালের দাম বাড়াচ্ছেন। যার প্রভাব পড়েছে খুচরা বাজারে।
এদিকে মিলারদের ভাষ্য, লাইসেন্সবিহীন মৌসুমি মজুতদার ব্যবসায়ীরা কম দরে কৃষকের ধান কিনে মজুত করে রেখেছেন। কৃষক ও মিলারের কাছে এখন ধান নেই। ফলে মিলাররা বাধ্য হচ্ছেন বেশি দামে মজুতদারদের কাছ থেকে ধান কিনতে। ধানের দাম বেশি হওয়ায় মিল পর্যায়ে চালের কেজিতে ৫০ পয়সা থেকে ১ টাকা দর বেড়েছে। যেটাকে মোটামুটি স্বাভাবিকই বলছেন তারা। কিন্তু খুচরা ব্যবসায়ীরা এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে অস্বাভাবিকভাবে দর বাড়াচ্ছেন। চালের বাজার স্বাভাবিক রাখতে মজুতদারদের দৌরাত্ম্য কমানো জরুরি বলে মনে করেন তারা।
বাজারে সবচেয়ে বেশি বেচাকেনা হয় বিআর-২৮ ও পাইজাম জাতের চাল, যা মাঝারি আকারের চাল নামে পরিচিত। গতকাল রোববার রাজধানীর মহাখালী, কারওয়ান বাজার ও মগবাজার ঘুরে দেখা গেছে, খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি বিআর-২৮ বিক্রি হচ্ছে ৫৪ থেকে ৫৭ টাকায়। সপ্তাহখানেক আগে এ মানের চালের কেজি ছিল ৫২ থেকে ৫৪ টাকা। সেই হিসাবে এক সপ্তাহে কেজিতে বেড়েছে দুই থেকে তিন টাকা। একই সময়ে চিকন বা মিনিকেট চাল কেজিতে ৩ টাকার মতো বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৭২ থেকে ৭৫ টাকায়। এ ছাড়া স্বর্ণা বা মোটা চালের দাম কেজিতে বেড়েছে ২ টাকার মতো। এ ধরনের চালের কেজিতে এখন ভোক্তাকে গুনতে হচ্ছে মানভেদে ৪৮ থেকে ৫৪ টাকা। এক সপ্তাহ আগে ছিল ৪৮ থেকে ৫২ টাকা।
সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্যমতে, গত এক মাসে মাঝারি চালের দর বেড়েছে প্রায় ৩ শতাংশ আর মোটা চালের দর বেড়েছে প্রায় ২ শতাংশ।
অর্থসংবাদ/এমআই