বিশ্ববাজারে সর্বোচ্চ দামের নতুন ইতিহাস গড়ার পর সোনার দাম কমতে দেখা যাচ্ছে। গত সপ্তাহজুড়েই বিশ্ববাজারে সোনার দামে পতন হয়েছে। এতে প্রতি আউন্স সোনার দাম প্রায় ২৩ ডলার বা ১ শতাংশ কমে গেছে। অবশ্য এরপরও এখনো প্রতি আউন্স সোনার দাম ২ হাজার ১৫০ ডলারের ওপরে রয়েছে।
বিশ্ববাজারে সোনার দামে এমন উত্থান-পতন হলেও গত এক সপ্তাহে দেশের বাজারে সোনার দামে কোনো হেরফের হয়নি। তবে বিশ্ববাজারে দাম বাড়ার প্রবণতা দেখে চলতি মাসের শুরুর দিকে দেশের বাজারে সোনার দাম বাড়ায় বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। এতে অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে দেশের বাজারে সর্বোচ্চ দামের নতুন রেকর্ড গড়ে সোনা। বর্তমানে রেকর্ড দামেই সোনা বিক্রি হচ্ছে।
গত সপ্তাহজুড়ে বিশ্ববাজারে সোনার দাম কমলেও তার আগের সপ্তাহে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ে দামি এ ধাতুটির দাম। এতে প্রথমবারের মতো এক আউন্স সোনার দাম ২ হাজার ১৯৩ ডলার পর্যন্ত উঠে যায়। অবশ্য সপ্তাহের লেনদেন শেষে প্রতি আউন্স সোনার দাম ২ হাজার ১৭৮ দশমকি ৬৪ ডলারে থিতু হয়। এর মাধ্যমে এক সপ্তাহেই প্রতি আউন্স সোনার দাম বাড়ে ৯৫ দশমিক ২১ ডলার বা ৪ দশমিক ৫৭ শতাংশ।
সোনার দাম এভাবে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ায় প্রতি আউন্স সোনার দাম ২ হাজার ৩০০ ডলার হয়ে যেতে পারে বলে ধারণা করছিলেন বিশ্লেষকরা। তবে গত সপ্তাহের লেনদেন শুরু হতেই সোনার দাম নিচের দিকে নামতে থাকে। মাঝে কিছুাটা উপরের দিকে ওঠার চেষ্টা করলেও শেষ পর্যন্ত দরপতন হয়।
এতে গত সপ্তাহের লেনদেন শেষে প্রতি আউন্স সোনার দাম ২ হাজার ১৫৫ দশমিক ৭৩ ডলারে থিতু হয়েছে। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি আউন্স সোনার দাম কমেছে ২২ দশমিক ৯১ ডলার বা ১ শতংশ। এর মধ্যে সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে কমেছে ৫ দশমিক ২৯ ডলার বা দশমিক ২৪ শতাংশ।
এদিকে বিশ্ববাজারে সোনার দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ার মধ্যে গত ৬ মার্চ বৈঠক করে দেশের বাজারে সোনার দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয় বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন প্রাইসিং অ্যান্ড প্রাইস মনিটরিং। যা কার্যকর হয় ৭ মার্চ থেকে।
৭ মার্চ থেকে সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ২ হাজার ২১৭ টাকা বাড়িয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ১২ হাজার ৯০৮ টাকা, ২১ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ২ হাজার ৯৯ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ৭ হাজার ৭৭৫ টাকা, ১৮ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ১ হাজার ৮০০৮ টাকা বাড়িয়ে ৯২ হাজার ৩৭৯ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির এক ভরি সোনার দাম ১ হাজার ৫১৬ টাকা বাড়িয়ে ৭৬ হাজার ৯৮২ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। দেশের বাজারে সোনার এত দাম আগে আর হয়নি। বর্তমানে দেশের বাজারে এ দামেই সোনা বিক্রি হচ্ছে।
অবশ্য সোনার গহনা কিনতে ক্রেতাদের এরচেয়ে বেশি অর্থ খরচ করতে হবে। কারণ বাজুস নির্ধারণ করা দামের ওপর ৫ শতাংশ ভ্যাট যোগ করে সোনার গহনা বিক্রি করা হয়। সেই সঙ্গে ভরিপ্রতি মজুরি ধরা হয় নূন্যতম ৩ হাজার ৪৯৯ টাকা। ফলে আগামীকাল থেকে ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার গহনা কিনতে ক্রেতাদের ১ লাখ ২২ হাজার ৫২ টাকা গুনতে হবে।