চলতি বছর গমের বৈশ্বিক উৎপাদন গত বছরের তুলনায় ১ শতাংশ বাড়তে পারে। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে এ পূর্বাভাস দিয়েছে। ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, রাশিয়া, চীন ও পাকিস্তান বৈশ্বিক উৎপাদন বৃদ্ধিতে বড় ভূমিকা পালন করবে।
এফএও বলছে, ২০২২ সালের বিশ্বজুড়ে রেকর্ড সর্বোচ্চ গম উৎপাদন হয়েছিল। এ বছর উৎপাদন সে উচ্চতায় না পৌঁছতে পারলে গত বছরের তুলনায় বাড়বে। তবে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোয় বৈরী আবহাওয়ার প্রভাবে উৎপাদন কমে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এফএওর প্রক্ষেপণ অনুযায়ী, চলতি বছর বিশ্বজুড়ে সব মিলিয়ে ৭৯ কোটি ৭০ লাখ টন গম উৎপাদন হতে পারে, যা ২০২৩ সালের তুলনায় ১ শতাংশ বেশি।
যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ দুই গম উৎপাদক। এ দুই দেশে চলতি মৌসুমে গমের আবাদ কম হয়েছে। তবে অনুকূল আবহাওয়া পরিস্থিতির কারণে উৎপাদন বেশি হবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। এফএও বলছে, ২০২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রে ৫ কোটি ১৫ লাখ টন গম উৎপাদন হতে পারে, গত বছর একই সাম্প্রতিক পাঁচ বছরের গড় উৎপাদনের চেয়ে বেশি।
এদিকে কানাডায় চলতি বছর গমের আবাদ আগের বছরের তুলনায় ২ শতাংশ কমেছে বলে জানিয়েছে এফএও। এর পরও উৎপাদন আগের বছরের তুলনায় বেড়ে ৩ কোটি ৩০ লাখ টনে উন্নীত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
রাশিয়ায় এবার অনুকূল আবহাওয়ার প্রভাবে উৎপাদন সামান্য বাড়তে পারে। চীনে শস্যটির চাহিদা ক্রমেই বাড়ছে। তার ওপর এটির ন্যূনতম ক্রয়মূল্যও বেশি। এমন পরিস্থিতিতে দেশটি আবাদ বাড়ানোর দিকে বেশি মনোযোগ দিচ্ছে। এতে সেখানে উৎপাদন বাড়বে বলেও প্রত্যাশা করা হচ্ছে। ২০২৪ সালে পাকিস্তানের উৎপাদন বেড়ে ২ কোটি ৮৩ লাখ টনে উন্নীত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
ভারত চলতি বছর রেকর্ড পরিমাণ গম উৎপাদনের লক্ষ্য নিয়ে এগোচ্ছে। তবে সেখানকার প্রধান আবাদি অঞ্চলগুলোয় সাম্প্রতিক বৃষ্টিপাত ও শিলাবৃষ্টির কারণে উৎপাদন নিয়ে কিছুটা অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। এতে আবাদ বাড়লেও উৎপাদন বৃদ্ধি নিয়ে এখনো আশঙ্কা কাঠিয়ে ওঠা যায়নি।
এদিকে ভারি বৃষ্টির কারণে ইউরোপীয় ইউনিয়নের শীর্ষ দেশগুলোয় আবাদ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এমনটি ঘটলে দেশটি উৎপাদন নিয়ে বিপাকে পড়তে পারে। বিশেষ করে ফ্রান্স ও জার্মানিতে উৎপাদন আশঙ্কাজনক হারে কমতে পারে।
এফএও বলছে, ২০২৪ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোয় ১৩ কোটি ৩০ লাখ টন গম উৎপাদন হতে পারে। ইউনিয়নের বাইরে যুক্তরাজ্যের উৎপাদনও নিম্নমুখী থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
শিকাগো বোর্ড ট্রেডে (সিবিওটি) কমছে গমের দাম। বিশ্ববাজারে সরবরাহ বাড়ায় শস্যটির বাজারে নিম্নমুখী প্রবণতা তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে চীন যুক্তরাষ্ট্র থেকে গমের ক্রয়াদেশ আরো কমিয়ে দেয়ায় বাজার চাপের মুখে পড়েছে। সিবিওটিতে গতকাল গমের ভবিষ্যৎ সরবরাহ চুক্তির দাম দশমিক ১ শতাংশ কমে বুশেলপ্রতি ৫ ডলার ৪৬ সেন্টে উন্নীত হয়েছে।